নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি: সম্প্রতি ঢাকার নবাবগঞ্জে চোরের উপদ্রব বেড়ে গেছে৷শীতের মৌসুমে গভীর রাতে যখন গ্রামের চারপাশে কুয়াশায় অন্ধকার, ঠিক তখনই এই চক্রটির টার্গেট থাকে চুরি করার। এসব চুরি ছিনতাই কমিয়ে আনতে নবাবগঞ্জের প্রধান সড়কগুলোর পাশাপাশি গ্রামগুলোতেও পুলিশ টহলের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা৷
শেখ মহিউদ্দিন। বাড়ি নবাবগঞ্জের শোল্লা ইউনিয়নের দক্ষিণ শোল্লা গ্রামে। পেশায় একজন রিকশা চালক৷অভাবের সংসার তাই রিকশা চালনোর পাশাপাশি বাড়িতে গরু লালনপালন করেন৷ ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ও কিছু টাকা জমিয়ে ছোট তিনটি গরু কিনেছিলেন৷ কয়েকবছর লালনপালনের পর গরু তিনটি বড় হয়। কিন্তু চোরের জন্য মহিউদ্দিনের ভাগ্য হলো না গরু বিক্রি করে লাভের মুখ দেখতে৷
৮ জানুয়ারি সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে মহিউদ্দিনের গরুর ঘরের তালা কেটে তিনটি গরু চুরি হয়ে যায়৷ যার বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা৷ সকালবেলা গরু বের করতে গিয়ে দেখতে পান, দরজার তালা কাটা গরু নিয়ে গেছে চোর চক্র৷কয়েকমাস আগেও তার আরও একটি গরু চুরি হয়েছিল।
মহিউদ্দিন জানান, চুরি যাওয়া ৩টা গরুর বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা৷চোরে তিনটি গরু নিয়ে যাওয়ায় তার আর কিছুই রইল না। সর্বহারা হয়ে গেছেন তিনি।
মহিউদ্দিনের স্ত্রী আন্না বেগম বলেন, গরুগুলো ট্রাক করে নেওয়া হয়েছে। সকালে উঠে দেখি ঘরের পেছনে পাকা সড়কে গরুর গোবর ও গাড়ির চাকার চিহ্ন রয়েছে। এই এলাকায় প্রায়ই এমন চুরির ঘটনা ঘটে৷পুলিশের বিশেষ টহলের ব্যবস্থা না করলে আমাদের জীবনের ঝুঁকি থাকবে।
ওই এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, রাতে যদি নবাবগঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশের বিশেষ চেকপোস্ট বা টহল থাকতো তাহলে গভীররাতে ট্রাক যাতায়াত করলে অবশ্যই পুলিশের জালে চোর চক্র আটক হতো৷তাই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের দাবি, এখানে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার৷
একই রাতে মহিউদ্দিনের পাশের পাতিলঝাপ গ্রামের চঞ্চল শেখের বাড়ির বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দিয়ে সেই বাড়ি থেকেও ৩টি গরু চুরি হয়েছে৷
বাড়ির লোকজন টের পেয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করলে বাইরে থেকে তালা লাগানো থাকায় বের হতে পারেননি৷পরে চিৎকার দিলে মসজিদের মাইকে মাইকিং করার পর চোর দুটি গরু রেখে একটি গরু ট্রাকে তুলে নিয়ে যায়৷ অনেক চেষ্টা করেও ট্রাকটি ধরতে পারেননি তারা৷
ওই রাতে পাশের বাশনল গ্রামের এক কৃষকের বাড়ি থেকেও ৩টি গরু চুরি হয় বলে জানান স্থানীয়রা৷সেখানেও ট্রাক যাতায়াতের শব্দ পেয়েছিল এলাকার মানুষ।
এ প্রসঙ্গে নবাবগঞ্জ থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুনুর রশিদ এশিয়ান টিভি অনলাইনকে মুঠোফোনে বলেন, গরু চুরির বিষয়টি আমি শুনেছি৷আমি থানায় নতুন এসেছি৷ নির্বাচনের কাজে থানা পুলিশ সদস্যরা বেশ কয়েকদিন ব্যস্ত ছিল৷ এখন থেকে নবাবগঞ্জে পুলিশের টহল বাড়িয়ে দেওয়া হবে৷
এ বিষয়ে দোহার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আশরাফুল আলম এশিয়ান টিভি অনলাইনকে বলেন, গরু চুরি হওয়ার বিষয়টি আমি শুনিনি। তবে চুরি ছিনতাই প্রতিরোধে সবসময় কাজ করছে পুলিশ। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ টহলের ব্যবস্থা করা হবে৷
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available