বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর বাউফলে দুই সতিনের টানাটানিতে জুবায়ের নামের ৭ দিন বয়সী এক অবুঝ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার ধুলিয়া ইউনিয়নের জামালকাঠী গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ওই গ্রামের কাদের চৌধুরীর ছেলে জহিরুল ইসলাম তার প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে সম্প্রতি বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাটকাঠী গ্রামের শফিউদ্দিন তালুকদারের মেয়ে সুমা আক্তারকে বিয়ে করেন। এক সপ্তাহ আগে সুমা আক্তার একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। এরপর থেকে সুমা আক্তার (২৮) ও তার সন্তানের খোঁজখবর নেওয়া বন্ধ করে দেন জহিরুল।
৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকালে সুমা আক্তার তার ৭ দিন বয়সী সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি এসে জানতে পারেন তার স্বামী আগেও একটি বিয়ে করেছেন। এ সময় সুমা তার স্বামীর ঘরে অবস্থান নেওয়ায় ক্ষিপ্ত হন জহিরুলের প্রথম স্ত্রী শাবনাজ(২৫)। সুমাকে সন্তানসহ বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন শাবনাজ। কিন্তু সুমা কিছুতেই তার স্বামীর সংসার ছেড়ে যেতে রাজী না হওয়ায় সারাদিন দুই সতিনের মধ্যে ঝগড়া চলতে থাকে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শাবনাজ জোরপূর্বক সুমাকে তার সন্তানসহ ঘর থেকে বের করতে যান। এ সময়ও দুই সতিনের ধস্তাধস্তিতে ৭ দিন বয়সী জুবায়ের তার মায়ের কোলে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। দ্রুত যুবায়েরকে কালিশুরী বাজারের একটি ক্লিনিকে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ওই শিশুটির মরদেহটি উদ্ধার করে পটুয়াখালী হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
শিশুটির মা সুমা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, জহিরুল ইসলাম আমাকে অনেক আগেই বিয়ে করে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে গোপন রেখেছেন। আমি অসুস্থ হওয়ার পর আমার স্বামী চিকিৎসার জন্য ৫ হাজার টাকা বিকাশে পাঠিয়ে ফোন করে বলেন, তুমি চিকিৎসা করে নিও। আমি তাবলিগ জামাতে যাচ্ছি। ফোনে খোঁজখবর নিব। সন্তান জন্মের পর আমি তাকে ফোন করে বলি, আমি ও আমার সন্তান খুব অসুস্থ, তুমি একটু আসো। এরপরই জহিরুল সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। নিরুপায় হয়ে আমি স্বামীর বাড়ি চলে আসি। এখানে আসার পর আমার সন্তানকে টেনে হিঁচড়ে মেরে ফেলেছে তার প্রথম স্ত্রী। আমি এর বিচার চাই।
অন্যদিকে সুমা আক্তারের সতিন শাবনাজ এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই বাচ্চা ৭ মাসে ভূমিষ্ঠ হয়েছে। শিশুটি পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। অসুস্থ বাচ্চা নিয়ে এসে এখন আমাকে ফাঁসানোর পাঁয়তারা চলছে।
ধুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ন কবির বলেন, এ রকম একটি খবর শুনে ঘটনাস্থলে গ্রাম পুলিশ পাঠিয়েছি। পরে শুনি পুলিশ এসে শিশুটির মরদেহ নিয়ে গেছে।
বাউফল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available