আফরুজা আভা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজে ফলাফল বিলম্ব ও চলমান অন্যান্য বিড়ম্বনা নিয়ে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। ৭ কলেজ সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এর আগে কয়েক দফায় এসব সমস্যা সমাধানের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। বারংবার প্রশাসন শুনিয়েছে নানা প্রতিবন্ধকতার গল্প, যে গল্পের শেষ হয়নি দীর্ঘ ৭ বছরেও।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত এই ৭টি কলেজ থেকে এসব সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীরা ঢাবি রেজিস্টার অফিসে আসলে সেখানে শিক্ষার্থী হয়রানিতে পড়া নিয়েও ঢাবি প্রশাসনের বিরুদ্ধে উঠেছে অভিযোগ। এরই প্রতিবাদে সম্প্রতি মানববন্ধনে করেছে ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন: বহুদিন ধরে চলে আসা এসব বিড়ম্বনার শেষ কোথায়?
ঢাবি অধিভুক্ত ৭ কলেজের চলমান বিভিন্ন সমস্যার কারণ ও সমাধানের অগ্রগতি নিয়ে এশিয়ান টিভি অনলাইনের সাথে কথা বলেছেন ৭ কলেজ সমন্বয়ক ও ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য।
৩ মাসের মধ্যে রেজাল্ট প্রকাশ করার বিষয়ে বেশ কয়েকবার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। এরপরেও কেন তার বাস্তবায়ন হচ্ছে না- এমন প্রশ্নের উত্তরে অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য বলেন, যা হয়ে গেছে, তাতে তো করার কিছু নেই। নানা রকম ছুটি থাকে, এসব কোনো না কোনো কারণে হয়ে যায় দেরিটা। তবে সামনে যেন দ্রুত রেজাল্ট প্রকাশ হয়, তা নিয়ে আমরা কাজ করছি।
কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন প্রসঙ্গে শিক্ষক সংকটের কথা বলে, এটি ফলাফল বিলম্বে প্রভাব ফেলছে কিনা ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ৭ কলেজের সব কলেজেই শিক্ষক সংকট নেই। বিশেষ কিছু বিষয়ের শিক্ষক সংকট কিছুটা থাকলেও এটি শুধু ৭ কলেজ না পুরো বাংলাদেশেই শিক্ষক কম রয়েছে। তবে এটি ফলাফল বিলম্বের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলছে না।
তাহলে ফলাফল প্রকাশে এত বিলম্ব মূলত কেন হচ্ছে? জবাবে ৭ কলেজের সমন্বয়ক বলেন, বেশ কিছু কারণ রয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী অনেক কম। এখানে কর্মচারী সংকট থাকায় ফলাফল প্রকাশের কাজটা কিছুটা দেরি হয়ে যায়।
আমরা দেখতে পাই বিজ্ঞান অনুষদের ফলাফলের ক্ষেত্রেই সর্বোচ্চ বিলম্ব হয়। এখানে সমন্বয় করা কেন সম্ভব হচ্ছে না, সমস্যা কি? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আসলে বিজ্ঞান বিভাগের তো ব্যবহারিক পরীক্ষা থাকে। এই ব্যবহারিক পরীক্ষা একেক কলেজ একেক সময়ে নেয়া হয়, যার কারণে বিজ্ঞান বিভাগের ফলাফল প্রকাশে দেরি হয়।
পূর্ব প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী লিখিত পরীক্ষা শেষের এক মাসের মধ্যেই ব্যাবহারিক পরীক্ষা শেষ করার কথা ছিল, সেটি কেন বাস্তবায়ন হচ্ছে না? উত্তরে অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য বলেন, মাঝখানে রমজানের ছুটির কারণে একটা গ্যাপ পড়েছে, তবে এটি নিয়ে আমরা ও আমাদের বিভাগগুলো প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি।
অনেক শিক্ষার্থী ফলাফল সমন্বয় ও অন্যান্য কাজে ঢাবিতে গিয়ে ভোগান্তিতে পরে, হয়রানির শিকার হয়। ফলাফল সমন্বয় না হওয়ায় তারা মাস্টার্স ভর্তি ও চাকরীর আবেদন করতে পারছে না। অফিসিয়াল সফটওয়্যারেই তো ফলাফল অটো সমন্বয় হওয়ার কথা এটি কেন হচ্ছে না? এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আমাদের সফটওয়্যারের এই সমস্যা ঠিক করার জন্য সফটওয়্যার আপডেট দেয়া হচ্ছে। আপডেট হয়ে গেলেই সমস্যার সমাধান হবে।
উল্লেখ্য, ৭ কলেজের ফলাফল প্রকাশ, সমন্বয় ও অন্যান্য সমস্যা নিয়ে কথা বলতে গেলে ঢাবি পরিক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরী জানান, ৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের তুলনায় শিক্ষক সংখ্যা অপ্রতুল। ৭ কলেজ প্রায় দেড় লাখ শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক রয়েছে মাত্র ১২২৭ জন। যা এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য যথেষ্ঠ নয়। এছাড়াও শিক্ষকদের মাঝে নানা মতভেদ, বিভাজন ও সমন্বয়হীনতা রয়েছে। অবকাঠামোগত কিছু বিষয়ও আছে, যা উন্নয়নের চেষ্টা চলছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available