মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জে ভারী বর্ষণের ফলে আলু চাষিদের ব্যাপক ক্ষয়িক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ৭ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার ভোর রাত থেকে জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে এ আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে করে চরম হতাশায় পড়েছে এ জেলার হাজারো আলু চাষিরা৷ তবে কৃষকরা জমির পানি সরাতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ভোর রাত থেকে অবিরাম বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকদের কোনো চেষ্টাই কাজে আসছে না। এতে করে বড় ধরনের বিপর্যয় দেখা দিতে পারে ধারণা করছে অনেকেই। এ বছর লক্ষমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সদ্য রোপণ করা হাজার হাজার হেক্টর আলুর জমি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে করে চরমভাবে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে জেলার হাজারো আলু চাষী। ফলে চলতি অর্থবছরের আলু উৎপাদন লক্ষমাত্র অর্জিত না হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার লক্ষ্যমাত্রার প্রায় অর্ধেক কৃষি জমিতে আলু রোপণ কাজ শেষ হয়েছিলো। এর মধ্যে অতিবৃষ্টির কারণে তাদের রোপণ করা আলু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, যদি আজ সন্ধ্যা থেকে বৃষ্টি না হয় এবং জমির পানি নিষ্কাশন করা সম্ভব হয়, তবে ক্ষতির পরিমাণ কম হবে। এখনও কী পরিমাণ জমির ক্ষতি হয়েছে, তা সঠিক জানা যায়নি।
কৃষকরা জানান, ধার-দেনা করে আলু রোপণ করতে হয়। অসময়ের বৃষ্টি সব শেষ করে দিচ্ছে। এর আগেও প্রথম দফার বৃষ্টিতে জেলার অনেক কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এবার দ্বিতীয় দফার বৃষ্টিতে হাজার হাজার কৃষক সর্বস্বান্ত হতে পারে বলেও তারা আশঙ্কা করছেন।
জমিতে জমে থাকা বৃষ্টির পানি তারা অপসারণের চেষ্টা করছেন কৃষকরা। যদি রোপণ করা বীজ নষ্ট হয়ে যায়, তবে অনেকে আবার বীজ লাগাবেন। কিন্তু এখন বীজের দাম বেড়ে যাচ্ছে, সে ক্ষেত্রে বীজের দাম ঠিক রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তারা।
বীজ আলুর প্রতি বাক্স (ডায়ামন্ট) ছিলো ৯ হাজার টাকা, তা এখন বেড়ে ১৩ থেকে ১৪ হাজার টাকা হয়েছে বলে জানান তারা।
সার, কীটনাশক ও বীজ বিক্রেতা আওলাদ হোসেন জানান, তিনি আলু রোপণ মৌসুমে কৃষকদের বীজ, সার ও কীটনাশক বাকিতে দিয়ে সহযোগিতা করেন। বৃষ্টি ও বৈরি আবহাওয়ায় কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হলে তিনি ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।
জেলা কৃষি সম্পসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবার ৩৪ হাজার হেক্টর জমিতে আলু রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় অর্ধেক জমিতে আলু রোপণ শেষ হয়েছিলো। তবে ভারী বৃষ্টির কারণে আলুর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাধাগ্রস্থ হতে পারে।
সিরাজদিখান উপজেলা কৃষি অফিসার আবু সাঈদ শুভ্র জানান, জেলার সিরাজদিখান উপজেলা আলু চাষে অন্যতম। এবছর এ উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৯ হাজার হেক্টর জমি। এবার আলুর দাম বেশি থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদের সম্ভাবনা ছিলো। বৃষ্টি ও বৈরি আবহাওয়ায় কিছুটা সমস্যা হবে।
জমিতে পানি যাতে না জমে থাকে সেজন্য নালা করে পানি অপসারণের পরামর্শ দেন তিনি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available