স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুরে ১৭নং টেংরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে পছন্দের লোক (নিজস্ব) দিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠনের পাঁয়তারা, অর্থ আত্মসাৎ, চেক জালিয়াতিসহ ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচনে অনিয়ম প্রসঙ্গে সম্প্রতি শ্রীপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। এ বিষয়ে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধি নূরুজ্জামান ওই লিখিত অভিযোগে জানান, প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক নবনির্বাচিত অভিভাবক সদস্যদের কাছ থেকে পূর্ববর্তী কমিটির রেজুলেশন ব্যতীত প্রত্যেকের কাছ থেকে বিনা রশিদে জামানত নেন বলে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরকে জানিয়েছেন। অথচ বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারলাম প্রধান শিক্ষক আমাকে না জানিয়ে বা সভাপতি নির্বাচনে ভোটের ব্যবস্থা না করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত করার ষড়যন্ত্র করতেছে, যা কমিটি গঠনের বিধিমালা সম্পূর্ণ পরিপন্থী। এছাড়া ওই সভাপতির ছেলে জাহিদুল হক শায়ানকে ইভটিজিংয়ের দায়ে পাশের উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ১৭নং টেংরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমকে পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত করার জন্য ওই সভাপতির যোগসাজসে প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক একটি সাজানো ও পাতানো নির্বাচনের পাঁয়তারা করছেন। যা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অথবা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা কিছুই জানে না। যে কারণে সাবেক কমিটির অন্যান্য সদস্য ও স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাছাড়া ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের নামের সোনালী ব্যাংক শ্রীপুর শাখার হিসাব নাম্বার ০২১৪১০০০০১২১৭ থেকে তিনটি চেকের মাধ্যমে ২ লাখ ১৭ হাজার ১৭৮ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
টেপির বাড়ী গ্রামের মমতাজ ফকিরের ছেলে মাহতাব উদ্দিন জানান, আদালতে দায়ের করা আমার একটি চেক জালিয়াতির মামলায় প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুককে ১০ লাখ টাকা জরিমানা ও ১ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। জহিরুল ইসলাম আকরামের চেক জালিয়াতির (রাষ্ট্রবাদী) পৃথক আরেকটি সি আর মামলায় ওই শিক্ষককে ৭ লাখ টাকা জরিমানা ও ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। প্রদীপ চন্দ্র দাসের দায়ের করা (পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র) এনজিও সংস্থার চেক জালিয়াতির আরেকটি মামলা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আদালতে চলমান রয়েছে।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক জানান, নতুন কমিটিতে কাউকে সভাপতি বানানোর জন্য আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নাই। তবে অন্যান্য দুর্নীতির মামলায় টাকা-পয়সা জমা দিয়ে আপোস-মীমাংসা করে ফেলেছি।
সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম জানান, নতুন কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ সঠিক নয়। তদন্তে সত্য মিথ্যা বেরিয়ে আসবে।
শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড. সামসুল আলম প্রধান বলেন, এ বিষয়ে আমি কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফাতেমা নাসরিন বলেন, এ বিষয়ে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available