ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: এক লাখ টাকা চাঁদা চাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভৈরবের বেসরকারি ৩৪টি ক্লিনিক ও হাসপাতালে তিনদিন ধরে ঔষধ সরবরাহ বন্ধ রেখেছেন বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা।
ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সংগঠন ফারিয়ার ভৈরব শাখার সভাপতি মুন্সি পায়েল ১ এপ্রিল সোমবার দুপুরে স্থানীয় টেলিভিশন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন অফিসে এসে সাংবাদিকদের জানান, ‘হাসপাতাল মালিকদের সংগঠন ভৈরব ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনিস্ট ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোশারফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ডা. মিজানুর রহমানসহ সংগঠনের নেতারা তাদের অনুষ্ঠানের জন্য এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদার টাকা দিতে না পারায় তারা চারটি ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিকে হাসপাতালে নিষিদ্ধ ঘোষণার নোটিশ দিয়েছেন। এ কারণে আমরা ভৈরবের সকল বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে ঔষধ সরবরাহ বন্ধ রেখেছি।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ফারিয়ার ভৈরব শাখার সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম, এসকেএফ ফার্মার আব্বাছ আলী, এসিআই কোং শাহজাহান বেপারি, জেনারেল ফার্মাসিটিক্যাল কোং মো. ইসহাক, এশিয়াটিক কোং এর মফিজ উদ্দিন, সোসাটেক ফার্মাসিটিক্যাল কোং এর উজ্জল কুমার পাল, ইনসেপ্টা কোং এর মো. সায়েম প্রমুখ।
ফারিয়ার ভৈরব শাখার সভাপতি মুন্সি পায়েল অভিযোগ করে বলেন, ‘হাসপাতাল মালিকদের সংগঠনের নতুন কমিটি গঠন অনুষ্ঠানের জন্য তারা গত তিনমাস আগে এক লাখ টাকা আমাদের কাছে চাঁদা দাবি করেন। অপরদিকে আমাদের বিভিন্ন কোম্পানির কর্মকর্তাদের কাছে ডা. মিজানুর রহমান ফোন করে ১০/১২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। কোম্পানিগুলি এত পরিমাণ টাকা চাঁদা দিতে রাজি হয়নি। তবে আমরা তাদের দাবির প্রেক্ষিতে ৪০ হাজার টাকা দিতে সম্মত ছিলাম। কিন্তু এর মধ্যেই হঠাৎ করে তারা হাসপাতালগুলিতে নোটিশ দিয়ে চারটি কোম্পানির প্রতিনিধিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলে আমরা গত শনিবার থেকে হাসপাতালে ঔষধ সরবরাহ বন্ধ রাখি। তবে সরকারি হাসপাতালে ও ফার্মেসিতে ঔষধ সরবরাহ দিয়ে যাচ্ছে কোং প্রতিনিধিরা।’
তিনি আরও জানান, ‘নোটিশ দেয়ার পর হাসপাতাল মালিকরা আমাদের পাওনা প্রায় ৪ কোটি টাকা পরিশোধ করছেন না। সামনে ঈদ, পাওনা টাকা না দিলে কর্মচারীরা বেতন বোনাস পাবে না।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘ডা. মিজানুর রহমান অনেককে হুমকি ধমকি দিচ্ছেন। আমাদের প্রতিনিধিগণ এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এছাড়া তার ম্যানেজার জাভেদ ও ইউনাইটেড হাসপাতালের এমডি সুমন তাদের হুমকি দিয়েছে, হাসপাতাল থেকে প্রতিনিধিদের বের করে দিয়েছে।’
তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত ফারিয়ার প্রতিনিধিরা বেসরকারি হাসপাতালে ঔষধ সরবরাহ করবেন না বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে হাসপাতাল মালিক সমিতির সভাপতি মোশারফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ডা. মিজানুর রহমান জানান, ফারিয়ার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সকল অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট, কাল্পনিক। তবে তারা কথা ঘুরিয়ে অনুদান দাবির কথা স্বীকার করেছেন। তারা বলেন, হাসপাতাল, ক্লিনিকে ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা সবসময় উপস্থিত থেকে ডাক্তারদের প্রেস্কিপশনের ছবি তোলা, অর্ডার নেয়া, আর্থিক লেনদেন করে বিরক্ত ও জ্বালাতন করেন। এ কারণে চারটি কোম্পানির প্রতিনিধিকে নিষিদ্ধ করায় ফারিয়ার সভাপতি ক্ষিপ্ত হয়ে এ অভিযোগ করেছেন বলে তাদের দাবি। ঔষধের পাওনা টাকা পরিশোধ না করা বিষয়টিও তারা অস্বীকার করেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available