নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশাল জেলার হিজলা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গাফফার তালুকদারের বিরুদ্ধে দখল বাণিজ্য ও লুটতরাজের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এমন অভিযোগ করেছেন হিজলা উপজেলার মেমানিয়া ধুলখোলা ও হিজলা গৌরবদি ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দারা।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৬ আগস্ট এবং ৭ আগস্ট হিজলা উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে ব্যাপক লুটতরাজ ও ভাঙচুর চালায় গাফফার বাহিনী। হিজলা গৌরবদি ইউনিয়নের জানপুর চর নামক এলাকার বাবুল মাদবর নামে জনৈক ব্যক্তি জানান তার চল্লিশটি গরু এবং ৭০ টি মহিষ, দুইটি পাওয়ার টিলার, দুইটি করে প্যানেল ও ব্যাটারি নিয়ে যায় গাফফার বাহিনীর শাহিন খা, কবির মোল্লা, জসিম মোল্লা, সাদ্দাম মোল্লা, দুলাল চৌকিদার, হজরত আলী চৌকিদার, শুকুর আলী চৌকিদারসহ প্রায় ৬০-৭০ জনের বাহিনী।
জানপুর চরে অবস্থিত মসজিদের ইমাম সাহেবের দুইটি গরুও নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এমনকি জানপুরে মেঘনা নদীর পাড়ে অবস্থিত বিশাল মাছ ঘাট টিও গাফফার তালুকদারের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। যেখানে আজাদ সরকার দায়িত্ব পালন করছেন।
যদিও এসব লুটতরাজের বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করে গাফফার তালুকদার বলেন, ওই ইউনিয়নের আমি সাবেক চেয়ারম্যান এবং মেঘনা পাড়ে অবস্থিত প্রায় ১৫টি মাছের আরত ছিল আমার। ১৬টি বছর আওয়ামী লীগ নেতা মিলন চেয়ারম্যান আমার ঘাট ও আরতগুলো সব দখল করে নিয়েছিল। আমি শুধু দখল করা মাছের ঘাটগুলো পুনরুদ্ধার করেছি।
সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহে গেলে দেখা যায়, বাবুল মাদবরের জানপুর চরে নির্মিত বসত ঘরটি দরজা-জানালা বিচ্ছিন্ন। শতাধিক কোপের সাক্ষ্য বহন করছে টিনের তৈরি বেড়া। বসত ঘরে থাকা যাবতীয় মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
ওই চড়ে বসবাসকারী রানি বেগম এবং রাবেয়া বেগম বলেন, ঘটনার দিন প্রায় ৬/৭টি ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে লোকজন এসে জানপুর চরে থাকা প্রায় সকল গরু, মহিষ এবং বাবুল মাদবরের ঘর লুট করে নিয়ে যায়। বাবুল মাদবর, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মিলন চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠজন বলে জানান স্থানীয়রা। এছাড়াও জানপুর চরের বাসিন্দা বাচ্চু মাদবরের ৫০টি গরু এবং দুই শত মন সয়াবিন নিয়ে যায় গাফফার বাহিনী।
উপজেলার মেমানিয়া, ধুলখোলা ও হিজলা গৌরব্দী ইউনিয়নগুলো নদীবেষ্টিত হওয়ায় মেঘনা নদী থেকে আরোহিত ইলিশ, বাইলা, চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের ঘাটগুলো এই তিনটি ইউনিয়নে অবস্থিত। বর্তমানে এই মাছের আরতগুলোর অধিকাংশই হিজলা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গাফফার তালুকদারের নিয়ন্ত্রণাধীন।
বিএনপির পদধারী একজন নেতার এসব লুটতরাজ ও দখল বাণিজ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে বরিশাল জেলা উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব মিজানুর রহমান মুকুল খান বলেন, গাফফার তালুকদার সম্পর্কে একটি জাতীয় পত্রিকায় আমরা দেখেছি। সে মোতাবেক ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে একটি তদন্ত টিম গঠন করে উপজেলায় আমরা ইতোমধ্যেই পাঠিয়ে দিয়েছি। তদন্ত টিমের প্রতিবেদন অনুযায়ী হাই কমান্ডের সাথে পরামর্শ ক্রমে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মুকুল খান আরও জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশক্রমে তিনি ইতোমধ্যেই মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা সফর করেছেন এবং সেখানে এক সভায় নেতাকর্মীদের প্রতি সহনশীল মনোভাবের পরিচয় দানের আহ্বান জানিয়ে কোন প্রকার দখল বাণিজ্য, লুটতরাজ তার দল বরদাস্ত করবে না বলে হুঁশিয়ারি প্রদান করেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available