কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: ৮৫ হাজার বস্তার ধারণ ক্ষমতা জয়পুরহাটের কালাই পৌরশহরের নরওয়েস্ট হিমাগারের। সরকার বেঁধে দেয়া দরে হিমাগারগুলোতে আলু বিক্রি হচ্ছে কি না তা তদারকি করছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর। গত ১৭ সেপ্টেম্বর রোববার বিকেলে জেলার বিভিন্ন হিমাগারে আলু ক্রয়-বিক্রয় হলেও বন্ধ ছিল কালাই পৌরশহরের নরওয়েস্ট হিমাগার। শুধু তাই নয়, আলু বাছাইয়ের সেডও ফাঁকা ছিল। হিমাগারের মূল ফটকে ঝুলছিল তালা। অথচ এখনও হিমাগারে মজুত আছে ৩৬ হাজার ৭০০ বস্তা আলু। এমন দৃশ্য দেখে হতবাক বাজার তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা।
১৮ সেপ্টেম্বর সোমবার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে হিমাগার গেইটে পাইকারি ৪০ থেকে ৪২ টাকা কেজি দরে আলু ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। সেই আলু খুচরা বাজারে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থায় সরকার পাইকারি সর্বোচ্চ ২৭ টাকা কেজিতে বিক্রির জন্য আলুর দর বেঁধে দেয়। কিন্তু সরকারের বেঁধে দেয়া দর মানছেন না ব্যবসায়ীরা। এদিকে প্রশাসনের বাজার তদারকি জোরদার হওয়ায় হিমাগারগুলোতে আলু ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ রয়েছে। রোববার বিকেলে বগুড়া আঞ্চলিক ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম কালাই উপজেলার বেশ কয়েকটি হিমাগারে বাজার তদারকি করতে যান। এ সময় নরওয়েস্ট হিমাগারে আলু ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ ছিল। সেড ছিল ফাঁকা এবং হিমাগারের মূল গেইটে ঝুলছিল তালা।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী জানান, বিগত বছরের লোকসান থেকে আজও মুক্ত হতে পারেননি তারা। ব্যাংকের ঋণ আজও জট বেঁধে আছে। তখন সরকার কোথায় ছিল। আজ ব্যবসায়ীরা লাভ করছে, এখন সবাই যেন ওঠেপড়ে লেগেছে। প্রশাসনের চাপাচাপির কারণেই ব্যবসায়ীরা আলু বিক্রি বন্ধ রেখেছে। হিমাগারে আলু সংরক্ষণের সময় এখনও আছে।
নরওয়েস্ট হিমাগারের ব্যবস্থাপক মুক্তার হোসেন বলেন, এই হিমাগারের ধারণ ক্ষমতা ৮৫ হাজার বস্তার। রোববার বিকেল পর্যন্ত সংরক্ষণ আছে ৩৬ হাজার ৭০০ বস্তা আলু। বেচাকেনা বন্ধ এবং সেড কেন ফাঁকা জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেদিন থেকে আলুর দর বেঁধে দেয়া হয়েছে, সেদিন থেকেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এখন আমাদের কী করার আছে। ব্যবসায়ীরা আলু বিক্রি বন্ধ করায় সেড ফাঁকা পড়ে আছে। তাছাড়া আলু সংরক্ষণের মেয়াদও আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত। সেকারণে আমরা ব্যবসায়ীদের চাপও দিতে পারছি না।
বগুড়ার আঞ্চলিক ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম জানান, ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণেই মূলত আলুর দাম এতো বেশি। হিমাগারগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ আলু এখনও সংরক্ষণ করা রয়েছে। এমন তথ্য আমাদের কাছে আছে। সরকার নির্ধারিত ২৭ টাকা কেজির বেশি দরে আলু বিক্রি করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। প্রথম অবস্থায় জরিমানাসহ তাদের সতর্ক করা হচ্ছে।
নরওয়েস্ট হিমাগারে আলু ক্রয়-বিক্রয় কেন বন্ধ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা কৌশল করছেন। তাদের সরকারের বেঁধে দেয়া দরে আলু বিক্রি করতে হবে। তা না হলে হিমাগার সিলগালা করা হবে। এ বিষয়ে হিমাগার কতৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে এবং আলু ব্যবসায়ীদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। এরপর তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available