শরীয়তপুর প্রতিনিধি: শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার কাঁচিকাঁটার বিভিন্ন চরে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা।
উপজেলার চর কাঁচিকাঁটা ইউনিয়নের বিভিন্ন চরের নালা, পুকুর ও ফসলি জমিতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে একটি অসাধু চক্র অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে পদ্মার পারের বিভিন্ন গ্রামের ফসলের ক্ষেত, বসতবাড়ি ও অনেকগুলো বাগান হুমকির মুখে পড়েছে। এভাবে বালু উত্তোলন করায় আসন্ন বর্ষা মৌসুমে পদ্মার ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা করছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা।
২ জুলাই রোববার সরেজমিন গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। ইউনিয়নের ৬টি পয়েন্টে ১২টি ড্রেজার মেশিনে প্রতিনিয়ত মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। এর প্রভাবে তিন ফসলি জমি ও কৃষি ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্থ শতাধিক কৃষক ইতোপূর্বে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ বরাবর অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। স্থানীয় সাধার কৃষক এখন এখানকার ড্রেজার ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন।
কথা হয় কাঁচিকাঁটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব দেওয়ানের সাথে। তিনি বলেন, বোরকাটি বাজারের দক্ষিণে ব্রিজের পাশে খালে বেশ কয়েকটি ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। স্থনীয় উইনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের ভাইয়ের ছেলে মো. সাইফুল দেওয়ান এ বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে।
তিনি আরও বলেন, বাজারের পাশে গর্ত করে যেভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে তাতে বর্ষা এলে স্থানীয় রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ ও বাজার ক্ষতির মুখে পড়বে।
এ ঘটনায় আরেক অভিযুক্ত মো. খবির দেওয়ান বলেন, যারা তার কাছ থেকে বালু কিনে নিচ্ছেন, তারাই যে কোন সমস্যা হলে সমাধান করবে বলে জানিয়েছে। এই আশ্বাসেই তিনি বালু উত্তোলন করছেন।
সম্প্রতি এ ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায় অবৈধভাবে অন্তত ১২টি ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এসব ড্রেজার মেশিনে দিন-রাত বালু উত্তোলন করে তা পাইপের সাহয্যে বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে।
দেখা গেছে, ইউনিয়নের বোরকাটি বাজারের পাশে এবং সরকারি সামাজিক বনায়নের পাশে সাইফুল দেওয়ানের ২ টি ড্রেজার, কৃষ্ণপুর খালে খবির দেওয়ানের ২ টি, মান্দারতলি খালে নুরু খানের ১ টি, ৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য মো. নাজির খানের ২ টি, ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য মিজান সরদারের ২ টি
ড্রেজার দিয়ে দিন-রাত বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
এ ছাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ মাথাভাঙ্গা গ্রাম ও মরিচাকান্দি চরের জিংকিং বাজারের পাশে চলছে আরও ২ টি ড্রেজার।
ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি লিটন দেওয়ান বলেন, পদ্মা নদীর দুর্গম চরগুলোয় প্রশাসনের নজরদারি না থাকার সুযোগে এক শেনীর অসাধু চক্র নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে অবাধে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভু‚মি) মো. ইমামুল হাফিজ নাদিম বলেন, এখন পর্যন্ত যেখান থেকেই ড্রেজিংয়ের অভিযোগ এসেছে সেখানেই আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। এটি বন্ধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। অবৈধ ড্রেজার বন্ধে আমাদের অভিযান সবসময় অব্যাহত আছে এবং ভবিস্যতেও থাকবে।
এ বিষয়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, চরাঞ্চলে শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করা হবে। ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে যারা বালু উত্তোলন করছেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available