স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ থেকে: প্রগতি বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড ও প্রিয়জন সমিতি সংঘ নামের দুটি প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় ইউনিয়নের শত শত গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে প্রগতি বহুমুখী সমবায় সমিতি ও প্রিয়জন সমিতি সংঘ নামের ২টি প্রতিষ্ঠানের মালিক প্রণব হালদার (৪৫)। পাওনা টাকার জন্য গ্রাহকেরা সমিতির বন্ধ কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করছেন।
স্থানীয়রা জানান, কয়েক বছর পূর্বে মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় ইউনিয়নের বানিয়ারচর এলাকার বাসিন্দা প্রণব হালদার বানিয়ারচর বাজারে তার নিজস্ব দোকানে প্রগতি বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড ও প্রিয়জন সমিতি প্রিয়জন সংঘ নামের দুটি প্রতিষ্ঠান খুলে বসেন। এক সময় তিনি ব্র্যাকে কাজ করতেন। মাসিক ৬০০ টাকা করে সঞ্চয় করলে ২ বছর শেষে অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে হাজার হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে প্রণব হালদার কোটি কোটি কোটি টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেন। সেই টাকা আত্মসাৎ করে ৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার দিনগত গভীর রাতে কার্যালয়ে তালা দিয়ে পালিয়ে যান প্রতারক প্রণব হালদার। সকালে গ্রাহকরা পাওনা টাকা নিতে এবং সঞ্চয় জমা দিতে এসে কার্যালয় বন্ধ দেখতে পান। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শত শত নারী, পুরুষ গ্রাহক এসে ভিড় করেন বন্ধ কার্যালয়ের সামনে। এক পর্যায়ে তারা বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় কেউ কেউ কান্নায় ভেঙে পড়েন।
হিরন্ময় নামে এক গ্রাহক বলেন, এখানে আমি, মেয়ে, ছেলে, ছেলের বউ, মেয়ে জামাই, নাতিসহ পরিবারের সদস্যরা টাকা জমিয়েছি। কিন্তু শনিবার সকালে এসে দেখি, কার্যালয়ে তালা ঝুলছে। আমাদের পরিবারের প্রায় ৩০ লাখ টাকা জমা ছিল।
প্রেমানন্দ হালদার বলেন, এই কোম্পানিতে আমার ৪৫ লাক্ষ টাকা জমিয়েছি। সারা জীবনের সঞ্চয় খেয়ে না খেয়ে এখানে জমা করেছি। আমার কষ্টের টাকা নিয়ে ওরা পালিয়েছে।
বিধান ভক্ত বলেন, আমার জমানো ১৪ লক্ষ টাকা এভাবে বিলীন হয়ে যাবে? আমি রাষ্ট্রের কাছে টাকা ফেরত চাই এবং প্রণবের শাস্তি চাই।
বাবু গাইন সাংবাদিকদের জানান, লাভের আশায় ১০ লক্ষ টাকা প্রণব হালদারের সমিতিতে জমা রেখেছিলাম। প্রণব আমার টাকাগুলো এভাবে মেরে দেবে? আমি আমার টাকা ফেরত চাই এবং প্রণবের বিচার চাই।
মার্থা সাহা নামে এক নারী চা বিক্রেতা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার চা বিক্রির আর আমার প্রতিবন্ধী মেয়ের ভাতার টাকা প্রগতি সমিতিতে জমিয়েছি। আমার প্রায় ২ লাখ টাকা পাওনা। ১০ সেপ্টেম্বর রোববার লাভসহ পাওনা দেওয়ার কথাছিলো। এসে দেখি কার্যালয় তালাবদ্ধ। পরে জানতে পারি, শনিবার গভীর রাতে প্রতিষ্ঠানের মালিক প্রণব হালদার আমাদের টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে।
গোপালগঞ্জ জেলা সমবায় অফিসার মো. নবীউল ইসলাম বলেন, এ ঘটনা আমার জানা ছিল না। আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available