পঞ্চগড় প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ের সদর উপজেলার দশমাইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পদে মুন্না নামে এক ব্যাক্তিকে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যেমে নিয়োগ প্রদানের অভিযোগ এনে এবং সভাপতি ও ম্যানেজিং কমিটিকে ভুয়া হিসেবে আখ্যা দিয়ে মানববন্ধন কর্মসূসি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১০ ডিসেম্বর রোববার দুপুরে দশমাইল এলাকাবাসী এবং যুব সমাজের ব্যানারে উপজেলার সাতমেড়া ইউনিয়নের দশমাইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে পঞ্চগড়-তেঁতুলিয়া সড়কের পাশে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে সাতমেড়া ইউনিয়নের দশমাইল এলাকার স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেশি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এতে বক্তব্য রাখেন মোজাম্মেল হক কাবুল, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবের আলী, বিদ্যালয়টির জমিদাতা কফিল উদ্দীন, শিরিন আক্তার প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ম্যানেজিং কমিটিকে ভুয়া হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, দশমাইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পদে মুন্না নামে এক ব্যাক্তিকে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যেমে গত ৭ ডিসেম্বর নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। নিয়োগটি গোপনে দেয়া হয়েছে, ওইদিন সকাল ৮টায়। ওই নিয়োগে বিদ্যালয়টির সভাপতি মনতেজার রহমান ও বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেন প্রধান আজাদসহ বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটির সদস্যরা ১২ লাখ টাকা নিয়েছেন। এছাড়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি কোন পত্রিকায় দেয়া হয়েছে এবং কবে দেয়া হয়েছে সেগুলো গোপন করা হয়েছে।
বক্তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, এর আগেও এই বিদ্যালয়ে গত ২০০০ সালে নৈশপ্রহরী হিসেবে বিদ্যালয়ের জমিদাতা কফিল উদ্দীন নামে একজনকে নিয়োগ প্রদানের জন্য নির্বাচিত করেছিলেন প্রধান শিক্ষক আজাদ সহ তৎকালীন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যরা। তাকে নিয়োগ না দিয়ে অন্য আরেকজনকে সেসময় নিয়োগ দেয়া হয়। এছাড়া গত ২০২২ সালে এক নিয়োগে নিয়ে বিরোধ শুরু হয়। এনিয়ে খয়রুল হক নামে স্থানীয় একজনের সাথে লিখিত আপোসনামাও করা হয়। এছাড়াও বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক সুরেন্দ্রনাথকে নিয়ম বর্হিভূতভাবে পদোন্নতি দিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক করা হয়। প্রধান শিক্ষক আজাদ এক দাতা সদস্যর দেয়া ২ লাখ টাকা বিদ্যালয়ের ব্যাংক একাউন্টে জমা না করে আত্মসাৎ করেন। গত ২০১৪ সালে এক নারীকে বিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হিসেবে বিপুল টাকা নিয়ে নিয়োগ দেয়া হয়। এখনো তার কোনো বেতনভাতা হয়নি।
অবিলম্বে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি বাতিল ও প্রধান শিক্ষকের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণনের দাবি করেন বক্তারা।
দশমাইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেন প্রধান আজাদ বলেন, যারা আবেদন করেছেন এবং ডিজির প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি জানেন। আর কারো জানার দরকার আছে কি? কে জানলো আর জানলো না তাতে কি।
দশমাইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি মনতেজার রহমান বলেন, আমরা যদি দুর্নীতি করি তাহলে ডিজির প্রতিনিধি কীভাবে পেলাম। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নিয়োগ পরীক্ষা সকালে নিতে বলেছিলেন এজন্য সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত হয়েছিল। গত কিছুদিন আগে পাশের একটি স্কুলে নিয়োগে ২০ লাখ টাকা নেয়া হয়। তখন কিছু নেই। আর আমরা একটা নিয়োগ দিয়েছি, তাতেই মানববন্ধন করা হয়েছে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল মালেক বলেন, নিয়োগ গোপনে কি দেয়া হয়? অভিযোগ মানববন্ধন করেতেই পারে। আপনারাই তো বিষয়টির গোপন তথ্য উদ্ধার করবেন। পরে আমরা ব্যবস্থা নিবো।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available