বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়া শিবগঞ্জ উপজেলার দেউলি ইউনিয়নে ইউএনও’র স্বাক্ষর জাল করে টিসিবির পণ্য বিক্রয়ের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে প্রকৃত কার্ডধারী ব্যক্তিরা পণ্য ক্রয় ও সেবা থেকে হচ্ছে বঞ্চিত, ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি সাধারণ ভোক্তাদের।
সরোজমিনে ও টিসিবির কার্ডধারী ব্যক্তিদের সূত্রে জানা যায়, ২ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল ১০টায় শিবগঞ্জের দেউলি ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষ থেকে ১০৪২ জন কার্ডধারী ভোক্তাদের মাঝে টিসিবির পণ্য বিক্রয় করা হচ্ছিল। সেখানে শুধুমাত্র কার্ডধারী ব্যক্তিদের টিসিবির পণ্য সরবরাহের করার কথা থাকলেও সে নিয়ম মানা হচ্ছে না। এখানেই ক্ষান্ত হয়নি বরং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল (স্ক্যান) করে ও চেয়ারম্যানের ভিজিটিং কার্ড স্লিপ দিয়ে তাদের লোকজনরা পণ্যগুলি উত্তোলন করে।
এমনকি বেশির ভাগ কার্ডে ভোক্তার কোন নাম, ঠিকানা, ছবি বা আইডি কার্ড নং কিছুই ছিল না। চেয়ারম্যানের খেয়াল খুশি মতে দেওয়া হচ্ছে টিসিবির পণ্য।
সংবাদ সংগ্রহকালীন সময়ে ইউপি চেয়ারম্যান বা ট্যাগ অফিসার সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু ডিলার বলছেন, ট্যাগ অফিসার এখানেই ছিলেন। ট্যাগ অফিসারের নাম ও মোবাইল নং জানতে চাইলে দিতে পারেননি ডিলার। এদিকে চেয়ারম্যানের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে ৬নং ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম নিজে দায়িত্ব নিয়ে অনিয়ম করে প্রকৃত কার্ডধারীদের বাদ দিয়ে অন্যদের কাছে টিসিবির পণ্য বিক্রি করছিলেন। ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চেয়ারম্যান আমাকে দায়িত্ব দিয়ে চট্টগ্রাম গিয়েছেন।
এ ব্যাপারে সংবাদকর্মীরা জাহাঙ্গীর মেম্বারের বক্তব্য নিতে চাইলে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি, বরং তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
ওই এলাকার ভোক্তা বেলাল হোসেন বলেন, এককভাবে কাউকে টিসিবির কার্ড দেওয়া হয়নি। কার্ডে নেই কোনো ভোক্তার নাম ছবি স্বাক্ষর। পরবর্তীতে আবারও সরকার কতৃক টিসিবির পন্য সামগ্রী এলে অন্য একজন ব্যক্তিকে দেওয়া হয় এ কার্ডটি। প্রকৃত অর্থে কার্ডধারী ব্যক্তিরা বঞ্চিত হচ্ছে এ সেবার সুযোগ-সুবিধা থেকে।
একবার পণ্য দিয়ে জমা নেওয়া হচ্ছে কার্ডটি ইউনিয়ন পরিষদে। পরবর্তীতে টিসিবি পণ্য দেওয়ার সময় এই কার্ডটি নিজের পছন্দের মানুষকে দিচ্ছেন চেয়ারম্যান।
ডিলার বগুড়ার কাহালু উপজেলার জোবায়ের এন্টার প্রাইজের সাথে কথা বললে তিনি জানান, যে কার্ড নিয়ে আসবে চেয়ারম্যান তাকেই পণ্য দিতে বলেছেন। কার্ডে কোনো নাম ঠিকানা নেই। চেয়ারম্যানের নির্দেশ অনুযায়ী আমি পণ্য সরবরাহ করছি। শুধু তাই নয় টিসিবির পণ্যের সাথে পাঁচ কেজি করে যে চাল দেওয়া হচ্ছে, সেগুলি চেয়ারম্যান-মেম্বারের লোকজন প্রকাশ্যেই পরিষদে কিনে নিচ্ছে। ভোক্তাদের কাছ থেকে টিসিবির চাল এভাবে ক্রয় করা আইনত অপরাধ।
এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার জানান, বিষয়টি আমি দেখছি, অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available