রংপুর ব্যুরো: রংপুরের পীরগাছা জাল দলিল করে জমি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মোবারক মিয়া নামে এক উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের প্রধান সহকারীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত মোবারক মিয়া উপজেলার অনন্দানগর রাজ বল্লভ এলাকার মৃত ফুলবাবুর ছেলে।
মজিবর রহমান ও মোবারক মিয়া আপন দুই ভাই। মোবারক মিয়া উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে সরকারি চাকরি করতেন। তার ভাই মজিবর রহমান কৃষি কাজ করতেন। মজিবর রহমান তার ভাগের সম্পত্তি ছেলে ও মেয়েদের লিখে দেন। মজিবর রহমানের মেয়ের জামাই প্রতিবন্ধী সুমন মিয়া তার শ্বশুরের কাছ থেকে স্ত্রীর ভাগে পাওয়া জমিতে থাকেন। কিন্তু এখন তার চাচা শ্বশুর মোবারক মিয়া ও তার ছেলেরা সুমন মিয়াকে তাদের জমি থেকে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন।
৩০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে গেলে ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী সুমন মিয়ার ভাই, ভাতিজা ও পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, মোবারক মিয়া উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে প্রধান সহকারী পদে দীর্ঘদিন চাকরি করেছেন। জমিজমা ও দলিলপত্র সম্পর্কে তার ছিল অঘাত জ্ঞান। পরিবারে সকলের বড় হওয়ায় তার কাছেই ছিল বাড়ির সকল সম্পত্তির কাগজপত্র। সকলের বিশ্বাস ছিল মোবারক মিয়ার উপর। তার কাছে কাগজপত্র থাকা এবং জমিজমা সম্পর্কে ভালো জানার কারণেই তিনি কৌশলে ভাই-বোনদের ঠকিয়ে বাবার নামে থাকা জমিগুলো ভুয়া দলিল বানিয়ে লিখে নিয়েছেন। এমনকি ছোট ভাইদের স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া দলিল তৈরি করে জমিগুলো জোর করে দখলে রেখেছেন।
পরিবারের সদস্যরা আরও জানান, মোবারক মিয়ার কাছে জমির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো কাগজপত্র বা কোনো তথ্য না দিয়ে জানান, আপনাদের জমি পেতে হলে কাগজপত্র খুঁজে বের করে কোর্টে গিয়ে মামলা করে নেন।
এ বিষয়ে মোবারক মিয়ার ছেলে বাতেন মিয়া বলেন, আমার বাবা চাকরি করেছেন রেজিস্ট্রি অফিসে। বর্তমানে তিনি রিটায়ার্ড করেছেন। আমার বাবা কারো কোনো জমি আত্মসাত করেননি। বরং আমার চাচারাই বেশি করে বিক্রি করে খেয়ে এখন আমাদের প্রতি মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন।
এলাকাবাসী জানায়, মজিবর রহমান ও মোবারক মিয়া আপন দুই ভাই। মোবারক মিয়া উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে সরকারি চাকরি করতেন। তার ভাই মজিবর রহমান কৃষি কাজ করতেন। অভাব অনটনের কারণে কিছু জমি বিক্রি করেছেন। আর বাকি জমি মোবারক মিয়া জোর করে ভোগ দখল করছেন। এখন আমরা শুনতেছি, মজিবরের কোনো জমি আর নেই। মাঝে মধ্যে মোবারক মিয়ার ছেলেরা এসে বাড়িঘর ভেঙ্গে নিয়ে যেতে বলে।
দুঃখ আর দুর্দশার হাত থেকে বাঁচতে চায় মজিবরের পরিবার, কয়েক বার বিচার শালিশ করা হলেও মানতে রাজি হয়নি মোবারক মিয়ার ছেলেরা, প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবন্ধী ও তার পরিবারের পক্ষে কথা বলার কেউ না থাকায় থানায় অভিযোগ করা হলেও ন্যায় বিচার পায়নি প্রতিবন্ধীর সুমনের পরিবার।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মাছিমুর রহমান বলেন, আমাদের কাছে এধরনের একটি অভিযোগ এসেছে, দুই পরিবারকে ডেকে একবার বসিয়ে সমাধান করা হয়েছে। পরে আবারও আমরা শুনতে পারলাম, বাকি জমির কাগজপত্র জাল ছিলো বলে অভিযোগ করছে।
বিষয়টি তদন্ত করে দেখার কথায়ও জানান তিনি।
এদিকে সুষ্ঠু সমাধান করা না হলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান ভুক্তভোগীর পরিবার।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available