বাকৃবি প্রতিনিধি: কৃষক ও কৃষাণীদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, চিনাবাদাম শুধু চাষাবাদের জন্যই নয় বরং মাটির গুণাগুণ বৃদ্ধিতেও দারুণ সাহায্য করে। একটি পতিত জমিতে যেখানে কোনো ফসল চাষ করা যায় না সেখানে টানা তিন বছর চিনাবাদাম চাষ করলে পরবর্তীতে ধানসহ অন্যান্য ফসল চাষ করা যাবে।
ময়মনসিংহ জেলায় বিনা উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্প জীবনকালীন বিনা চিনা বাদামের জাতসমূহের পরিচিতি ও চাষাবাদ কৌশল শীর্ষক দিনব্যাপী কৃষক ও কৃষাণী প্রশিক্ষণ কর্মশালার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিনার মহাপরিচালক বলেন, চিনাবাদাম ফসলটি শরীরের জন্যেও খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে বাজে কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। হৃদপিণ্ডের সুস্থতা ও হৃদরোগ কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে এই ফসলটি। এটি চাষাবাদ করাও বেশ লাভজনক। বৈজ্ঞানিক উপায়ে চাষাবাদ করলে হেক্টর প্রতি ফলন আরো বৃদ্ধি পাবে এবং কৃষকরা মূলত বেশি লাভবান হবেন। তবে এ ফসলের বীজ সাধারণ উপায়ে বেশিদিন সংরক্ষণ করা যায় না। তাই আমি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগকে অনুরোধ করবো যেনো কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণে বীজ সরবরাহ করা হয়।
২৩ অক্টোবর বুধবার সকাল ১১ টায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসে অবস্থিত বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) ও কৃষি সম্প্রসারণের অধিদপ্তর এবং বিনা'র গবেষণা কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের আর্থিক সহযোগিতায় ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া অডিটোরিয়ামে ওই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। ময়মনসিংহের বিভিন্ন অঞ্চলের ১০০ জন কৃষক এই কর্মশালায় অংশ নেন।
বিনার গবেষণা শাখার পরিচালক ড. মো. ইকরাম উল হকের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিনার মহাপরিচালক ড. মো. আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিএই- ময়মনসিংহ অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ সালমা আক্তার, ফলিত গবেষণা ও সম্প্রসারণ বিভাগের প্রধান ও পিএসও ড. শামীমা বেগম। স্বাগত বক্তব্য দেন মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের পিএসও ড. মো. মাহবুবুল আলম তরফদার।
প্রশিক্ষণে চিনাবাদামের উন্নত জাতসমূহ এবং আধুনিক চাষাবাদ কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়াও, চিনাবাদাম চাষে সঠিক মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনা, বীজ বপনের সঠিক সময়, রোগ নিয়ন্ত্রণ, পরিচর্যা এবং সারের ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত নির্দেশনা প্রদান করা হয়। বলা হয়, বিনা উদ্ভাবিত ৭ টি চিনাবাদামের জাত রয়েছে, যার মধ্যে বিনাচিনাবাদাম-৪ এবং ১০ উচ্চফলনশীল এবং স্বল্প জীবনকালের। বাকি জাতগুলো লবণাক্ততা সহিষ্ণু। বিনাচিনাবাদাম-৪ এর গড় ফলন হেক্টরে ২.৬ টন এবং বিনাচিনাবাদাম-১০ এর ফলন হেক্টরে ২.৮ টন। বিনাচিনাবাদাম-৪ এর রবি মৌসুমে জীবনকাল ১৪০-১৪৫ দিন এবং খরিফ মৌসুমে ১০০-১২০ দিন। আবার বিনাচিনাবাদাম-৬ এর রবি মৌসুমে জীবনকাল ১২৫-১৩০ দিন এবং খরিফ মৌসুমে ১১০-১২০ দিন।
কৃষিবিদ সালমা আক্তার কৃষকদের উদ্ভাবিত জাতসমূহের সুবিধাসমূহ এবং উচ্চ ফলনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। তেল জাতীয় শস্যের মধ্যে বর্তমানে চীনাবাদাম চাষের গুরুত্ব বাড়ছে বলেও জানান তিনি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available