কুমিল্লা প্রতিনিধি: কুমিল্লার লালমাই উপজেলার পেরুল উত্তর ইউনিয়নের চরবাড়িয়া গ্রামের গার্মেন্টস ব্যবসায়ী কোরবান আলী মেয়েদের নিয়ে ঢাকায় থাকেন। বড় মেয়ে মালয়েশিয়ায় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়ে পড়ালেখা করেন। শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।
১ মার্চ শুক্রবার বিকেলে রিয়ার মালয়েশিয়া ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। যাওয়ার আগে ভিকারুননেসা পড়ুয়া ছোট বোন আরিশা ও সিটি কলেজে পড়ুয়া খালাতো বোন লিমুকে নিয়ে কাচ্চি খেতে গিয়েছিল বেইলি রোডের ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্টুরেন্টে। খাবার খাওয়ার আগে আগুনের কুণ্ডলী দেখে বাবাকে ফোন দিয়ে রিয়া বলেন, ‘বাবা আমাকে নিয়ে যাও। আমাকে এখান থেকে বাঁচাও।’
১ মার্চ শুক্রবার লালমাই উপজেলার পেরুল উত্তর ইউনিয়নের চরবাড়িয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এভাবেই কথাগুলো বলেছেন নিহত রিয়া ও আরিশার বাবা কোরবান আলী। আগুন লাগার পর মেয়ের ফোন পেয়ে বাঁচার আকুতি দেখে কোরবার আলী ঢাকা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগের মর্গে যান। সেখানে তিনি দুই মেয়েসহ তিন বোনের নিথর দেহ পান।
নিহতদের বাবা কোরবান আলী বলেন, ‘আমার মেয়ে কাঁদছিল। সে বলছিল, বাবা আমাকে বাঁচাও। আমাকে এখান থেকে বের করে নিয়ে যাও। সঙ্গে আমার ভায়রা ভাইয়ের মেয়েও ছিলো। আমার মেয়েরা আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। আমি এখন কি নিয়ে বাঁচবো। আমার মেয়ের কেঁদে কেঁদে বলা কথাগুলো এখনো আমার কানে বাজছে। আমি পারিনি আমার মেয়েদেরক বাঁচাতে, আমি পারিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুই বোনের লাশ চরবাড়িয়া গ্রামে আনা হয়েছে। বিকেল ৫টার দিকে ওদের দাফন করা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে রাজধানীর বেইলি রোডের ভবনটিতে আগুন লাগে। আগুন নেভানোর পর হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। ওই ঘটনায় কুমিল্লার ৫ জন মারা গেছেন। তারা হলেন- মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর এলাকার পদ্মা সাহা, সদর উপজেলার কোটবাড়ি হাতিগড়া এলাকার নুসরাত জাহান শিমু, লালমাই উপজেলার চরবাড়িয়া এলাকার ফৌজিয়া আফরিন রিয়া ও তার বোন আরিশা এবং ব্রাহ্মণপাড়া কান্দুঘর জান্নাতিন তাজরি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available