রাঙামাটি প্রতিনিধি: সংঘবদ্ধ কাঠ পাচারকারী সিন্ডিকেটের সদস্যরা প্রতিনিয়তই অবৈধভাবে গাছ কেটে পাচারের ফলে বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়ছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সংরক্ষিত বনাঞ্চল রাঙামাটির পাবলাখালী বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ও সংরক্ষিত বনাঞ্চল। সাম্প্রতিক সময়ে কাপ্তাই হ্রদ বেষ্টিত পাবলাখালী রেঞ্জের হ্রদ লাগোয়া পাহাড়গুলো থেকে একের পর এক মূল্যবান সেগুন গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে পাচারকারীরা।
পাবলাখালীর স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহে ৫০ বছরেরও অধিক বয়সী অন্তত ২০টি সেগুন কাছ কেটে নিয়ে গেছে কাঠচোর সিন্ডিকেট চক্র। কেটে নেওয়া এসব গাছ চিড়াই করে বাজারজাত করার কাজে পাবলাখালী রেঞ্জের নিকটেই স্থাপন করা হয়েছে অন্তত এক ডজন করাত কল। অনুমোদনবিহীন এসব করাত কলেই চিড়াই করা হয় সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে চুরি করে আনা সেগুনসহ বিভিন্ন প্রজাতির মূল্যবান গাছ।
স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ১৫ নভেম্বর বুধবার সারাদিন পাবলাখালীতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগ কর্তৃপক্ষ।
লংগদুস্থ রাজনগর বিজিবি জোনের সহায়তা নিয়ে পরিচালিত এই অভিযানে পাবলাখালীর সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে দুইটি অবৈধ করাতকল উচ্ছেদ ও ৫০ ঘনফুট কাঠ জব্দ করা হয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উত্তর বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক শ্যামল কুমার মিত্র, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ৩৭ ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
রাঙামাটি উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম জানিয়েছেন, বেআইনীভাবে পাবলাখালী বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ও সংরক্ষিত বন ঘেঁষে করাতকল স্থাপন ও পরিচালনার অভিযোগে ২টি অবৈধ করাতকল উচ্ছেদ করা হয়।
বনবিভাগ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করাতকল বিধিমালা-২০১২ এর সেকশন ৭(ক) অনুযায়ী সংরক্ষিত বনের ৩ কিলোমিটারের মধ্যে করাতকল স্থাপন অবৈধ হলেও উমাচরণ চাকমা ও পলিন বিকাশ চাকমা নামে দুই ব্যবসায়ী আইন অমান্য করে করাতকল স্থাপন ও পরিচালনা করে আসছে। এ সময় করাত কল উচ্ছেদের পাশাপাশি ৫০ ঘন ফুট কাঠও জব্দ করা হয়।
এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে বলেও জানিয়েছেন উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম।
এদিকে, সম্প্রতি পাবলাখালীর সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে দিনে-দুপুরে সেগুনসহ মূল্যবান গাছ কেটে নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধান বন সংরক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বন মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা ইউনিটের সহকারী প্রধান বন সংরক্ষক মো. মাহমুদুল হাসান স্বাক্ষরিত এক পত্রের মাধ্যমে স্মারক নাম্বার-২২.০১.০০০০.০১.০১১.১৬৭.(পার্ট-৬)২০১৭.৪৮৫ মূলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available