পিরোজপুর প্রতিনিধি: সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ ও নিজ এলাকায় নেতৃত্ব দেন পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র শফিকুল ইসলাম মাসুদ। শফিকুলের গ্রামের বাড়ি ইন্দুরকানী উপজেলার ভবানীপুর গ্রামে। আন্দোলনে সক্রিয় থাকায় শুরু থেকেই বিভিন্ন হুমকি-ধামকি পেতে থাকেন জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী শফিকুল।
৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি কিছুটা নিন্ত্রয়ণ হলে শফিকুল তার নিজ এলাকায় ছাত্রদের নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। গেল বুধবার কর্মসূচি শেষে বাড়ি ফেরার পথে ইন্দুরকানীর ঘোষেরহাট বাজারের ব্রিজ পার হওয়ার সময় ওৎ পেতে থাকা ছাত্রলীগ নেতা ইশাজ শিকদার ধারালো অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। অস্ত্রের আঘাতে মারাত্মক জখম হয়। পরে স্থানীয়রা আহত শফিকুল ইসলাম মাসুদকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। সেখানেই চিকিৎসা চলে।
ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার ছাদিয়া জানান, মাসুদকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয় পিঠে, ৪০টির মত সেলাই দেওয়া হয়েছে। এখন আগের থেকে অনেকটা সুস্থ। এ ঘটনায় আহত শফিকুল ইসলাম মাসুদের পিতা শহিদুল ইসলাম বাদি হয়ে ইন্দুরকানী থানায় ৫ জনের নাম উল্লেখ কলে একটি মামলা দায়ের করেন।
শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে ছোটবেলা থেকেই প্রতিবাদী। কোনো অন্যায় দেখলেই সে প্রতিবাদ করে। সে ঝুঁকি নিয়ে এই ছাত্র আন্দোলনে গেছে, আওয়ামী সন্ত্রাসীদের কোপ খেয়ে আমার ছেলে আজ হাসপাতালে কাতরাচ্ছে! আমি এর বিচার চাই।
পিরোজপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক শাহরিয়ার আমিন সাগর বলেন, আমাদের ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক শফিকুল ইসলাম মাসুদকে কোপানোর খবর শোনার সাথে সাথে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার জন্য পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে ১ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে আসি। ঠিক পরের দিন রাতে হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেফতার করে সেনাবাহিনী। আমরা এই সন্ত্রাসী ও তার সাথে যারা যারা জড়িত তাদের কঠোর বিচার দাবি করছি।
আহত ছাত্রনেতা শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, দেশ থেকে স্বৈরাচার পতনে আমাদের শত শত ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছে। আমরা মাঠে নেমেছি দরকার হয় জীবন দিবো। তবে স্বৈরাচার পতনের পরেও আমার উপর এমন হামলা হবে সেটি ভাবি নাই। আমি সুস্থ হয়ে সুন্দর দেশ গঠনে সবাইকে নিয়ে কাজ করবো। বাংলার মাটিতে আর স্বৈরাচার শাসকের ঠাঁই হবে না।
ইন্দুরকানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, বুধবার রাতে ঘোষেরহাট বাজারে ইন্দুরকানী সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইশাজ শিকদার ধারালো অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থী শফিকুলের উপর হামলা করে। তার পরিবার মামলা করলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় যৌথ অভিযানে শুক্রবার রাতে আসামি ইশাজ শিকদারকে গোপালগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়। এর সাথে আরো কে কে জড়িত আছে আমরা খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনবো।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available