বুটেক্স প্রতিনিধি: গরমে সারাদেশের মানুষ অতিষ্ঠ। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হিটস্ট্রোকের ফলে মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এই তীব্র গরম বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) শিক্ষার্থীদের জন্য কষ্টকর হয়ে পরছে। হলে সিলিং ফ্যান না থাকায় তারা ব্যক্তিগতভাবে টেবিল ফ্যান ব্যবহার করছে। আর সেই ফ্যানের বাতাসে অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পরছে। হলে কেন সিলিং ফ্যান থাকবে না এ নিয়ে ক্ষোভ দেখিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, বুটেক্সের চারটি আবাসিক হলের মধ্যে দুটিতে সিলিং ফ্যান নেই। সরেজমিনে দেখা যায়, শহীদ আজিজ হলের ৫৮টি রুমের মধ্যে হলের ডাইনিং, রিডিং রুম, টিভি রুম, হল সংসদ, হল প্রভোস্টের রুম ব্যতীত কোনো রুমে সিলিং ফ্যান নেই। টিভি রুমে মাত্র ৩টি ফ্যান রয়েছে যার মধ্যে ২টি নষ্ট।
জিএমএজি ওসমানি হলের চিত্র প্রায় একই। হলের ৭৮টি রুমের মাঝে ৫৯টি রুম পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় হলের অফিস, ডাইনিং রুম, জিমনেসিয়াম রুম ও আর একটি রুম বাদে কোথাও কোনো ফ্যান নেই। জিমনেসিয়াম রুমে ফ্যান আছে ২টি।
হলে সিলিং ফ্যান না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে। শিক্ষার্থীরা বলেন, এই গরমের মাঝেও হলে কোনো সিলিং ফ্যান নেই। যা আমাদের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি করছে। আর সামনে আমাদের পরীক্ষা, তাই এটি আমাদের লেখাপড়ায়ও ক্ষতি হচ্ছে।
শহীদ আজিজ হলের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আন-নাফি জিম বলেন, গরমে হলের রুমগুলাতে সিলিং ফ্যান না থাকায় শিক্ষার্থীরা গরমে অতিষ্ট হয়ে উঠছে। যার ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বিঘ্ন হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা টেবিল ফ্যান ব্যবহার করলেও টেবিল ফ্যানের বাতাস শিক্ষার্থীদের জন্য স্বস্তিদায়ক নয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৪৭তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী বলেন, টেবিল ফ্যান ব্যবহারের ফলে শরীরের এক স্থানে বাতাস লাগে, যার ফলে তার শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয়। গরমে টানা তিন দিন জ্বরে ভুগছি। তাছাড়াও তার রুমমেটরাও অসুস্থ হয়েছিলো।
কিন্তু সিলিং ফ্যান না থাকার পেছনে অনেকে দোষ চাপছেন হলে থাকা সাবেক শিক্ষার্থীদের দিকে। বিভিন্ন সূত্র হতে জানা যায়, হলের সকল রুমে ফ্যান ছিল। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় ফ্যানগুলো নিজেদের ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য খুলে নিয়ে গেছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের নিয়ে এমন অভিযোগের পেছনে তৎকালীন হল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠে।
হলে ফ্যান সংক্রান্ত বিষয়ে ওসমানি হলে দায়িত্বে থাকা মো. আইয়ুবের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রকল্প পরিচালকের কাছে অনেক আগে দুইবার রিকুইজিশন লেটার পাঠানো হলেও পরবর্তীতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় এই ফ্যানগুলো হলে আগে আনার কথা হয়। পরে নানা কারণে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
শহীদ আজিজ হলের হল প্রভোস্ট ড. মো. ইমদাদ সরকার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফ্যান দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষরসহ প্রতি রুমে ফ্যান দেওয়ার জন্য আবেদন করতে পারো। তোমরা আবেদনপত্র দিলে আমরা তা হল প্রশাসনকে জানাতে পারি। এই অর্থবছরে বাজেট তো শেষ। নতুন বাজেটে যাতে আসে সেই চেষ্টা করা হবে।
ওসমানী হলের প্রভোস্ট ড. মো. সাইদুজ্জামান নতুন বাজেটে ফ্যান লাগানোর চেষ্টার বিষয়ে সহমত প্রকাশ করেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available