নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর খিলক্ষেত লেকসিটি কনকর্ড ছায়ানীড় ভবন ফ্ল্যাট ১৫NE/২ থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, অন্যান্য মাদক দ্রব্য, দুইটি অস্ত্র ও নগদ অর্থ এক লক্ষ পয়তাল্লিশ হাজার পাঁচশত টাকা উদ্ধার করেছে দিয়াবাড়ি আর্মি ক্যাম্পের সেনা সদস্যরা। এ সময় দুজনকে আটক করা হয়।
৭ অক্টোবর সোমবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে অভিযান পরিচালনাকালে বনানী ১১ এর সেলসিয়াস শিষাবাদের সামনে থেকে অস্ত্রসহ আটক হয় নাফিস মো. আলম ডন। পরবর্তীতে তার খিলক্ষেতের ফ্ল্যাট থেকে মো. সুজন নামে আরও এক সহযোগীকে আটক করা হয়।
এসময় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ, বিয়ার, সিসা সেবনের স্ট্যান্ড, ফয়েল পেপার, বিভিন্ন মদের ডিলারদের তথ্য সংবলিত ডায়েরি, ওয়াকটকি সেট, সিগন্যাল লাইট, সিসি ক্যামেরা ইত্যাদি জব্দ করে দিয়াবাড়ি সেনা ক্যাম্প ও খিলক্ষেত থানা পুলিশের যৌথবাহিনী।
নাফিস মো. আলমের বাংলাদেশ ও কানাডার দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে। কানাডার পাসপোর্ট দেখিয়ে সে নিজেকে বাংলাদেশে ফরেইনার হিসেবে পরিচয় দিয়ে বেড়ায় এবং প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মদ ব্যবসার সাম্রাজ্য তৈরি করেছে। বনানী ১১ এর সেলসিয়াস সিসা বার, একই রোডের বনানী ফার্মাসীসহ সে বেশ কিছু নামীদামী বার ও ক্লাবে মদ সরবরাহ করে। তার নিজস্ব মদ সরবরাহের কোম্পানির নাম সিন্ডিকেট ইন্টারন্যাশনাল।
জানা যায়, বসুন্ধরা, বারিধারা, গুলশান, বনানী এলাকাসহ ঢাকার বেশ কিছু স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মাঝেও সে এই মদের চালান যোগায়। সে নিজেকে ডন বলে পরিচয় দিতে বেশি পছন্দ করে। তার ফেসবুকের প্রোফাইল ঘাঁটলে কেউ বিশ্বাসই করবে না বাংলাদেশের মতো একটি দেশে এভাবে জনসমক্ষে কেউ অস্ত্র, মদ, নারী ইত্যাদি নিয়ে উন্মাদনা ছড়াতে পারে৷ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের বিরুদ্ধে তার শট গান দিয়ে ফায়ারের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হলে সে সেই ভিডিও দিয়ে নিজের আধিপত্য আরও বেশি জাহির করার চেষ্টা করে।
প্রাথমিক তদন্তে শোনা যায় ৫ আগস্টে সরকার পতনের পর থানা থেকে লুট হওয়া পুলিশের পিস্তলগুলোর মধ্যেই একটি নাফিসের নিকট প্রাপ্ত পিস্তল। তবে কোন থানা থেকে এটি লুট করা হয়েছে সে বিষয়ে তদন্ত চলছে। নাফিসের এই সাম্রাজ্যে জড়িত রয়েছে তার স্ত্রীসহ আরও অনেকেই।
দিয়াবাড়ি সেনা ক্যাম্পের এক অফিসার বলেন, নাফিসকে গ্রেফতার করার জন্য আমরা অনেকদিন ধরে চেষ্টা করছিলাম। সে এতটাই উন্মাদ যে নিয়মকানুন ও আইন কিছুই তোয়াক্কা করে না। তাকে গ্রেফতার করার মাধ্যমে মাদক চোরাকারবারিদের প্রতি আমরা একটি শক্ত বার্তা দিতে পেরেছি। আমাদের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
নাফিসের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলাসহ পূর্বের ৭টি মামলা রয়েছে। গ্রেফতারের পর অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার ও মাদকদ্রব্য সেবন আইনের আওতায় তার বিরুদ্ধে খিলক্ষেত থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available