রাঙামাটি প্রতিনিধি: বাংলাদেশের মানুষ সম্মিলিত আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারকে হটিয়েছে ক্ষমতার পালাবদলের জন্য নয়? একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এখন তাদের সেই স্বপ্নেরই প্রতিচ্ছবি বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াত চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান।
রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের কোনো সুযোগ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, এদেশের মানুষ যে আদর্শের পরিবর্তন চায় জামায়াত ইসলামী সেই আদর্শের ধারক-বাহক। আমরা বাংলাদেশকে আর পিছিয়ে পড়তে দেবো না।
৩০ নভেম্বর শনিবার রাঙামাটির বনরূপায় শহর জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দীর্ঘ ১৮ বছর পর রাঙামাটি শহরে জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে এ কর্মী সম্মেলন আয়োজন করে সংগঠনটি। সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া এই সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক সংসদ সদস্য চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরি।
কর্মী সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য মুহাম্মদ জাফর সাদেক, রাঙামাটি জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আব্দুল আলিম, ইসলামিক সেন্টারের চেয়ারম্যান সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোখতার আহমদ, রাঙামাটির নায়েবে আমির মাওলানা জাহাঙ্গির আলম, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. মনছুরুল হক, জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট হারুনুর রসিদ।
জেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম, জেলা জামায়াতের শুরা সদস্য নুরুল আলম সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট হারুনুর রসিদ, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেছেন মুহাম্মদ আব্দুস সালাম।
এদিকে, কর্মী সম্মেলন শুরুর আগে শনিবার সকাল সাড়ে নয়টা সময় রাঙামাটি পৌরসভার সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আল-আমিন মাদ্রাসা মাঠে সম্মেলন স্থলে গিয়ে শেষ হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা সাবেক সংসদ সদস্য চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরি বলেন, ৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত বাংলাদেশে ইসলামের উপর সবচাইতে বেশি আঘাত করেছে শেখ মুজিব। জামায়াতকে দাবিয়ে রাখতে গিয়ে শেখ মুজিব নিজেই ইতিহাস হয়ে গেছেন। তারই কন্যা শেখ হাসিনাও বিগত ১৮ বছরে দেশের জামায়াতের নেতাকর্মীদের উপর চরম নির্যাতন অত্যাচার চালিয়েছে। দেশ বিক্রি করে দিয়েছে বিদেশি প্রভুদের কাছে। সেই শেখ হাসিনা যেই সময়ে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছিলো ঠিক সেই একই সময়ে জনগণের ধাওয়ায় শেখ হাসিনা গণভবন ছেড়ে নয় শুধু দেশ ছেড়েই পালিয়েছে। এটাই আল্লাহর বিচার।
পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরাজমান পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগের সাথে সন্তু লারমার পার্বত্য শান্তি চুক্তি হওয়ার কথা ছিল না। সেই ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া সরকারের সাথে শান্তি চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ষড়যন্ত্রের কারণে খালেদা জিয়া সরকারের সাথে চুক্তিটি হতে পারেনি।
পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেএসএস নেতা সন্তু লারমার প্রতি ইঙ্গিত করে শাহজাহান চৌধুরি বলেন, ভারতের ত্রিপুরায় সন্তুলারমার সাথে দেখা করতে বাংলাদেশ থেকে কেউ যেতে আগ্রহী ছিল না। কিন্তু আমি হেলিকপ্টার নিয়ে ত্রিপুরায় গিয়ে সন্তু লারমাকে সাথে করে খাগড়াছড়িতে নিয়ে এসেছিলাম। সন্তু লারমা আজ সে কথা ভুলে গেছেন। আজকের কর্মী সম্মেলনে সন্তু লারমার উপস্থিতি কামনা করেছিলাম। কিন্তু তিনি আসেননি। পার্বত্য চট্টগ্রামের সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে জামায়াত নেতা বলেন, অত্রাঞ্চলে পাহাড়ি-বাঙ্গালী তত্ত্বে জামায়াত বিশশ্বাস করে না। পাহাড় সমতলে সকলেই বাংলাদেশি পরিচয়ে থাকতেই চাই আমরা।
জামায়াত কোনো ধর্মীয় উগ্রবাদি সংগঠন নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, সকল সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষায় জামায়াত ইসলামীকে আগামী নির্বাচনে ভোট দিয়ে জয়ী করার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available