নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা নির্বাচন অফিস। টাকায় যেখানে সবকিছু। টাকা দিলে দশ দিনের কাজও নাকি এখানে একদিনে হয়ে যায়। আবার যারা টাকা দিচ্ছেন না তাদের দিনের পর দিন ঘুরেও মেলে না এনআইডি কার্ড সংশ্লিষ্ট সমাধান। এমনটাই অভিযোগ শিবপুরের সাধারণ জনগণের।
তবে এসকল অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফারিজা নূর। সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ দাবি করেন। অবশ্য এ প্রসঙ্গে তিনি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি।
সম্প্রতি সৌদিআরব প্রবাসী স্থানীয় কাজল মিয়ার একটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হলে বিষয়টি নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। বক্তব্যে কাজল মিয়া বলেন, ‘আমি আজকে ছয় মাস যাবৎ ঘুরতেছি এনআইডি সংশোধনের জন্য। সেজন্য আমি সৌদি আরব থেকে এসেছি। আজ না কাল একসপ্তাহ পর, আবার এখন বলে এক মাস পর আসতে। পদে পদে আমাকে তারা হয়রানি করছে।’
আরিফুল ইসলাম নামে একজন সে পোস্টে কমেন্ট করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘কথা ১০০% সত্য। এই অফিসের সবাই ঘুষখোর। আমি এক বছর ঘুরে, লাস্টে টাকা দিয়ে ঠিক করিয়েছি। টাকা দেওয়ার ৭ দিনের মধ্যে কাজ হয়ে গেছে। আগে যে এক বছর ঘুরলাম তা সব বিফলে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, ‘কর্মকর্তা তো আর নিজে টাকা নেয় না। অফিসের বিভিন্ন স্টাফকে দিয়ে তারা টাকাগুলো নেয়। তারা এমনভাবে আপনাকে হয়রানি করবে যে আপনি নিজে থেকেই তাদের টাকা অফার করবেন। কারণ, প্রয়োজনটা তো আপনার!’
এ ব্যাপারে ক্যামেরার সামনে কথা বলার অনুমতি নেই জানিয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফারিজা নূর সাংবাদিকদের বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে ওই ব্যক্তিটির আসলে দুটি জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে দেওয়া। আমরা ওনাকে বলেছি আপনি যেকোনো একটি রেখে অন্যটি কেটে দিলে আমরা আপনার সমস্যাটির সমাধান করে দিতে পারবো। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি এ কাজটি করেছেন। বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রবিউল আলম স্যারকেও অবগত করেছি।’
তবে কি এখানে সঠিক নিয়ম মেনে কোনো ধরনের হয়রানি কিংবা টাকা লেনদেন ছাড়াই সকল কাজ হয়ে থাকে? সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখন কেউ যদি বাইরে কিংবা আমার প্রতিষ্ঠানের কোনো স্টাফকে টাকা দিয়ে আমার কাছে আসে আর আমি যদি তার কাগজপত্র সঠিক পেয়ে কাজটা করে দিই সেখানে আমার কী করার আছে! তবুও আমি আমার সকল স্টাফদের একাধিকবার সাবধান করে দিয়েছি। আমার বিশ্বাস তারা এসবের সাথে জরিত না। তবুও টাকা দিয়ে কাজ হয়, এমন যদি কোন প্রমাণ বা ভিডিও আপনারা আমাকে দেখাতে পারেন আমি সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
তিনি আরও বলেন, সবসময় আমার অফিসে আসা কিংবা বের হওয়ার ক্ষেত্রে সময় মেইনটেইন করা সম্ভব হয় না। অনেক সময় আমি অফিস টাইমের কিছু সময় পর অফিসে আসি। আবার অফিস টাইম শেষ হওয়ার আগে অফিস থেকে চলে যাই। কিন্তু কোনো কোনো সময় আবার আমি অফিস টাইম শেষ হওয়ার পরও কাজ শেষ করে বাসায় যাই। আর জনগণের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের ব্যাপারটা অনেক সময় হয়ে যায়। অনেক সময় তারাও আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করে থাকে।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available