চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: রমজানের রোজা কবুলের ফরিয়াদ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করে চট্টগ্রামে পাঁচলাইশ ওয়ার্ডের চালিতাতলি কেন্দ্রীয় ঈদগাহে পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় ছয়টি মসজিদসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় ১৫ হাজার মুসল্লি এ জামাতে অংশ নেন। দীর্ঘ ৩৭ বছরের ইতিহাসে এবারই সবচেয়ে বেশি মুসল্লি একসাথে নামাজ আদায় করেছেন এ ঈদগাহে।
ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হওয়ায় সড়কের মধ্যেও মুসল্লিরা নামাজে দাঁড়িয়ে যান। সব শ্রেণি-পেশা-আর্থিক অবস্থান ভুলে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে সবাই নামাজ আদায় করেন।
নামাজ শেষে খুতবার পর মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও দেশের মানুষের সুস্থতা কামনা করে দোয়া করা হয়। মোনাজাত শেষে বুকে বুক মিলিয়ে হৃদয়ের উষ্ণতায় প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হন সবাই। পরে মুসল্লিরা পরস্পর কোলাকুলি ও কুশল বিনিময় করেন।
ঈদ জামাতে ইমামতি করেন জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ ড. মাওলানা মো. লেয়াকত আলী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ঈদগাহ কমিটির সভাপতি জি এম আইয়ুব খান, সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন জসিম, সহ-সভাপতি আবদুর শক্কুর পাঁচলাইশী, ইমরান মাহমুদ রনিসহ অনেকে।
এর আগে সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ঈদগাহ ময়দানে সরেজমিনে দেখা যায়, নামাজ আদায়ের জন্য ঈদগাহের মূল ফটকের সামনে মানুষের সারি। হাজারো মুসল্লি সারিবদ্ধভাবে ঈদগাহে ঢুকছেন। নামাজের নির্দিষ্ট সময়ের আগেই চালিতাতলি কেন্দ্রীয় ঈদগাহ পরিপূর্ণ হয়ে যায়।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পাঁচলাইশ চালিতাতলি কেন্দ্রীয় ঈদগাহে জামাতে প্রায় ১৫ হাজারের বেশি মুসল্লি ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন।
পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়তে এসে ইমরান মাহমুদ রনি বলেন, সুদক্ষ ঈদগাহ কমিটির প্রচেষ্টায় ভেদাভেদ ভুলে সকলে এক সঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করতে পেরেছি। পরিচিত বন্ধুবান্ধব ও অনেক আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দীর্ঘদিন পরে দেখা হয়েছে। ভেদাভেদ ভুলে ঈদুল ফিতরের আনন্দ নিয়ে সুন্দরভাবে সকলে বসবাস করবে, এটাই আমার প্রত্যাশা।
পাঁচলাইশ চালিতাতলি কেন্দ্রীয় ঈদগাহ কমিটির সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন জসিম বলেন, শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে বর্ণ বৈষম্য ভুলে সবাই এক সারিতে দাঁড়িয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব রেজাউল করিম চৌধুরী এই ঈদগাহ ময়দানের উন্নয়নের জন্য ১ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। তিনি ব্যক্তিগতভাবে অনুদান দিয়ে সহযোগিতা করেছেন বলেই মুসল্লিরা নিশ্চিন্তে ময়দানে এসে শন্তিপূর্ণ পরিবেশে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।
পাঁচলাইশ চালিতাতলি কেন্দ্রীয় ঈদগাহ কমিটির সভাপতি জি এম আইয়ুব খান বলেন, ‘এক মাস আত্মসংযম করে মুসল্লিরা ঈদের নামাজ পড়েছেন। ঈদের আনুষ্ঠানিক সূচনা ঈদের নামাজের মধ্য দিয়ে শুরু হয়। নামাজের আগে ও পরে সকল ভেদাভেদ ভুলে কোলাকুলির মধ্য দিয়ে আনন্দ প্রকাশ করে সবাই। এই আনন্দ সম্প্রীতি ও শান্তির বার্তা দেয়। আল্লাহ আমাদেরকে সম্প্রীতি ও শান্তির জীবনে চলার তাওফিক দিক।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available