আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আটলান্টিক মহাসাগরে উদ্ভূত ঘূর্ণিঝড় হেলেনের আঘাতের পর যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় ৬ অঙ্গরাজ্যে অন্তত ১০০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ওয়াশিংটনের বলছে, এ পর্যন্ত ৬০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ৩০ সেপ্টেম্বর সোমবার হোয়াইট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা লিজ শেরউড-র্যান্ডওয়েল।
লিজ শেরউড-র্যান্ডওয়েল জানান, দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের উদ্ধারকর্মীরা এ পর্যন্ত উত্তর ক্যারোলাইনা থেকে ৩৯ জন, দক্ষিণ ক্যারোলাইনা থেকে ২৫ জন, জর্জিা থেকে ১৭ জন, ফ্লোরিডা থেকে ১৪ জন, টেনেসি থেকে ৪ জন এবং ভার্জিনিয়া থেকে ১ জনের মরদেহ উদ্ধোর করেছেন। তবে, এই ঝড়ে মৃতের প্রকৃত সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়েছে, সংবাদ সম্মেলনে বলেন র্যান্ডওয়েল।
একই দিন পৃথক এক অনুষ্ঠানে ঘূর্ণিঝড় হেলনকে ‘ভয়াবহ বিধ্বংসী’ উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, আমার জীবনে আমি এমন বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় খুব কম দেখেছি। নিখোঁজদের অনুসন্ধান এবং উপদ্রুতদের মধ্যে ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থাও স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমরা সর্বাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছি।
এই সপ্তাহ শেষ হওয়ার আগেই হেলেনের শিকার ৬ অঙ্গরাজ্য সফরে যাবেন বলে ঘোষণা করেছেন বাইডেন। নর্থ ক্যারোলাইনা দিয়ে শুরু হবে সেই সফর। ঝড়ে এই রাজ্যটিতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে ফ্লোরিডার বিগ ব্যান্ড শহরের উপকূলে আছড়ে পড়ে হেলেন। এ সময় ওই এলাকায় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৪০ মাইল। বিধ্বংসী গতির এই ঝড়ের কারণে বিগ ব্যান্ড এবং তার আশপাশের এলাকার অজস্র গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গেছে, অনেক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, রাস্তা-ঘাট ডুবে গেছে।
বিগ ব্যান্ডে আছড়ে পড়ার পর জর্জিয়া, টেনেসি, উত্তর ক্যারোলাইনা এবং দক্ষিণ ক্যারোলাইনার দিকে এগোতে হতে থাকে হেলেন। এ সময় কমতে থাকে ঝড়ের গতিবেগও। শুক্রবার বিকেলের দিকে সাধারণ মৌসুমি ঝড়ে পরিণত হয় হেলেন, ঘণ্টায় ৫৫ থেকে ৩৫ কিলোমিটারে নেমে আসে বাতাসের গতিবেগ।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তর ফেডারেল ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির (ফেমা) তথ্য অনুযায়ী, বিগ ব্যান্ডে আছড়ে পরার পরবর্তী ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত নিজের শক্তি ধরে রাখতে পেরেছিল হেলেন। পরে ধীরে ধীরে এটি সাধারণ মৌসুমি ঝড়ে পরিণত হয়।
মার্কিন আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এ পর্যন্ত যত ঘূর্ণিঝড়র আঘাত করেছে, সেগুলোর মধ্যে বিধ্বংসী ক্ষমতার নিরিখে হেলেনের অবস্থান ১৪ তম এবং প্রশস্ততা বা বেড়ের দিক থেকে তৃতীয়। ফ্লোরিয়ায় আছড়ে পড়ার সময় এই ঝড়টির বেড় ছিল ৬৭৫ কিলোমিটার।
কয়েক দিনে বেশিরভাগ এলাকার আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে, বন্যার পানিও নেমে গেছে। কিন্তু এখনও সড়ক ও টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়নি। তবে ক্ষতিগ্রস্ত সব এলাকায় উদ্ধারকর্মীদের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available