চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: ইজারা ছাড়াই চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পদ্মা নদীর ছয় ফেরিঘাট থেকে ‘টোল’ তোলা হচ্ছে। এতে কোটি টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রাজস্ব বিভাগ। অভিযোগ উঠেছে, সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ঘাট থেকে টোল আদায় করছেন গত বছরের ইজারাদার।
শিবগঞ্জের ইজারা না হওয়া ঘাটগুলো হলো পাঁকা, উজিরপুর রাধাকান্তপুর, লক্ষ্মীপুর, হাসানপুর, নিউ পদ্মা ও পশ্চিম পাঁকাচর ফেরিঘাট। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৮টি ফেরিঘাটের মধ্যে ১৪৩১ বাংলা সনে ইজারা হয়নি পদ্মা নদীর এই ছয় ফেরিঘাট। ইজারা বিজ্ঞপ্তিতে চলতি সনে এই ছয় ঘাটের সম্ভাব্য ইজারামূল্য ধরা হয় ৯৫ লাখ ৩১ হাজার ৬০ টাকা।
এর মধ্যে পাঁকা ফেরিঘাট, উজিরপুর রাধাকান্তপুর ফেরিঘাট মিলিয়ে একটি প্যাকেজ, যার মূল্য ৩৬ লাখ ৬৭ হাজার ২৯০ টাকা। লক্ষ্মীপুর, হাসানপুর, নিউ পদ্মা ও পশ্চিম পাঁকাচর, এই চার ফেরিঘাট মিলিয়ে একটি প্যাকেজ, যার সম্ভাব্য মূল্য ধরা হয় ৫৮ লাখ ৬৩ হাজার ৭৭০ টাকা। ভ্যাট ও আয়কর যোগ দিলে মোট রাজস্ব দাঁড়াবে ১ কোটি ২০ লাখ টাকার বেশি। তবে এবার নতুন করে ইজারা দেওয়া সম্ভব হয়নি এসব ঘাট।
এখন ঘাটগুলো পরিচালিত হচ্ছে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) অধীনে। খাস আদায়ের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা বলছেন, যে হারে আদায় হচ্ছে, তাতে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা আদায় হবে। আর এই টাকার কত অংশ রাজস্ব খাতে যাচ্ছে, তারও হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না।
এলাকাবাসী ও ইউএনও কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ১৪৩০ বঙ্গাব্দের ইজারাদার রিপন আলীই ১৪৩১ সনে ‘খাস’ আদায় করছেন। চক্রটি দরপত্র অনুযায়ী ইজারা না নিয়ে দু-একজন অসাধু কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশে ‘খাস আদায়’ করছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত মেয়াদে এই ইজারাদার পদ্মাচরের মানুষকে জিম্মি করে অতিরিক্ত টোল আদায় করেছেন। এখনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে টোল আদায় করছেন। ডাব, চারাগাছ কিংবা সবজিরও টোল নেওয়া হয় এসব ঘাটে। এমনকি মুমূর্ষু রোগীকেও জিম্মি করে নেওয়া হয় অতিরিক্ত টাকা। এ নিয়ে মানববন্ধন ও প্রশাসনকে একাধিকবার জানিয়েও প্রতিকার পাননি স্থানীয় বাসিন্দারা।
ইজারাদার রিপন আলীর দাবি, গত বছর কোটি টাকায় ঘাট ইজারা নিয়ে কোনো লাভ হয়নি। প্রতিবছরই পদ্মাচরে মানুষ কমছে, ফলে যাতায়াতও কমছে। এবারও ফেরিঘাটের ইজারামূল্য ১০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে, অন্যদিকে টোলহার কমানো হয়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ। এ কারণে তাঁরা ইজারা নেননি। তিনি বলেন, উপজেলা প্রশাসনের অনুরোধে খাস আদায় করছেন।
উপজেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘যে কেউ তো ঘাটে টোল আদায়ের কাজ করতে পারবে না। যাদের অভিজ্ঞতা আছে, তাদেরই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিছু নয়ছয় হতে পারে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. উজ্জল হোসেন বলেন, ‘খাস আদায়ের একটি কমিটি আছে, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ কমিটির সভাপতি। তাঁকে জানাব ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available