নিজস্ব প্রতিবেদক: স্থানীয়রা নানা অনিয়মের অভিযোগ করেছেন রাজধানীর উত্তরার আজিমপুর রেলগেট এলাকার অনুমোদনহীন রোকেয়া ক্লিনিকের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ডাক্তার সবসময় ক্লিনিকে থাকেন না এবং রোগীর কোনো সমস্যা দেখা দিলে ডাক্তারদের কল করে আনা হয়।
ভুক্তভোগীর এক স্বজন জানান, ‘আমার রোগীর বাচ্চা প্রসবের বিষয়ে এই ক্লিনিকের সাথে চুক্তি হয়, বারো হাজার টাকার মধ্যে সবকিছু কমপ্লিট করে দেবে। কিন্তু পরবর্তীতে বিল করা হয় ১৫ হাজার।’
১৮ নভেম্বর সোমবার সরেজমিন রোকেয়া ক্লিনিকে গিয়ে দেখা যায়, কোনো ডাক্তার ক্লিনিকে নেই, দুজন ডিপ্লোমা নার্স দিয়ে ক্লিনিক চলছে। কিছুক্ষণ পর একজন ডাক্তার প্রবেশ করেন। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ওই ডাক্তারকে রেজিস্টার হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিতে চাইলে ডাক্তার সরাসরি বলেন, ‘আমি হাসপাতালের কোনো দায়িত্বে নেই। ডাক্তার আরও বলেন, ক্যামেরা বন্ধ করেন, আমি আমার নাম-পরিচয় দিতে চাচ্ছি না। আমি সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন এখানে আসি। আমি চেম্বার করার মতো করে এখানে কাজ করি।’
ক্লিনিকের ভিতরে একটি পরিপাটি ফার্মেসি থাকলেও কোনো ফার্মাসিস্ট পাওয়া যায়নি। পরিবেশ ছাড়পত্র, ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদন, পরিচালনার অনুমোদন, হাসপাতাল বিল্ডিং নকশার অনুমোদন কোনো কিছুই কর্তৃপক্ষ দেখাতে পারেননি। পারভিন নামের এক নারী কর্মকর্তা বলেই বসলেন, মাসুদ রেজার হাসপাতালে এগুলা লাগে না।
মালিক মাসুদ রেজা সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে সেখান থেকে চলে গেলেও তার মামা পরিচয়ে একজন গণমাধ্যমের সাথে কথা বলতে আসেন। তার নাম-পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি রোকেয়া ক্লিনিকের বিষয়ে কিছুই জানি না। সব জানে মাসুদ রেজা।’
কোনো অনুমোদন না থাকলেও ল্যাবে চলছে বিভিন্ন টেস্ট। অথচ, ক্লিনিকটির কোনো ল্যাব টেকনিশিয়ান নিয়োগ প্রাপ্ত নেই। পার্ট টাইম কাজ করে বলে একজনকে দাবি করা হয়।
ক্লিনিকটির মালিক মাসুদ রেজা আগে আওয়ামী লীগের নেতা বলে পরিচয় দিতেন, কিন্তু বর্তমানে বিএনপি নেতা বলে নিজেকে দাবি করেন। যদিও তার ফেসবুক পুরোটাই আওয়ামী লীগের বন্দনায় ভরপুর।
ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ইমরান হাসান বলেন, রোকেয়া ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ আছে। তারপরও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেয় না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হসপিটাল সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট এর ড. সালমুন নাহার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনারা ডাইরেক্টর (হসপিটাল এন্ড ক্লিনিক) এর কাছে জানতে চাইতে পারেন। এই বিষয়টি আমার নয়।’
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডাইরেক্টর (হসপিটাল এন্ড ক্লিনিক) মনির হাসান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি অতি গুরুত্ব সহকারে আমরা দেখছি।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available