নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদফতরের (এনএসআই) সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল (অব.) টি এম জোবায়েরের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ জমা পড়েছে।
১১ আগস্ট রোববার রাজধানীর সেগুন বাগিচাস্থ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে এক অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ওই অভিযোগ জমা দেন। এতে টি এম জোবায়েরের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ সম্পদের তথ্য তুলে ধরা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের যোগসাজশে নানা অনিয়মের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে অঢেল সম্পদ অর্জন করেন তিনি। এছাড়া বিদেশে মুদ্রা পাচারের অভিযোগও রয়েছে এনএসআইয়ের সাবেক এই ডিজি’র বিরুদ্ধে।
এতে আরও বলা হয়, টি এম জোবায়েরের বিপুল পরিমাণ সম্পদের পেছনে হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে তার ক্ষমতা। এই ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যবসায়ী গ্রুপের মালিকদের নানা সুবিধা দিয়েছেন। একইসঙ্গে সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রীদের যোগসাজশে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্যও করেছেন টি এম জোবায়ের।
সাবেক এই এনএসআই ডিজি’র সম্পদের তথ্য উল্লেখ করে অভিযোগে জানানো হয়, গুলাশান-২ এর ৮৪ নম্বর সড়কে লেকের পাশে একটি বাড়ি এনএসআইয়ের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হতো। রাষ্ট্রীয় ওই বাড়িটি গণপূর্তের কর্মকর্তাদের সহায়তায় নিজের এক আত্মীয়ের নামে দখল করেছেন টি এম জোবায়ের। দেশের প্রথম সারির একটি ব্যবসায়ী গ্রুপের কাছ থেকে ঘুষবাবদ প্লট ও অর্থ নিয়েছেন বলেও ওই অভিযোগে বলা হয়।
এতে উল্লেখ করা হয়, গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি রিসোর্টের মালিকানা রয়েছে টি এম জোবায়েরের। এছাড়া তার অন্য সম্পদের মধ্যে রয়েছে, উত্তরার ৭নং সেক্টরে নিজের ও বোনের নামে ফ্ল্যাট, রাজলক্ষ্মী মার্কেটে ৪টি দোকান, সেগুন বাগিচায় ফ্ল্যাট, ও সাভারের ডিওএইচএস এলাকায় ১০ তলা বিশিষ্ট বাড়িও রয়েছে সাবেক এই ডিজি’র।
টি এম জোবায়ের ২৯ লাখ ৪৫ হাজার পাউন্ড ব্যয় করে যুক্তরাজ্যে একটি বাড়ি কিনেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
লন্ডনের বেক্সলি এলাকার হেথ কর্মট ওয়ানসান্ট সড়কে ৭ নম্বর বাড়িটি বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৫ কোটি টাকার বেশি। বাড়িটির রেজিস্ট্রেশনে তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন- টি এম জোবায়ের, এফ মাসুদ ও মোহাম্মদ এস ইবনে জোবায়ের। এফ মাসুদ ওরফে ফাহমিদা মাসুদ হলেন টি এম জোবায়েরের স্ত্রী এবং মোহাম্মদ এস ইবনে জোবায়ের তাদের সন্তান।
২০১৮ সালে টি এম জোবায়েরকে এনএসআইয়ের ডিজি হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। এরপর টানা ছয় বছর তিনি ওই পদে দায়িত্ব পালন করেন। পরে তাকে সেনাবাহিনীতে ফিরিয়ে নেয়া হয় গত বছরের ৩১ মার্চ।
অভিযোগের বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও টি এম জোবায়েরের মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশে দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, টি এম জোবায়েরের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ জমা পড়েছে। যাচাই-বাছাই কমিটির প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে প্রকাশ্যে অনুসন্ধান করা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available