• ঢাকা
  • |
  • শনিবার ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ সন্ধ্যা ০৭:১৫:৫১ (23-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শনিবার ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ সন্ধ্যা ০৭:১৫:৫১ (23-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

হিলিতে ইরি-বোরো ধানের চারা রোপণ শুরু

১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ বিকাল ০৪:৫০:৩০

হিলিতে ইরি-বোরো ধানের চারা রোপণ শুরু

হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: খাদ্য শস্যর ভান্ডার হিসেবে পরিচিত উত্তরের জেলা দিনাজপুর। এই জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা হাকিমপুরের হিলিতে চলতি মৌসুমে ইরি বোরো ধানের চারা রোপণ পুরাদমে শুরু করেছে কৃষকরা। ফলে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার কৃষকরা। বর্তমান সময়ে বিদ্যুৎ, সার, কীটনাশক, ডিজেলসহ সবকিছুই দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার ইরি বোরো চাষে অতিরিক্ত খরচের দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কৃষকদের কপালে। মাঘের হিমেল বাতাস, কনকনে ঠান্ডা বাতাস আর ঘন কুয়াশাকে উপেক্ষা করে জমি তৈরি ও বোরো ধানের চারা রোপণের কাজ করেছেন পুরুষ শ্রমিকদের পাশাপাশি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নারী শ্রমিকরাও। আবহাওয়া ভালো থাকলে বাম্পার ফলন ও ভালো দাম পেলে অতিরিক্ত খরচ পুষিয়ে নিতে পারবে বলে আশা করছেন কৃষকেরা।

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে ইরি বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৫৭৪ হেক্টর জমিতে। শুরু থেকে কৃষি অফিস থেকে সরকারি প্রণোদনাসহ সবধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি অধিদফতর।

১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার হাকিমপুর উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, ইরি বোরো ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। জমিতে বাড়তি সার হিসেবে বিঘা প্রতি ৬-৭ ভ্যান গোবর সার ছিটিয়ে দিচ্ছে। এরপর গভীর নলকূপ থেকে পানি দিয়ে জমি ভিজিয়ে নিয়ে পাওয়ার টিলার দিয়ে কেউবা ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করছেন। এতে বিঘা প্রতি ২০ কেজি ডেপ, ১২ কেজি পটাস ও ৫ কেজি জিপসার মিশিয়ে দ্বিতীয় বার চাষ করে চারা রোপণের জমি তৈরি করে জমিতে চারা রোপণ করছেন। ইতোমধ্যে এ উপজেলায় ১৫-২০ শতাংশ জমিতে চারা রোপণ শেষ হয়েছে।

উপজেলার সাদুরিয়া গ্রামের গভীর নলকূপের মালিক মফিজুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর আমার এই গভীর নলকূপ দিয়ে মাঠে প্রায় ২০০-২৫০ বিঘা জমিতে পানি সেচ দিয়ে থাকি। এবারেও বিদ্যুতের সংযোগ পেয়েছি এবং জমিতে পানি সেচ দিতে শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত আমার গভীর নলকূপের আওতায় প্রায় ৬০-৭০ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণ করেছে কৃষকেরা। প্রতি ১০০ শতক (এক একর) জমির জন্য নেওয়া হচ্ছে ৩৬০০ টাকা। গত বছর নেওয়া হয়েছে ৩২০০ টাকা।

উপজেলার জাংগই গ্রামের কৃষক জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি ১০ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করে থাকি। কয়েক দিনের মধ্যে আমার সম্পূর্ণ জমিতে চারা রোপণ শেষ হবে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার খরচের হিসাব বেশি গুনতে হচ্ছে। পানি সেচের খরচ, জমি চাষ করা, সার, কীটনাশক, শ্রমিকসহ সবকিছুর দাম বেশি। তাই দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনা হিসেবে উফশী জাতের ধানের বীজ ও সার পেয়ে খুব উপকার হয়েছে। তবে এবার আবহাওয়া ভালো থাকলে গতবারের মতো এবারও ইরিবোরো ধানের ফলন ভালো হবে বলে আশা করছি। গত বছর ফসলের দাম ভালো পেয়েছি। আশা করছি এবারও ভালো দাম পাবো, তাহলে খরচ পুষিয়ে নিতে পারবো বলে আশা করছি।

উপজেলার চকচকা গ্রামের কৃষক জাকারিয়া বলেন, ‘হামরা ছোট-খাটো কৃষক মানুষ, হামার (আমার) বেশি আবাদি জমি নাই, মিচ্চে এ্যানা ৫-৬ বিঘা জমি চাষ করি। মানুষোক (মানুষ) নিয়ে কাম করে নেই না, নিজেই সব করি। বছরে ইরি আর আমন ধান লাগাই তাতে আল্লাহ দিলে ভালোই আবাদ হয়, ভালোই চলে’।

উপজেলার জালালপুর বর্গাচাষি আলিম বলেন, আমরা গরীব মানুষ, নিজের আবাদি জমি নাই বললেই চলে। অন্যের জমি চানা (বর্গা) নেই ইরি আবাদের জন্য, এক বিঘা জমি দশ হাজার টাকা দিয়ে নিতে হয়েছে। বাজারে ইউরিয়া সার আগে ৮৫০-৯০০, পটাশ ৮০০, ডেপ ১০০০ টাকা ছিলো। বর্তমানে ইউরিয়া ১৩৫০, পটাশ ১১৫০, ডেপ ১০৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। জমি সেচের বাড়তি খরচ, সারের দাম, শ্রমিকদের মজুরি বেশি, সবকিছু মিলে কি হবে আল্লাহ ভালো জানে! তবে আশা করছি আবহাওয়া ভালো থাকলে এবং ধানের দাম ভালো পেলে খরচ পুষিয়ে নিতে পারবো ইনশাআল্লাহ!

উপজেলার খাট্রাউচনা মাঠের জমি রোপণ করা শ্রমিক শাহাদৎ হোসেন বলেন, আমরা কয়েকজন মিলে একটা দল তৈরি করেছি। দীর্ঘদিন থেকে ইরিবোরো ও আমন ধানের চারা রোপণ করে থাকি। এবার ইরি বোরো ধানের চারা রোপণ প্রতি বিঘা ১৩০০ টাকা করে নিচ্ছি। প্রতিদিন ৭ থকে ৮ বিঘা জমিতে ইরি বোরো ধানের চারা রোপণ করতেছি।

উপজেলার আরেক নারী  শ্রমিক স্বপনা কুজুর বলেন, আমরা প্রতিদিন হাজিরা হিসেবে ইরি বোরো রোপণ করতেছি। প্রতিদিন হাজিরা হিসেবে ৫০০ টাকা পাই।

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম জানান, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ইরি বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৫৭৪ হেক্টর জমি। ইতোমধ্যে চারা রোপণ শুরু হয়েছে। আশা করছি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে ইরি বোরো চাষ হবে। ইতোমধ্যে উপজেলায় ১৫-২০ শতাংশ জমিতে ইরি বোরো ধানের চারা রোপণ করা শেষ হয়েছে।

তিনি জানান, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক উপজেলার প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে ইরি বোরো হাইব্রিড ধানের বীজ ২০০০ জনের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। আর উফশি জাতের প্রণোদনা হিসেবে ২০০০ জনের মাঝে সার ও বীজ বিতরণ করেছি। ইরি বোরো চাষে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সবধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে  কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা ও মাঠ কর্মীরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আশা করছি এবারও কাঙ্খিত ফসল ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা। এবারও ধানের দাম ভালো পেলে অতিরিক্ত খরচ পুষিয়ে নিতে পারবে বলেও আশা করছেন এই কৃষি কর্মকর্তা।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ









শীতে চুল ও দাড়ির যত্ন নিবেন যেভাবে
২৩ নভেম্বর ২০২৪ দুপুর ০২:১০:১৮