বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোছা. শামছুন্নাহারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম, অর্থ আত্মসাত এবং কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ তদন্ত শুরু হয়েছে।
অভিযোগ তদন্তের জন্য নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা. আবু হেনা মোহাম্মাদ রায়হানুজ্জামান সরকারকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক। নিয়োগ কর্মকর্তা মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে তার তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন।
জানা গেছে, অভিযুক্ত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোছা. শামছুন্নাহার ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারিদের অবৈধভাবে রতবদল করা হয়। সেই সাথে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ আত্মাতের সাথে জড়িয়ে পড়েন। বর্তমানে বিএমএ বগুড়া ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ বগুড়া কতিপয় নেতার দাপটে সে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরে অনেক দামি গাছ কেটে বিক্রি করে টাকা আত্মসাত করেছেন। এছাড়া করোনাকালীন কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ভ্রাতা উত্তোলন করে তা কৌশলে আত্মসাত করেন। হাসপাতালে রোগীদের টিকিটের টাকাও ভিন্ন রশিদে আদায় করে আত্মসাত করেছেন। অখ্যাত কোম্পানির নিন্মমানের ঔষধ ক্রয় করে সরকারের টাকা আত্মসাত করেন। ওই ঔষুধ মানুষের রোগ প্রতিরোধে তেমন কাজে আসছে না।
অভিযোগে রয়েছে, তিনি যোগদান করেই বহিঃবিভাগ ফার্মেসিতে অভিজ্ঞ ও পুরাতন ফার্মাসিস্ট একলিমুর রহমান দোয়েল ও বখতিয়ার আহসানকে অবৈধভাবে সরিয়ে তার পছন্দনীয় একজন পুরুষ নাসকে ইনচার্জ হিসাবে পদায়ন করেন। গুরুত্বপূর্ণ ষ্টোর কিপার পদে তার পছন্দনীয় ব্যক্তি জুনিয়র স্বাস্থ্য সহকারী রবিউল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর পর থেকেই চলছে ইচ্ছামত সরকারি ওষুধ নয়-ছয় করে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করে।
২০২৩ সালের জুন মাসে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ঠিকাদারের মাধ্যমে ৮৫ লাখ টাকার ওষুধ, দামি ইনজেকশন, জীবন রক্ষার স্যালাইন এবং এমএসআর দ্রব্যাদি (গজ, ব্যান্ডেজ, বেড কভার, সার্জিক্যাল দ্রব্যাদি) ক্রয় করেন। ঠিকাদারের বিলও পরিশোধ করেন। এক্ষেত্রে নিয়ম না মেনে ক্রয়ের মালামালগুলো ষ্টোর রুমে না রেখে সরকারি আবাসিক ভবনে রাখা হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, ওই দ্রব্যাদিগুলো পুনঃরায় ঠিকাদারের মাধ্যমে ফেরত প্রদান করে আত্মসাত করা হয়েছে। এছাড়া সরকারি ক্রয়নীতি উপেক্ষা করে অতি নিন্মমানের কোম্পানির কাছ থেকে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার আয়ুবের্দীক মেডিসিন ক্রয় করা হয়েছে। অনিয়ম, দুর্নীতির ও অর্থ আত্মসাতের বিরুদ্ধে গত ৯ নভেম্বর ২০২২ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ১৭ জন চিকিৎসক মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদফতর মহাখালী ঢাকা বরাবরে স্থাণীয় সংসদ সদস্য অ্যাড. নুরুল ইসলাম তালুকদারের সুপারিশকৃত লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এছাড়া বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়। ওই সব অভিযোগ বর্তমান সময়ে তদন্ত হচ্ছে। এদিকে তার বিরুদ্ধে এলাকার মানুষসহ হাসপাতালে কর্মকর্তারা বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামছুন্নাহারের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি কোনো কথা বলবেন না বলে জানান।
এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা. আবু হেনা মোহাম্মাদ রায়হানুজ্জামান সরকার জানান, তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে এখনি কিছু বলা যাবে না। তদন্ত শেষে রিপোর্ট দিলে সেখান থেকে জেনে নিবেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available