ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে চলতি বছরের এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষার্থীদের ব্যবহারিক পরীক্ষায় অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষার্থীদের হাতের মার্ক (নম্বর) না দেওয়ার ভয় দেখিয়ে এ অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে ইটাখোলা টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট অ্যান্ড বি.এম কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এর ফলে আগেই টাকা পরিশোধ করে পরীক্ষায় অংশ নিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে, ক্ষেতলাল সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা শেষে বেরিয়ে আসা ইটাখোলা টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট অ্যান্ড বিএম কলেজের পরীক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে, তারা অর্থ আদায়ের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
পরীক্ষার্থীরা অভিযোগ করে আরও জানিয়েছেন, ব্যবহারিক পরীক্ষায় টাকা না দিলে স্যারেরা হাতের মার্ক দিবে না। এই ভয়ে তারা পরীক্ষা শুরুর আগেই টাকা পরিশোধ করে দিয়েছে। চলতি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে ৮টি বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ৪৩ জনের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৬০০ টাকা করে মোট ২৫ হাজার ৮০০ টাকা নিয়েছে শিক্ষক মতিউর রহমান এবং সাইফুল ইসলাম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ফরম ফিলাপের সময় তারা ব্যবহারিকের জন্য টাকা দিয়েছিল। এখন আবারো টাকা নেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এটা হয়ে আসছে বলে এটা একটি নিয়মে পরিণত হয়েছে। তারা এটা থেকে মুক্তি চায়।
এবিষয়ে অর্থ আদায়কারী শিক্ষক সাইফুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা কোনো টাকা পয়সা নেইনি। এ বিষয়ে পিন্সিপালের সাথে কথা বলেন।
অর্থ আদায়কারী অপর শিক্ষক মতিউর রহমানের সাথে মুঠোফোনে বার বার ফোন করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। একারণে তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
অর্থ আদায়ের অভিযোগটি অস্বীকার করে ইটাখোলা টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট অ্যান্ড বি.এম কলেজের অধ্যক্ষ জিএম কিবরিয়া বলেন, ‘আমরা কোনো টাকা পয়সা নেই না৷ তোমরা যা পারো করো৷ তুমি কী স্কুলে পড়াশোনা করোনি? একটা স্কুল তৈরি করতে পরিশ্রম লাগে৷ বলে রাগান্বিত হয়ে ফোন কেটে দেন’।
এবিষয়ে ওই কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) জিন্নাতুল আরা বলেন, টাকা নেওয়ার বিষয়টি দুঃখ জনক। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
উপজেলা শিক্ষা অফিসারের দায়িত্বে থাকা জেলা শিক্ষা অফিসার আমান উদ্দিন মন্ডল বলেন, অফিসিয়ালি এ ধরনের ফি নেওয়ার সুযোগ নেই। যদি কেউ এটা করে থাকে সেটা ঠিক করেনি।
উল্লেখ্য, গত রোববার উপজেলার মাহমুদপুর বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষায় অর্থ আদায়ের ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে নিউজ প্রকাশ হয়। প্রকাশিত নিউজের একদিন পর ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ পরিক্ষার্থীদের ডেকে টাকা ফেরত দিয়েছে। এ ঘটনার পরেও ইটাখোলা টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট অ্যান্ড বি.এম কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের ব্যবহারিক পরীক্ষায় অর্থ আদায় করেছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available