খোকসা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগ তুলে কুষ্টিয়া সদর থানায় জমা দেওয়া কথিত এক এজাহার ঘিরে খোকসায় চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীদের ভাষ্য, ওই এজাহারে ৫২ জনের নাম রয়েছে জানিয়ে একটি চক্র বিএনপির নাম ভাঙিয়ে প্রচার করছে।
মামলার এজাহার থেকে তারা নাম বাদ দেওয়ার নামে চাঁদা আদায় করছে। যদিও উপজেলা বিএনপির এক শীর্ষ নেতা বিষয়টিকে প্রতারণা উল্লেখ করে তাঁর ফেসবুক প্রোফাইল থেকে পোস্ট দেন। তিনি এ চক্রের সদস্যদের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন।
১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার থেকে ওই এজাহারের কপি ছড়িয়ে দেয় চক্রটি। বর্তমানে খোকসার অনেক মানুষের মোবাইল ফোনে ঘুরছে সেটি। এজাহারে যে ৫২ জনের নাম রয়েছে, তাদের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা, হিন্দু ব্যবসায়ী, বিএনপি পরিবারের সদস্য, চাকরিজীবী ও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত ব্যক্তিরা রয়েছেন।
ভুক্তভোগী একাধিক ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর খোকসায় পুলিশি কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে বিএনপির নাম ব্যবহার করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র হামলা-মামলার ভয় দেখিয়ে নীরব চাঁদাবাজি করছে। বৃহস্পতিবার নতুন করে যুক্ত হয়েছে জ্বর-আতঙ্ক। চক্রের ভদ্রবেশী সদস্যরা মোবাইল ফোনে কাছে ডেকে এজাহারের কপিতে থাকা নাম দেখিয়ে ভয় দেখাচ্ছে। নাম বাদ দেওয়ার নাম করে তারা নানা অঙ্কের টাকা দাবি করছে। অনেকেই ভয়ে টাকা দিচ্ছেন। যারা দিতে রাজি হচ্ছে না, তাদের দেখানো হচ্ছে ভয়ভীতি।
খোকসা পৌর বাজারের ব্যবসায়ী গোলাম ছরোয়ার। বাড়ি উপজেলার মাঠপাড়া এলাকায়। তার ছেলে বর্ষণের (২৯) নাম রয়েছে এজাহারের ১৯ নম্বরে। গোলাম ছরোয়ারের অভিযোগ, স্থানীয় বিএনপির প্রভাবশালীর এক নেতার নিকটাত্মীয় ওই এজাহার থেকে ছেলের নাম বাদ দেওয়ার নাম করে ৫ হাজার টাকা দাবি করেন। গোলাম ছরোয়ার জানান, 'আমি বিএনপি পরিবারের ছেলে। দলের স্থানীয় নেতাদের বিষয়টি জানিয়েছি।
উপজেলা শিমুলিয়া ইউনিয়নের সিংঘড়িয়া গ্রামের নগেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের ছেলে সুভাষ বিশ্বাস। ওই এজাহারের ২৬ নম্বরে নাম রয়েছে তাঁর। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি তার সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি জানিয়েছেন।
খোকসা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাফিজ আহাম্মেদ রাজু কথিত এজাহারের বিষয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে জনসাধারণকে ওই চক্র সম্পর্কে সতর্ক থাকতে বলেছেন। একই সঙ্গে কেউ 'চাঁদার ধান্দা করলে' তাকে আইনে সোপর্দ করার আহ্বান জানান।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ আমজাদ আলির মোবাইল ফোনে বলেন, এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত তিনি কিছু জানেন না। তিনি বিস্তারিত জেনে এ বিষয়ে জানাবেন। এমন কেউ করে থাকলে এটা অপরাধ, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এজাহারটির সত্যতা যাচাইয়ে সহায়তা নেওয়া হয় খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আননুর যায়েদ বলেন, কথিত এজাহারে এসবের অস্তিত্ব নেই। এটা হয়রানি বা অসৎ উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি চক্রটিতে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করবেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available