নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর বিভিন্ন মাঠে এখন দেখা মিলছে মরিচের ক্ষেত। কৃষকরা স্থানীয়, সাদা ও আকাশী জাতের মরিচের আবাদ করেছেন। তবে কিছুদিন আগেও জেলার ওপর দিয়ে অনাবৃষ্টি ও প্রচন্ড খরা বইয়ে যায়। এতে ক্ষেত রক্ষায় যেমন বাড়তি সেচ দিত হয়েছে, তেমনি বিশেষভাবে পরিচর্যাও করতে হয়েছে কৃষকদের। এ সময় বিরূপ আবহাওয়ার কারণে অনেক ক্ষেত নষ্ট হয়ে যায়। ফলে মরিচের উৎপাদন কম হওয়ায় বাড়তে থাকে দাম। এতে মরিচের ঝাঁজ বাড়তে থাকে বাজারে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় এ বছর ৯৬৫ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। যা থেকে শুকনা মরিচের উৎপাদন হবে অন্তত ১ হাজার ৯৩০ টন।
নওগাঁ সদর উপজেলার কীর্ত্তিপুর সাপ্তাহিক শুক্র ও মঙ্গল হাট বার। কৃষকরা ক্ষেতের মরিচ বিক্রির জন্য সাইকেল ও ভ্যানে করে হাটে নিয়ে আসেন। গত একমাস ধরে মরিচের দাম ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। হাটে বিক্রি হয় প্রকারভেদে ১২০-১৫০ টাকা কেজি।
কৃষকরা জানান, মরিচ চাষে পরিশ্রম ও খরচ বেশি হয়। তবে ভালো দাম পাওয়া যায়। প্রতি বিঘায় খরচ পড়ে অন্তত ৪০ হাজার টাকা। আর এক মৌসুমে উৎপাদন হয় প্রায় ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার মরিচ। তবে ৪০ কেজিতে মণের পরিবর্তে ৪১ কেজিতে মণ কিনে নিয়ে যান ব্যবসায়ীরা।
ব্রুজরুকআতিতা গ্রামের মরিচ চাষি আয়েন উদ্দিন জানান, ‘১০ কাঠা জমিতে মরিচ লাগিয়েছিলাম। মৌসুমের শুরুতে প্রচন্ড খরা হওয়ার কারণে অনেক গাছ মরে যায়। তারপরও সেচ দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছি। গাছে মরিচ আসা শুরু করেছে। ইতোমধ্যে আড়াই হাজার টাকার মরিচ বিক্রি করেছি।’
কীর্ত্তিপুর গ্রামের চাষি হাফিজুর রহমান বলেন, ‘১৫ কাঠা জমিতে মরিচ লাগিয়েছি। সপ্তাহে প্রায় ১৫ কেজি মরিচ উঠছে। বাজারে পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৫০ টাকা কেজি। কিছুদিন আগেও ১৮০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। এবার মরিচের ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে।’
পাইকারি ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘কিছুদিন আগে হাটে মরিচের সরবরাহ কম থাকায় প্রতিকেজি ১৮০-২০০ টাকা পর্যন্ত কিনতে হয়েছে। তবে এখন সরবরাহ বাড়ায় কেজিতে অন্তত ৪০-৫০ টাকা কমেছে। মরিচ কাঁচা হওয়ায় শুকিয়ে ওজনে কমে যায়। এজন্য মণে এককেজি বাড়তি নিতে হচ্ছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ কয়েকটি জেলায় সরবরাহ হয়। প্রতি হাটে অন্তত ৩ লক্ষাধিক টাকার মরিচ বেচাকেনা হয়।’
নওগাঁ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘রবি ও খরিপ মৌসুম মিলে প্রায় ১৫০ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। আশা করা যায়, প্রায় ৩০০ মেট্রিক টন মরিচ উৎপাদন হবে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে মরিচক্ষেত সতেজ হলেও কিছুটা ছত্রাকের উপদ্রব হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। তবে বাজারে ভালো থাকায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছে।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available