• ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ০১:২০:২৩ (22-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • শুক্রবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ০১:২০:২৩ (22-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

নওগাঁয় বরেন্দ্র অঞ্চলে গম-ভুট্টার চাষ বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ

২৫ আগস্ট ২০২৩ সকাল ১১:৩০:৫৮

নওগাঁয় বরেন্দ্র অঞ্চলে গম-ভুট্টার চাষ বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে খ্যাত পোরশা, সাপাহার ও নিয়ামতপুর উপজেলা। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে এখানে প্রলম্বিত হচ্ছে খরা। এই পরিস্থিতিতে আশা দেখাচ্ছে আধুনিক চাষের কৌশল বেড প্ল্যান্টিং। তাতে সবদিক দিয়েই মিলবে লাভ। গবেষকরা বলছে, সংরক্ষণশীল এই কৃষি পদ্ধতিতে গম ও ভুট্টা চাষ করা যায়। এই পদ্ধতিতে চাষে সেচ, সার এবং চাষের খরচ বাঁচবে কৃষকের। রক্ষা পায় মাটির স্বাস্থ্য, সুরক্ষিত থাকে পরিবেশ। দেশে বেড প্ল্যান্টিং ছড়িয়ে দিতে কাজ করছেন গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও রাজশাহী অঞ্চল প্রধান ড. মো. ইলিয়াছ হোসেন। ২০০৪ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত সাত বছর সংরক্ষণশীল কৃষি পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করেছেন তিনি। প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা হ্রাস করা ছিল এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য।

তারই ধারাবাহিকতায় ২৪ আগস্ট বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয়ের হল রুমে জেলার পোরশা, সাপাহার ও নিয়ামতপুর উপজেলার ৬০ জন কৃষকদের আধুনিক পদ্ধতিতে উন্নত জাতের গম ও ভুট্টার উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ র্শীষক কৃষক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

এতে প্রধান অতিথি উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও রাজশাহী অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ শামছুল ওয়াদুদ।

বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁর উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ।

২০১৫ সালের এপ্রিলে আন্তর্জাতিক কৃষি বিজ্ঞান সাময়িকীতে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। তাতে দেখা গেছে, এই প্রযুক্তিতে চাষের খরচ কমে যায় ৬০ শতাংশ। ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ সেচের পানি সাশ্রয় হয়। খেতে নাড়া বা খড় থাকায় ১০ থেকে ২০ শতাংশ ইউরিয়া এবং ৭ থেকে ৯ শতাংশ পটাশ সার সাশ্রয় হয়। চাষ কম লাগায় জ্বালানি সাশ্রয় হয় প্রায় ৪০ শতাংশ। টেকসই এই প্রযুক্তিতে কার্বন নিঃসরণ কম হয় প্রায় ৪৪ শতাংশ। ২০১১ সালের পর এই প্রযুক্তি কৃষকের মাঠে ছড়িয়ে দিতে কাজ করছেন গবেষক ড. ইলিয়াছ হোসেন। তিনি বলেন, এ অঞ্চল খরা প্রবণ। এই অঞ্চলে সেচের পানির ঘাটতি রয়েছে। কেবল পানির অভাবে আমন মৌসুমে ৭৫ হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি পড়ে থাকে। এই জমি চাষের আওতায় আনা সম্ভব হলে অতিরিক্ত প্রায় ৩০ টন ফসল ফলানো সম্ভব। এসব জমি গম ও ভুট্টা চাষের বিশেষ উপযোগী। সংরক্ষণশীল কৃষি প্রযুক্তিতে চাষাবাদ করা গেলে ব্যাপক পরিমাণ গম ও ভুট্টা উৎপাদন সম্ভব।

বেড পদ্ধতিতে চাষাবাদ বিষয়ে তিনি বলেন, এই পদ্ধতিতে সরাসরি জমি তৈরি, বীজ বপন, মই দেয়া ও বেড তৈরির কাজ এক চাষেই হয়। স্বাভাবিক পদ্ধতিরমত চাষ-মই দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। এই চাষ পদ্ধতিতে সার-বীজ সঠিক গভীরতায় পড়ে। ফলে বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা বাড়ে। দুই লাইনের মধ্যবর্তী স্থানে জমি চাষ পড়ে না। ফলে নাড়া স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে। এতে মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষিত হয়। চাষের সময় একই সঙ্গে বেড ও নালা তৈরি হয়। বেডের উপর ফসল ও নালায় পানি দেয়া হয়। এতে সেচ কম লাগে। কম পানিতে গম ও ভুট্টার বৃদ্ধি এবং ফলন ভালো হয়। গাছের শেকড় গভীরে থাকায় গাছ হেলে পড়ে না। আবার বেডের সঙ্গে নালা থাকায় আগাছা দমন সহজ হয়। পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচল করায় ইঁদুরের আক্রমণ হয় না। একই বেড না ভেঙে বিভিন্ন ফসল চাষ করা যায়।

ভুট্টা চাষের হিসেব ধরে তিনি বলেন, ভুট্টা চাষের জন্য প্রচলিত পদ্ধতিতে এক হেক্টর জমি চাষে খরচ হয় প্রায় ১২ হাজার টাকা। বীজ বপনে শ্রমিক খরচ হয় ১৫ হাজার টাকা। নালা তৈরিতে আরও শ্রমিক খরচ ১১ হাজার টাকারমত। সব মিলিয়ে হেক্টরে কৃষকের খরচ ৩৮ হাজার টাকা। কিন্তু বেড পদ্ধতিতে মাত্র একটি চাষেই বেড তৈরি, বীজ বোনা এবং চাষ হয়ে যায়। এতে সর্ব সাকুল্যে খরচ হয় ৪ হাজার টাকা। এই পদ্ধতিতে চাষে হেক্টরে ৩৪ হাজার টাকাই সাশ্রয় কৃষকের। আবার প্রচলিত চাষে প্রতি হেক্টরে ৪৫ লিটার জ্বালানি পোড়ে। তাতে উৎপন্ন হয় ১১২ কেজি কার্বন ডাই-অক্সাইড। কিন্তু বেড পদ্ধতিকে চাষে জ্বালানি পোড়ে ১৭ লিটার। তাতে কার্বন ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন হয় ৪২ লিটার। এই পদ্ধতিতে চাষে ৭০ লিটার কম কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ হয়।

নেয়া সাপাহার উপজেলার কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের এলাকায় ধান চাষ হয় না বললেই চলে। খরা হওয়ার কারণে অনেক জমি অনাবাদি পড়ে থাকে। এখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। আমি গম ও ভুট্টার আবাদ শুরু করবো এবার।

পোরশা উপজেলার কৃষক মামুন শাহ বলেন, বেড প্ল্যান্টার’ যন্ত্রে বেড তৈরি করে চাষাবাদ করার ফলে কম সময়ে জমি যেমন তৈরি করা যায়। তেমনি সার, বীজ এবং পানির অপচয় কম হয়। আধুনিক এ পদ্ধতিতে এক চাষেই জমি তৈরি, সার দেয়া, বীজ বপন, মই দেয়া ও বেড তৈরির কাজ হয়। সার-বীজও সঠিক গভীরতায় পড়ে। ফলে বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আমরা প্রশিক্ষণে যা শিখলাম তা কাজে লাগাবো।

নিয়ামতপুর উপজেলার কৃষক আব্দুল মালেক বলেন, এই পদ্ধতিতে গাছের বৃদ্ধি ভালো হয়, গাছ মোটা হয়, সেচও নাকি কম লাগে। এই পদ্ধতিতেই আমি গম ও ভুট্টার আবাদ করতে চাই। 

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ







ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় ৯ জনের মৃত্যু
২১ নভেম্বর ২০২৪ রাত ০৮:০৫:৩৩