কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজারে সদ্য বিদায়ী সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল বলেছেন, কক্সবাজারের প্রধান সমস্যা মাদক চোরাচালান। বর্তমানে কক্সবাজারের আদালতে ১০ হাজারেরও বেশি মাদক মামলা রয়েছে। এছাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো হচ্ছে ক্রিমিনাল তৈরি ও মাদকের কারখানা। রোহিঙ্গাদের মাদক, অস্ত্র ও খুনের মামলার আসামিদের জামিনের জন্য কতিপয় আইনজীবী ও দালাল বছরে কোটি কোটি টাকার লেনদেন করছে। তারা জজ কোর্টে জামিন না পেলে হাইকোর্টে চলে যাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের অপরাধের কারনে কক্সবাজারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। এ ক্যাম্পগুলো এখন ইয়াবা কারবারিদের মুল কেন্দ্র।
১২ আগষ্ট শনিবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সম্মেলন কক্ষে কক্সবাজার নাগরিক ফোরামের আয়োজনে এ বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় বিদায়ী জেলা জজ মো. ইসমাইল বলেন, কক্সবাজারের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে চিহ্নিত সব অপরাধীদের জামিন বন্ধ রাখা হয়েছে, মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য আসামিদের জামিন মঞ্জুর বন্ধ রাখা হয়েছে। মাদক ব্যাবসায়ীদের জরিমানা প্রথা চালু করে তাদের অর্থনৈতিক শাস্তির কারনে সরকারি কোষাগারে লাখ লাখ টাকা জমা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি বলবো দেশে মোট জনসংখ্যার চেয়ে মামলার সংখ্যা অনেক বেশি। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করেও মিথ্যা মামলা ও নাগরিক হয়রানি বাড়ছে। তাই সরকারের শীর্ষমহল ও বিবেকের তাড়নায় চেষ্টা করেছি মামলা জট কমিয়ে সাধারণ মানুষকে আদালত থেকে সহজে বিদায় করতে। বিচারপ্রার্থীকে যেন আদালতের বারান্দায় অযথা ঘুরাঘুরি না করতে হয় সে পদক্ষেপ নিয়েছি। এ কারণে যোগদানের পর থেকে প্রায় ১৫ হাজারেও বেশি ফৌজদারি মামলার নিষ্পত্তি করেছি।
মো. ইসমাইল কক্সবাজারে সাড়ে ৩ বছর দায়িত্ব পালনকালে নানা অভিজ্ঞতা, বিচারাঙ্গনের বিভিন্ন সমস্যা ও সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরে বলেন- দেশে সবচেয়ে হত্যা মামলা বেশি কক্সবাজারে। এরমধ্যে রোহিঙ্গাদের কারণে খুন-খারাবিসহ নানা অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। মেজর অব. সিনহা হত্যা মামলাসহ কক্সবাজারের বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর মামলার নিষ্পত্তির কারনে তার নিরাপত্তাহীনতা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন এ বিচারক। মেজর সিনহা হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি বরখাস্ত ওসি প্রদীপ ও তার সহযোগীরা নানা ষড়যন্ত্রে করেছে বলে জানান তিনি। এছাড়া ওসি প্রদীপের মৃত্যুদন্ড হওয়ায় কক্সবাজারে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড বন্ধ হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
অনুষ্ঠানে তিনি আরও জানান- বর্তমানে আইনজীবীদের অধিকাংশই জামিনের পেছনে দৌড়ায়। তারা মুল মামলা পরিচালনা কিংবা ট্রায়াল শুনানি করেন না। তাদের প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে। নিজের আবেদনের প্রেক্ষিতে বদলির বিষয়টিকে অনেক গণমাধ্যমে এসিড করা হয়েছে বলে প্রচার করায় তিনি অবাক হয়েছেন বলে জানান।
অনুষ্ঠানে জেলার আইনজীবী, গণমাধ্যম কর্মী, বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠন ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available