হাবিবুর রহমান, মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: জেলার মধুপুর গড়ের আনারস জিআই সনদ পাওয়ার পর এখন দাবি উঠেছে এ স্বীকৃতির মান অক্ষুণ্ণ রাখার। ভৌগোলিক নির্দেশক স্বীকৃতির সুসংবাদটি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে সচেতন মহল মনে করছেন, আনারসের ঐতিহ্য ও স্বীকৃতির মান বজায় রাখা এখন সময়ের দাবি। একই সঙ্গে কৃষকদের ন্যায্য দাম প্রাপ্তিতে বাড়াতে হবে রসালো ফলটির বহুমুখী ব্যবহার।
প্রক্রিয়াজাতকরণের পাশাপাশি শিল্প কারখানা গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে আনারসের বাণিজ্যিক মার্কেট তৈরি করতে পারলে লাভবান হবে কৃষক, দেশ পাবে বৈদেশিক মুদ্রা, বাড়বে কর্মসংস্থান।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জুস, জেলি, বিস্কুটসহ নানা পণ্য তৈরির অপার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও মধুপুরে আনারসকেন্দ্রিক শিল্প কারখানা, প্রক্রিয়াজাত সেন্টার না থাকায় চাষিরা অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যেতে পারেননি। বিভিন্ন খাতে খরচের হিসাব বাদ দিলে কৃষকের লাভের অংকটা থাকছে খুবই কম।
অন্যদিকে আনারসের অঞ্চল হিসেবে বিভিন্ন সার-কীটনাশক কোম্পানি কোটি কোটি টাকার বিপণন করছে প্রতিবছর। এর মাধ্যমে লাভের অংকটা যাচ্ছে কোম্পানির পকেটে।
কৃষকরা কৃষি উপকরণের ব্যবহারবিধি না জানায় মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে খরচ দ্বিগুণ হচ্ছে। অপর দিকে ফলটাও নিরাপদ মনে করছে না ভোক্তা পর্যায়ে। অথচ, ভোক্তা পর্যায়ে যখন নিরাপদ মনে করবে তখন আনারসের দাম বাড়তে থাকবে। পাশাপাশি জিআই পণ্য হিসেবে প্রাপ্ত স্বীকৃতির কারণে দেশ ও বিদেশে চাহিদাও বাড়বে।
গোলাবাড়ি ইউনিয়ন কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রোকুনুজ্জামান রনজু বলেন, আনারসের জিআই পণ্যের স্বীকৃতির মর্যাদা ধরে রাখতে হবে। সকল প্রকার ক্যামিকেলমুক্ত করার উদ্যোগ নেবার এখনই সময়। তার মতে, আনারসকেন্দ্রিক বহুমুখী শিল্প কারখানা তৈরি হলে একদিকে কৃষক লাভবান হবে। অপরদিকে মানুষেরও কর্মসংস্থান হবে।
মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাকুরা নাম্মী বলেন, অত্র এলাকায় প্রচুর পরিমাণে আনারস চাষ হয়, জিআই স্বীকৃতিও পাওয়া গেছে। এতদিন আনারস বিদেশে রপ্তানি করার জন্য যে চেষ্টা হচ্ছিল, এবার সেই সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাবে।
মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জুবায়ের হোসেন বলেন, গত বছর জেলা প্রসাশকের আবেদনের প্রেক্ষিতে মধুপুরের আনারস জিআই সনদ পেয়েছে। এখন জৈবিক উপায়ে চাষাবাদ করে ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আনারসকেন্দ্রিক শিল্প-কারখানা হলে জুস, জেলি, বিস্কুটসহ বিভিন্ন পণ্য তৈরির পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানি করতে পারলে কৃষকরা লাভবান হবেন, দেশ পাবে বৈদেশিক মুদ্রা।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available