রাঙামাটি প্রতিনিধি: রাঙামাটির কাউখালী-সুগারমিল সড়কের পাশেই তারাবুনিয়ায় অবস্থিত “এমএবি” নামক ইটভাটা কর্তৃপক্ষের অমানবিক আচরণে নিজেদের মাথা গোঁজার একমাত্র ঠাঁই হারাতে বসা মারমা পরিবারের সদস্যরা উৎকণ্ঠার মধ্যে দিনানিপাত করছেন।
৮ ডিসেম্বর রোববার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাউখালী উপজেলার সাথে লাগোয়া রাঙ্গুনীয়া সীমান্তে তারাবনিয়া ব্রিজের পার্শ্বে জংগল বগাবিলি এলাকায় অবস্থিত এমএবি নামক এই ইট ভাটা। জনৈক তৈয়বের মালিকানাধীন এই ইট ভাটাটি অবৈধভাবে স্থাপন করে পাহাড়ি বনাঞ্চলের গাছ পোড়ানো হচ্ছে।
ভাটাটিতে ইট তৈরির কাঁচামাল হিসেবে মাটির প্রয়োজনে স্থানীয় পাহাড়ি জুমিয়া পরিবারগুলোর বসবাস করা পাহাড়ের মাটি এক্সেভেটর দিয়ে কেটে নিচ্ছে ভাটা কর্তৃপক্ষ। এতে বাধা দিয়েও নিজেদের একমাত্র ছোট্ট বসতঘরটি রক্ষা করতে পারছে না ভুক্তভোগী অসহায় জুমিয়া পরিবারটি।
পাহাড়ি মারমা সম্প্রদায়ের এই পরিবারের গৃহকর্ত্রী সিগবা মারমা, মেলা অং মারমাসহ তাদের পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা জানান, ইটভাটা মালিক গাড়ি দিয়ে জোরপূর্বক ভিটের মাটি কেটে ভাটায় নিয়ে ইট তৈরি করছে। প্রতিবাদ করেও কোনো লাভ হয় না।
পরিবারের পুত্রবধূ জানান, গত বর্ষায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। কর্দমাক্ত অবস্থায় তার সন্তানটিও ঘর থেকে পরে আহত হয়েছে। ভাটা মালিকের নির্মমতার কারণে ইতোমধ্যেই কয়েকটি পরিবার অন্যত্র চলে গেছে। বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে হচ্ছে তাদের।
অসহায় এই পরিবারটির দাবি, ‘তারা আমাদের থাকার ব্যবস্থা করে না দিয়ে আমাদেরকে বাস্তুহারা করে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা অত্যন্ত দরিদ্র ও অসহায় অবস্থায় দিনানিপাত করছি।’
এদিকে ইট ভাটাটির মালিক আবু তৈয়ব দাবি করেন, ‘আমরা ভিটের মাটি তাদের দাদুর কাছ থেকে কিনে নিয়েছি। তাই আমরা মাটি কাটছি।’
অসহায় হতদরিদ্র জুমিয়া পরিবারগুলোকে বাস্তুহারা না করে তাদের অন্যত্র ঘর তোলার সময় না দিয়ে আপনারা মাটি কাটছেন কেন? এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর না দিয়ে আবু তৈয়ব দাবি করেন, ‘আমি তাদেরকে বেশ কয়েকবার টাকা ও ইট দিয়েছি।’
এ বিষয়ে কাউখালী উপজেলার ভারপ্রাপ্ত ইউএনও’র দায়িত্বে থাকা (এসিল্যান্ড) ফয়সাল আল নূর জানান, আমরা ইতোমধ্যেই খবর পেয়েছি। ইটভাটার মালিক মাটি কেটে অনেকগুলো পরিবারকে বাস্তুহারা করেছে। এটা আইনের দৃষ্টিতে খুবই গর্হিত অপরাধ। উপজেলা প্রশাসন এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available