রাঙামাটি প্রতিনিধি: রাঙামাটি শহরের রাজপথ দখল করাকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি দুই আঞ্চলিক সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মীর পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় পুরো রাঙামাটি শহরজুড়ে চরম উত্তপ্তময় পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ৬ আগস্ট মঙ্গলবার বেলা দেড়টা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত রাঙামাটি শহরের রাজবাড়ি এলাকায় চলা জেএসএস-ইউপিডিএফের সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনে সেনাবাহিনী।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে সকলের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিতকরণ ও রাজবন্দিদের মুক্তির শহরের রাজবাড়িতে সমাবেশ করার চেষ্টা চালায় প্রসিতপন্থী পার্বত্য চুক্তি বিরোধী সংগঠন ইউপিডিএফ।
সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএসের মূল হেডকোয়ার্টার হিসেবে পরিচিত রাঙামাটি শহরে প্রতিপক্ষ ইউপিডিএফের হাজারো নেতাকর্মীর অংশগ্রহণ মেনে নিতে পারেনি জেএসএস। পানি থেকে রাজবাড়ি সমিল দিয়ে রাস্তায় উঠার সময় জেএসএসের নেতাকর্মীরা প্রতিরোধের চেষ্টা চালালেও বিপুল সংখ্যক ইউপিডিএফ নেতাকর্মীর অগ্রসরে জেএসএস নেতাকর্মীরা পিছু হটে।
এ সময় ইউপিডিএফের লোকজন রাজপথে অবস্থান নিয়ে জেএসএসের শতাধিক লোকজনকে ধাওয়া দেয়। সংঘর্ষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কয়েকশো সদস্য উভয় পক্ষের মাঝখানে অবস্থান নিয়ে উভয়পক্ষকে ঘণ্টাব্যাপী নিভৃত করার চেষ্টা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা উভয়পক্ষকে ধাওয়া দেয়। এ সময় জেএসএস সদস্যরা রাজবাড়ি কল্যাণপুরের দিকে এবং ইউপিডিএফের লোকজন রাজবাড়ি স’মিলের ভেতর দিয়ে বোটে উঠে কাপ্তাই হ্রদ দিয়ে চলে যায়।
এদিকে, রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারূফ আহাম্মেদ জানিয়েছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে এবং আমরা শহরে নিরাপত্তা জোরদার করার পাশাপাশি সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, জেএসএসের কলিজা হলো রাঙামাটি শহর। এই শহরেই সন্তু লারমাসহ সংগঠনটির উচ্চ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের বসবাস। সম্প্রতি রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদেও জেএসএস সমর্থিত প্রার্থী জয়লাভ করায় তাদের আধিপত্য আরও বৃদ্ধি পায়। কোনো প্রকার আগাম খবর ছাড়াই প্রসিত বিকাশ খীসার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফ শতাধিক ইঞ্জিন বোট দিয়ে হাজারো নেতাকর্মী নিয়ে রাঙামাটি শহর দখল করতে আসায় হতভম্ব হয়ে যায় জেএসএস ও প্রশাসন। যেকোনো সময় সংগঠিত হয়ে আবারো জেএসএসের দুর্গে হামলা চালাবে তাদের প্রতিপক্ষ গ্রুপগুলো এমনটি জানা গেছে বিভিন্ন সূত্রে।
সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে পুরো বিশ্বজুড়ে ব্যাপক মিথ্যাচার চালানোয় লিপ্ত পাহাড়ি এই সংগঠনগুলোর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়া থেকে নিভৃত করেছে সেই সেনাবাহিনীর সদস্যরাই এমন মন্তব্য করে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আজ সময়মতো সেনাবাহিনী না আসলে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটতো।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available