হুমায়ুন আহমেদ: ময়মনসিংহের ভালুকায় সবজি উৎপাদন, পোল্ট্রি ও মালটা চাষে সফলতার পর শুরু হয়েছে বিদেশি ফল ড্রাগন চাষ। ইতোমধ্যে বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন চাষ করে সফল হয়েছেন কয়েকজন চাষি। তাদের সফলতা দেখে এগিয়ে আসছেন আরও অনেকে।
ফলে আগামী গ্রীষ্মের শুরুতে এই অঞ্চলে বিপুল পরিমাণ ড্রাগন উৎপাদনের আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ময়মনসিংহের ভালুকার কাচিনা ও উথুরা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে গেল দুই বছর আগে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সিটিউট (বারি) কর্তৃক উদ্ভাবিত নতুন জাতের বারি ড্রাগন ফল-১ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জনপ্রিয় ফল হিসেবে পরিচিত ড্রাগনের চাষাবাদ শুরু হয়। কৃষিতে অনুপযোগী পরিত্যক্ত উঁচু লাল দো-আঁশ মাটি এই ফল চাষে অধিক উপযোগী হওয়ায় আবাদের ৩ বছরের মাথায় বিনিয়োগ উঠিয়ে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেন উদ্যোক্তারা।
ড্রাগনে বিভিন্ন ঔষধী গুণ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বিদ্যামান থাকায় এর কদর ছড়িয়ে পড়ছে দেশজুড়ে, লাভবান হয়ে উঠছেন চাষিরা, গ্রামীণ অর্থনীতির চাকাও হয়ে উঠছে সচল।
উপজেলার উথুরা ইউনিয়নের চামিহাদী গ্রামের প্রান্তিক চাশি বিল্লাল হোসেন মাতাব্বর (৪০) জানান, দুই ভাই মিলে পরিত্যক্ত অকৃষি দুই একর জমিতে ড্রাগন চাষ শুরু করেছিলেন। মাটি, আবহাওয়া ড্রাগন চাষের অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো পেয়ে দুই বছরেই বিনিয়োগ উঠে আসে। এখন লাভের মুখ দেখতে শুরু করছেন। এই বছর তাদের বাগানের ড্রাগন বিক্রি করে অন্তত ৮ লক্ষ টাকা আয় হবে বলে আশা করছেন তিনি।
এছাড়াও ওই এলাকায় তাদের সফল হতে দেখে অনেকেই ড্রাগন চাষ করে লাভ হওয়ার কথা জানিয়েছেন বিল্লাল হোসেন মাতাব্বর।
তিনি আরও জানান, পশ্চিম ভালুকায় এখনও অনেক অকৃষি অনাবাদী জমি রয়েছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার মধ্য দিয়ে অকৃষি জমিগুলো ড্রাগন চাষের আওতায় এনে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করলে গ্রামীণ অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে। কর্মসংস্থান হবে অনেক বেকার যুবকের।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরে ভালুকায় ৬ হেক্টর জমিতে পরীক্ষামূলক ড্রাগন চাষ হয়েছে। এবার ড্রাগন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১২৫ মেট্রিকটন। তবে ল্যক্ষমাত্রার চেয়ে উৎপাদন বেশি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভালুকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জেসমিন জাহান জানান, ভালুকার মাটি বিভিন্ন ফল চাষাবাদের জন্য অধিক উপযোগী। তাই এখানকার কৃষকরা নতুন নতুন ফলের আবাদ করছেন। মালটার সফলতার পর এবার তারা ড্রাগন চাষেও সফলতা বয়ে আনছেন। এতে বিশাল জনগোষ্ঠির পুষ্টি চাহিদা পূরণ হচ্ছে। পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনীতিও সমৃদ্ধ হচ্ছে। কৃষকরা যাতে ড্রাগন ফল আরও বেশি করে চাষ করতে পারেন তার জন্য কৃষি অফিস মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available