তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি: বাংলাদেশ ডাক বিভাগের রাজশাহীর তানোর ডিজিটাল পোস্ট অফিস থেকে গ্রাহকের প্রায় কোটি টাকা গায়েব ঘটনায় তদন্তে নেমেছে রাজশাহীর ডাক বিভাগের কর্মকর্তারা। টাকা গায়েবের ঘটনার বিষয়ে সত্যতা পাওয়ায় তানোর ডিজিটাল পোস্ট অফিস পোস্ট মাস্টার মকছেদ আলীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে রাজশাহীর ডাক বিভাগের পরিদর্শক মজিবুর রহমান বাদি হয়ে তানোর পোস্ট মাস্টার মকছেদ আলীকে অভিযুক্ত করে তানোর থানায় জিডি করেন।
১৮ মার্চ সোমবার সকালে রাজশাহী ডাক বিভাগের ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি তদন্ত টিম তানোর পোস্ট অফিসে উপস্থিত হয়ে গ্রাহকদের কাগজপত্র দেখা শুরু করেন।
এ সময় একের পর এক গ্রাহকরা পোস্ট অফিসে উপস্থিত হন। তারা অফিসের মধ্যে হৈচৈ শুরু করেন। ডেপুটি জেনারেল কর্মকর্তা গ্রাহকদের শান্ত করে তাদের কথা শুনেন এবং আশ্বস্ত করেন তাদের কষ্টের অর্জিত টাকা ফিরিয়ে দেবার জোর চেষ্টা করবেন তিনি।
তানোর উপজেলার কামারগাঁ বারঘরিয়া গ্রামের ভুক্তভোগী গ্রাহক জয়নাল আবেদীন বলেন, আমি ২০২১ সালে বাংলাদেশ পোষ্ট অফিস সঞ্চয় ব্যাংক তানোর পোস্ট অফিসে মেয়াদী আমানত হিসাবে এফডিএ করি ৬ লাখ টাকা রাখি। পরে ২০২২ সালে আবারও ৪ লাখ টাকা এফডিএ করি। প্রথম বারের ৬ লাখ টাকার সরকারী খাতাসহ পাশ বহিতে আছে। কিন্তু পরে ৪ লাখ টাকা আমার পাশ বহিতে হাতে লেখে তুলে দিয়েছে কিন্তু সরকারী রেজিস্ট্রি খাতায় কোন লেখা নেই। ৪ লাখের কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।
অপরদিকে একই ঘটনা ঘটে অরুপ কুমার নামে আরেক গ্রাহকের ৫ লাখ ৩৮ হাজার টাকা, পুস্প রানী ৫ লাখ টাকা, সাবিয়া খাতুনের ৪ লাখ টাকা, কৃষ্ণ রানীর ৫ লাখ টাকা, রাশেদুল ৩ লাখ টাকা, পার্থ দাসের ১ লাখ টাকা, আঙ্গুরা খাতুনের ৫ লাখ টাকা, রেজিয়া খাতুনের ৫ লাখ টাকাসহ আরো অনেক গ্রাহকের প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তানোর পোস্ট অফিসের মাস্টা মকছেদ আলী।
গতকাল তদন্ত কমিটি গ্রাহকদের পাশ বহি সংগ্রহ করে রিসিভ দেন। টাকা লোপাটের প্রমাণ পেয়েছে কর্মকর্তারা। তদন্তের সার্থে অনেক কিছু গোপন রাখছেন কর্তৃপক্ষ। তদন্ত কমিটি গতকাল পর্যন্ত গ্রাহকদের দেয়া তথ্য মতে সব মিলিয়ে ৫০ লাখ টাকার বেশি টাকা লোপাটের প্রমাণ পেয়েছেন।
তানোর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে গ্রাহকরা তাদের নিজ নিজ পাস বই এনে পোস্ট অফিসে মিলিয়ে নিবেন। তবে টাকার অংক আরও বাড়বে বলে ধারণা করছে তদন্ত কমিটি।
এ বিষয়ে রাজশাহী ডাক বিভাগের ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল মনিরুজ্জামান বলেন, তানোর ডিজিটাল পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার মকছেদ আলীকে সাময়িকভাবে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাকে অফিসে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি অফিসের উপস্থিত ছিলেন না। তার ফোন বন্ধ। আমরা গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে প্রমাণ পেয়িছি, গ্রাহকদের লাখ লাখ টাকা নেবার ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। এ যাবৎ ৫০ লাখ টাকা লোপাটের প্রমাণ মিলেছে।
তানোর পোস্ট অফিসে প্রায় ২২০ জন গ্রাহক আছেন। অনেক গ্রাহক বিষয়টি জানেন না। সেজন্য এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। অন্য গ্রাহকরা এলে আরও বেশি টাকার অংক বাড়বে বলে আমরা ধারণা করছি। এ বিষয়ে তানোর থানায় জিডি করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ আইনগত ব্যবস্থা নিবে বলে জানান তিনি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available