নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর মহাদেবপুরে ক্লুলেস খুনের রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত তিন আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার বলেন, মহাদেবপুর থানার রাইগা ইউনিয়নের কালনায় আরমান সরদারের জমির পাশের কালভার্টের নিচে জাহিদুল ইসলামকে জবাই করে হত্যার পর ফেলে রেখে যায়।
নিহত জাহিদুল ইসলাম পত্নীতলা থানার কোতালী গ্রামের মৃত অছিমুদ্দিনের ছেলে। তার মৃতদেহটি একটি নীল পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় ছিল। এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ভিকটিমের স্ত্রী মোছা. নাসিমা খাতুন (৩৭) বাদী হয়ে ১৬ ডিসেম্বর মহাদেবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা দায়েরের পর থেকেই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডে কোন ধরনের ক্লু না থাকার কারণে তদন্তকারী কর্মকর্তা কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারছিলেন না। ফলে তদন্ত কাজে গতি সঞ্জারের জন্যে মহাদেবপুর সার্কেল অ্যাডিশনাল এসপি জয়ব্রত পালের নেতৃত্বে নওগাঁ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাতভর অভিযান চালিয়ে অভিযানিক দল হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত তিন আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- মামুনুর রসিদ (৩৬), পিতা গুলজার হোসেন, মো. রুবেল হোসেন (২৫), পিতা মৃত ইসমাইল হোসেন এবং মোহাম্মদ রাজু হাসান (৩২), পিতা মৃত আবুল কালাম আজাদ। তারা সকলেই পত্নীতলা থানার ঘোষনগর ইউনিয়নের কোতালী গ্রামের বাসিন্দা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে। পূর্ব শত্রুতা এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাওয়া গেছে। এ হত্যাকাণ্ডের সাথে মোট পাঁচ জন জড়িত ছিল মর্মে জানা যায়।
হত্যাকাণ্ডের মোড় ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য মৃতদেহটি পত্নীতলা থেকে একটি অটো চার্জার ভ্যানে করে মহাদেবপুরে এনে গুমের চেষ্টা করা হয়েছিল। এছাড়াও আলামত ধ্বংসের উদ্দেশ্যে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি মহাদেবপুর থানার চেরাগপুর ইউনিয়নের ধনজৈল গ্রামের মাঠের মধ্যে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
ঘটনার পর আসামিরা ভিকটিমের মরদেহ উদ্ধারসহ দাফন কাফন কাজে সক্রিয়ভাবে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করছে যাতে তাদেরকে কেউ সন্দেহ না করে।
উল্লেখ্য, মৃতদেহটি পত্নীতলা থেকে মহাদেবপুরে স্থানান্তরের কাজে ব্যবহৃত অটো চার্জার ভ্যানটিও উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available