নিজস্ব প্রতিনিধি: ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল চলাচল শুরু হতে সময় লাগতে পারে অন্তত এক মাস। পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে জাপানের কারিগরি কমিটির পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত রেলস্টেশনগুলো পরিদর্শনের পর। তাঁদের পরামর্শ অনুযায়ী সবকিছু সংস্কার হবে। তারপর ট্রেন চালানোর প্রস্তুতি।
আন্দোলনকারীদের হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মেট্রোরেলের কারিগরি ক্ষয়ক্ষতি চিহ্নিত করা হয়েছে। সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়সহ ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতি চিহ্নিত করা হয়। এই বিবরণ ২৯ জুলাই সোমবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকেও পাঠানো হয়েছে।
পাঠানো ওই বিবরণে বলা হয়েছে, ১৮ জুলাই থেকে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় নাশকতার মাধ্যমে ডিএমটিসিএলের মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া মেট্রো স্টেশনে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। দুর্বৃত্তদের হামলায় মিরপুর-১০ স্টেশনের সিভিল, ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল, বিল্ডিং ম্যানেজম্যান্ট সিস্টেম, টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রায় শতভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাজীপাড়া স্টেশনে বিভিন্ন সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হামলায় দুটি স্টেশনের পূর্ত স্থাপনায় ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাটসহ ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর কথা উল্লেখ করে বিবরণে বলা হয়, প্রবেশ ও বহির্গমন গেট, অগ্নিরোধক দরজা ও জানালাগুলো, বিভিন্ন ধরনের সাইনেজ, এসএস ফেন্সিং, বিশেষ ধরনের কাচের দরজা ও জানালা, স্টেশনের আসবাবপত্র ইত্যাদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ইলেকট্রিক্যাল এবং মেকানিক্যাল কাজের মধ্যে রয়েছে অগ্নিনির্বাপক ও শনাক্তকরণ সিস্টেম, ফায়ার ফাইটিং সিস্টেমস, বিল্ডিং ম্যানেজম্যান্ট সিস্টেম, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, চলন্ত সিঁড়ি, বিশেষ ধরনের সুইচ।
নাশকতার পরিপ্রেক্ষিতে কাফরুল থানায় একটি ও মিরপুর মডেল থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়সহ ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, মেট্রোরেলের কারিগরি ক্ষয়ক্ষতি চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব সমস্যা সমাধান করে ট্রেন পরিচালনায় সময় লাগবে অন্তত এক মাস। সমস্যা সমাধানের জন্য জাপানের কারিগরি কমিটিকে মেট্রোরেল পরিদর্শনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাদের বাংলাদেশে আসার তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি দল ঢাকায় এসে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পরিদর্শন করবে। এরপর তাঁদের পরামর্শ অনুযায়ী সংস্কার শুরু হবে।
জানা গেছে, প্রথমে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ট্রেন লাইন চালুর বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এরপর মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনের ক্ষয়ক্ষতি সংস্কারকাজ শুরু হবে। এক্ষেত্রে বিদেশ থেকে আনতে হবে অনেক যন্ত্রপাতি। টেন্ডার দেওয়ার পর সেসব আসবে। এগুলো প্রতিস্থাপনে প্রয়োজন হতে পারে জাপানি বিশেষজ্ঞ। ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশনগুলো সারাতে সময় লাগতে পারে অন্তত এক বছর।
ডিএমটিসিএলের সচিব আবদুর রউফ বলেন, মেট্রো কবে নাগাদ চালু হবে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। আমরা এটি চালুর ব্যাপারে আন্তরিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
ডিএমটিসিএলের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেনন্টেনেন্স) নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, কবে থেকে মেট্রো চালু করা যাবে, এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সম্ভাব্য কোনো সময়সীমা বলাও সম্ভব নয়। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, মেট্রোর প্রতিটি স্তর টেকনিক্যাল। এ কারণে ট্রেন পরিচালনা করা যাচ্ছে না।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available