সেনবাগ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি: বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার তিন বছর পর ক্ষোভের জেরে নোয়াখালীর সেনবাগে সাবেক স্ত্রী, কন্যা ও শাশুড়িকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছেন আমির হোসেন (৫০) নামের এক যুবক।
১৬ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ভোরে উপজেলার অর্জুনতলা ইউনিয়নের ইদিলপুর গ্রামের দক্ষিণপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে পালিয়ে আছেন যুবক আমির হোসেন।
এ ঘটনার পরে ফাতেমা বেগমের ভাই আমিরুল ইসলাম বাদী হয়ে আমির হোসেনকে ও বেলালকে আসামি করে দুই জনের নামে মামলা দায়ের করেন। পরে সেনবাগ থানা পুলিশ বেলালকে গ্রেফতার করেছে। মামলার প্রধান আসামি আমির হোসেন এখনো পলাতক রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ২৬ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিবি ফাতেমার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী সোনাইমুড়ী উপজেলার অম্বরনগর গ্রামের সফিউল্যার ছেলে আমির হোসেনের বিয়ে হয়। তাদের এক মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। পারিবারিক কলহের জেরে তিন বছর আগে ফাতেমা ও আমিরের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। বিচ্ছেদের বিষয়টি আমির মেনে নিতে পারেননি। বিচ্ছেদের পর তিন সন্তান ফাতেমার সঙ্গে চলে আসে এবং আমির ক্ষোভে তাদের সবাইকে দেখে নেবে বলে হুমকি দেন। পরে ফাতেমা বাবার বাড়িতে একটি ঘর করে সন্তানদের নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। কয়েকদিন আগে এক ছেলে চাকরি সূত্রে বিদেশে আর আরেক ছেলে ঢাকায় চলে যায়। অপরদিকে মেয়ে রাবেয়া খাতুন ও মা মাফিয়া বেগমকে নিয়ে বাড়িতে থাকেন ফাতেমা।
মেয়ে রাবেয়া খাতুন বলেন, ভোরে বাবা আমির হোসেন এসে ঘরের দরজা খোলার জন্য ডাকাডাকি করতে থাকেন। এ সময় ঘর থেকে আমরা কোনো সাড়া দেইনি। আমরা ভাবছিলাম তিনি চলে গেছেন। এরই মধ্যে বাড়ির খোয়ারে থাকা মুরগিগুলো বাবা ছেড়ে দিলে মা (ফাতেমা) ভেবেছিলেন শিয়াল বা চোর আমাদের মুরগি নিয়ে যাচ্ছে।
রাবেয়া বলেন, মা তখন ঘর থেকে বের হলে তাকে ধারালো ছ্যানি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপানো শুরু করেন বাবা। একপর্যায়ে মা চিৎকার করে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে ধান খেতের ভেতরে গিয়েও তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে ঘরে এসে আমাকে ও আমার নানি মাফিয়া বেগমকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে বাবা।
তিনি আরও বলেন, একপর্যায়ে আমাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে বাবা পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং মা ও নানিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। মা ও নানির অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
খবর পেয়ে সেনবাগ থানার ওসি (তদন্ত) হেলাল উদ্দিন ও এসআই তানভীর আহম্মেদ ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেনবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা অভিযান চালিয়ে মামলার ২নং আসামিকে গ্রেফতার করেছি। প্রধান আসমিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
সেনবাগ থানার ওসি আরও বলেন, গ্রেফতার আসামিকে ১৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার দুপুরে নোয়াখালী বিচারিক আদালতের প্রেরণ করা হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available