নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের ৭ গ্রুপের ৩৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১। রাজধানীর বিমানবন্দর, বনানী, মহাখালী, টঙ্গী ও গাজীপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। র্যাব বলছে, স্থানীয় বিভিন্ন বড় ভাইদের হয়ে কাজ করে এই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা।
গ্রেফতাররা হলেন- রাসেল (১৭), আরাফাত (১৭), রবিন (১৫), আল-আমিন (২৪), ইসলাম (২৯), জুয়েল (২২), রবিউল (১৬), মুরাদ (১৭), মাহাবুব (১৯), সাদ (২২), রোহান (২২), মনা (২৮), হৃদয় (২০), ওবায়েদ (১৮), মো. জিসান(১৯), মো. আকাশ (৩০), মো. ঈমন (২০), মো. রমজান (২১), মো. সজিব(১৮), মো. শাকিব (২২), মো. রাজিব (১৯), মো. আমির হোসেন (৩৬), শাহজাহান সাজু ওরফে রাসেল (৪৫), মো. জিলাদ মিয়া (২০), মো. হৃদয় (১৯), আ. রায়হান (১৫), মো. বাবু মিয়া (২২), মো. শাহজাহান (২১), মো. জালাল মিয়া (২৮), লামিম মিয়া (১৫), মো. রাকিব (১৬), মো. হিরা মিয়া (১৭), ইমরুল হাসান (১৭), মো. সাকিন সরকার রাব্বি (১৮), মো. সুজন মিয়া (১৯), খাইরুল (১৯), রাহাত (১৯)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫০০ গ্রাম গাজা, ২৪টি মোবাইল, ১টি ব্লেড, ১টি কুড়াল, ১টি পাওয়ার ব্যাংক, ৫টি রড, ১৬টি চাকু, ৩টি লোহার চেইন, ১টি হাতুড়ী, ১টি উচ্চ শব্দ সৃষ্টি করা মোটরসাইকেল এবং নগদ ২৪ হাজার ২৫০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর উত্তরায় র্যাব-১ এর প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোসতাক আহমেদ।
তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে কিশোর গ্যাং, গ্যাং কালচার, উঠতি বয়সি ছেলেদের মাঝে ক্ষমতা বিস্তারকে কেন্দ্র করে এক গ্রুপের সাথে অন্য গ্রুপের মারামারি করা বহুল আলোচিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। গ্যাং সদস্যরা এলাকায় নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে দল বেঁধে ঘুরে বেড়ায়, বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালায়, পথচারীদের উত্যক্ত করে এবং ছোট খাটো বিষয় নিয়ে মারামারি করে। এছাড়াও তারা নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে কিংবা তাদের বিশৃঙ্খলায় কেউ প্রতিবাদ করলে খুন করতেও দ্বিধাবোধ করে না। এরই ধারাবাহিকতায় রাজধানীর মহাখালী, বনানী, বিমানবন্দর, টঙ্গি ও গাজীপুর এলাকায় একাধিক অভিযানে কিশোর গ্যাং গ্রুপ ‘০০৭ গ্রুপের দলনেতা আল-আমিন (২৪), জাউরা গ্রুপের দলনেতা মাহাবুব (১৯), বাবা গ্রুপের দলনেতা সাদ (২২), ভোল্টেজ গ্রুপের- মনা (২৮), ডি কোম্পানির দলনেতা পাপ্পু ওরফে লন্ডন পাপ্পু। তার অন্যতম দুই সহযোগী আকাশ ও আমির হোসেন, জাহাঙ্গীর গ্রুপের দলনেতা বয়রা জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
র্যাব-১ অধিনায়ক মোশতাক আহমেদ আরও বলেন, প্রতিটি গ্রপের আনুমানিক সদস্য ১০ থেকে ১৫ জন। তারা টাকার বিনিময়ে মারামারি, দখলবাজি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। গ্রেফতার হওয়াদের মধ্যে ১৭ জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক, অস্ত্র, ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
কিশোর গ্যাং গ্রুপের মদদদাতা কারা, তাদের লাভ কি? এমন প্রশ্নের জবাবে র্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, আপনারা জানেন, কিশোর গ্যাং গ্রুপের দলনেতাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। কিছু ব্যক্তি এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে এদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা মদদদাতাদের হয়ে মারামারি করে। অনেকেই এই গ্রুপের সদস্যদের মূলত হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে, এমন তথ্য আমরা পেয়েছি। তাদের হয়ে কাজ করার কারণে অপরাধ করে শেল্টার পায়।
যারা তাদের নানাভাবে মদদদাতা হিসেবে কাজ তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ের নেতাদের ছত্রছায়ায় বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক মিছিল মিটিংয়ে দেখা যায়। এই সকল মদদদাতাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, অপরাধীদের কোনো দল বা ঠিকানা থাকতে পারে না। তাদের কোনো পরিচয় বিষয় না। তারা কার হয়ে কাজ করে সেটিও বিবেচ্য বিষয় নয়। কোনো অপরাধ করলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available