কুড়িগ্রাম (ফুলবাড়ী) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ঘোষণা দিয়ে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে ওই ছাত্রীর বাবা ফুলবাড়ী থানায় অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, ওই গ্রামের অর্জুন চন্দ্র সেনের মেয়ে ছবিতা রানী সেন (১৫) অনন্তপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকাল ৫টার দিকে কোচিং সেন্টারে যাওয়ার পথে একই গ্রামের মৃত আব্দুল হালিমের ছেলে আলিনুর রহমান (৩৫) ও তার সহযোগিরা মেয়েটিকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।
এর আগে গত ২ অথবা ৩ সেপ্টেম্বর ওই গ্রামের রাস্তার একটি গাছে কে বা কারা হাতে লেখা একটি ছোট পোস্টার টাঙ্গিয়ে দেয়। পোস্টারে লেখা ছিল ‘এই বাড়ির মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়া হবে এবং মুসলমান বানানো হবে।’ এ ঘটনায় গত ৪ সেপ্টেম্বর ওই এলাকার রনজিত চন্দ্র সেন ফুলবাড়ী থানায় একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেন।
এদিকে দক্ষিণ অন্তপুর ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু ছালেকসহ স্থানীয়রা জানান, প্রায় চার পাঁচ মাস আগে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগে উভয় পরিবারের অভিভাবকসহ ছেলে-মেয়ে উভয়কে শাসন করা হয়েছে। এরপর পারিবারিকভাবে আলিনুরের বিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু বিয়ের দুই মাসের মধ্যে আলিনুর স্ত্রীকে তালাক দেন। গতকাল আমরা আলিনুরের বাড়িতে গিয়ে শুনেছি সে বাড়িতে নেই। এদিকে অর্জুনের মেয়ে ছবিতা রানীকে খঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মনে হয় প্রেমের সম্পর্কের কারণে তারা দুজন অজানার উদ্দেশ্য পাড়ি জমিয়েছে। গাছে পোস্টার লাগানোর বিষয়ে ওই ইউপি সদস্য বলেন, কে বা কারা রাস্তার গাছে ওই পোস্টার লাগিয়েছে সে ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
একাধিক এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, আলিনুরের সাথে দীর্ঘদিন ধরে ওই মেয়ের সম্পর্ক চলছিল এ বিষয়টি এলাকার সবাই জানে। এছাড়াও ওই ছেলে আগে থেকে মেয়ের বাড়ি যাওয়া আসা করতো।
আলিনুরের মা আনোয়ারা বেগম জানান, ওই মেয়ের সাথে আমার ছেলের সম্পর্কের বিষয় জানাজানি হলে এ নিয়ে গ্রামে বিচার সালিশও হয় সেখানে শাসন করা হয় এবং তাকে জরিমানা দিতে হয়, এরপর তার বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের পরে সবিতা তাকে বউ তালাকের জন্য চাপ প্রয়োগ করে একপর্যায়ে বলে যে বউ তালাক না দিলে তার ঘরে গিয়ে আত্মহত্যা করবে। কিছুদিন পর আমার ছেলের বউকে আমার ছেলে তালাক দেয়।
অর্জুন চন্দ্র সেন বলেন, আমার মেয়ে বাড়ি থেকে কোচিং এ যাওয়ার পথে আলিনুর তার কয়েকজন সহযোগী মিলে তাকে অপহরণ করেছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি অপহরণের অভিযোগ করেছি।
বিষয়টি জানতে আলিনুরের ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নওয়াবুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার মেয়েটির বাবা তার মেয়েকে অপহরণের অভিযোগ করেছে। আমি তদন্তের জন্য সরেজমিনে গিয়েছি। এলাকাবাসীর কাছে যা শুনলাম তাতে ছেলে মেয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মামলা রেকর্ড করে অপহৃত স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবো।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available