তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি: বরগুনার তালতলীতে জিম্মায় রাখা চোরাই ট্রলার টাকার বিনিময়ে ছেড়ে না দেওয়ায় ইউপি সদস্য জামাল খানকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় দুই সাংবাদিকসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। মারধরের পরে আহত ইউপি সদস্যকে চিকিৎসা করতে না দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখলে ইউএনও উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
১ সেপ্টেম্বর রোববার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ইউপি সদস্যকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয় ইউএনও সিফাত আনোয়ার তুমপা। এর আগে গতকাল শনিবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের মরানিদ্রা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, লক্ষ্মী পরিবহন নামের একটি স্টিলবডি (ট্রলার) স্থানীয় সোহাগ আকন, বেলাল ও ইব্রাহিমসহ কয়েকজন চুরি করে উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের নিদ্রা স্লুইজঘাট খালে নোঙর করে পালিয়ে যায়। পরে জাফর দফাদার ট্রলারটি দেখতে পেয়ে ইউপি সদস্য জামাল খানকে জানালে তিনি প্রশাসনের নির্দেশে ট্রলারটি তার জিম্মায় রাখেন।
এই খবর পেয়ে তালতলী থেকে স্বাস্থ্য সহকারী আবু কালাম, বিএনপি সমর্থক আল আমিন, কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক বশির উদ্দিন, নাঈম ইসলাম, শাহাদাত হোসেনসহ ২৫ থেকে ৩০ জন নিয়ে আনুমানিক রাত ১১টার দিকে ইউপি সদস্য জামাল খানকে ঘুম থেকে উঠায়। পরে ঐ ইউপি সদস্যকে চোরাই ট্রলারটি নেওয়ার জন্য অনৈতিক প্রস্তাব দেন।
এতে রাজি না হলে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় ইউপি সদস্য বাধা দিলে আবু কালাম, নাইম ও শাহাদাতের নির্দেশে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে ও বিবস্ত্র করে ফেলে ঘটনাস্থল থেকে নিদ্রা বাজারে নিয়ে আসেন। ফের মারধর করলে স্থানীয়রা ইউপি সদস্যকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিতে চাইলে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে যায়। জীবনের ভয়ে ইউপি সদস্য চিকিৎসা না নিয়ে বাড়িতে থাকলে দুপুর দুইটার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুমপা উদ্ধার করে তালতলী হাসপাতালে পাঠায়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়।
আহত ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জামাল খান বলেন, রাতে জাফর দফাদার আমাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে ট্রলারের কাছে নিয়ে যায়। ট্রলারটি ছাড়িয়ে নিতে আবু কালাম, আল আমিন, বশির, নাইম ও শাহাদাতসহ তারা টাকার প্রস্তাব দেয়। এতে আমি রাজি না হওয়াতে আমাকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয় ও বিবস্ত্র করেন। আমি এই হামলা কারীদের বিচার চাই।
এবিষয়ে অভিযুক্ত আবু কালাম বলেন, ঐ ঘটনাটি আমার কর্ম এলাকায় হওয়াতে আমি বশিরের অনুরোধে আমি ঘটনাস্থলে যাই। তবে মারধরের ঘটনায় আমি জড়িত নই।
শাহদাৎ বলেন, আমরা তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়েছিলাম। তবে আমি ও নাইম ইসলাম মারধরের সাথে জড়িত নই।
ইউপি চেয়ারম্যান বাচ্চু মিয়া বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সবকিছু জেনেছি। এবিষয়ে সরাসরি কথা বলবো।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, ট্রলারের বিষয়ে ইউপি সদস্য আমাকে জানালে তাকে জিম্মায় রাখতে বলি। ঐ রাতেই ট্রলারটি ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য ইউপি সদস্যকে মারধরের খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি ও আহত ইউপি সদস্যকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এবিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available