• ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ১১:১৬:২২ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ রাত ১১:১৬:২২ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

মানিকগঞ্জে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীর ১০ কোটি টাকার বাগান বাড়ি

১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সকাল ০৮:৩৯:৪১

মানিকগঞ্জে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীর ১০ কোটি টাকার বাগান বাড়ি

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: ১৯০ শতাংশ জমিতে দ্বিতল ভবনসহ দৃষ্টিনন্দন বাগানবাড়ি বানিয়ে মানিকগঞ্জে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন তৃতীয় শ্রেণীর এক কর্মচারী আব্দুল বারেক। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী ওই বাড়ির নাম দিয়েছেন ক্ষণিকের নীড়। অবৈধপন্থায় কামানো টাকা দিয়ে তিনি ওই বাগানবাড়ি বানিয়েছেন বলে দাবি স্বজন ও স্থানীয়দের।

স্থানীয় ও সংশ্লিষ্টসূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার উকিয়ারা গ্রামের ইয়াছিন আলীর ছেলে আব্দুল বারেক। বাবা-মায়ের পারিবারিক কলহে ছোটবেলায় পড়াশোনা করেছেন সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি এতিম খানায়। বাবার সাথে বিচ্ছেদের পর দিয়ারা গোলড়া গ্রামে নানার বাড়ির পক্ষ থেকে ১৮ শতাংশ জমিতে তার মাকে বানিয়ে দেয়া হয়েছিল একটি বাড়ি। ১৯৮৮ সালে তিনি দৌলতপুর ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে যোগ দেন সার্টিফিকেট সহকারী হিসেবে। এরপর তিনি মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ বিভিন্ন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে চাকরি করেছেন। বর্তমানে তিনি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী। সদর উপজেলার জাগীর ইউনিয়নের দিয়ারা গোলড়া গ্রামে ১ একর ৯০ শতাংশের জমি ও স্থাপনাসহ ওই বাগানবাড়ির বাজারমূল্য অন্তত ১০ কোটি টাকা। ওই বাগানবাড়ি ছাড়াও তার নামে বেনামে রয়েছে আরও কোটি টাকার সম্পদ। তৃতীয় শ্রেণীর এই কর্মচারীর দুর্নীতির সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচারের দাবি স্থানীয়দের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী আব্দুল বারেক। চাকরি থেকে অবসরের সময় রয়েছে আর মাত্র তিনমাস। সদর উপজেলার জাগীর ইউনিয়নের দিয়ারা গোলড়া গ্রামে ১ একর ৯০ শতাংশ জমির উপর বানিয়েছেন দৃষ্টিনন্দন একটি বাগানবাড়ি। সেই বাগান বাড়িতে একটি দ্বিতল ভবন, একতলা একটি ভবন, দেয়ালপাকা টিনসেড একটি ঘর, দুইটি টিনের ঘর, খেলার মাঠ, বাড়ির ভিতরে অসংখ্য সংযোগ ইটসলিং রাস্তা ও চারপাশ পাকাদেয়ালসহ বিভিন্ন ফলজ, বনজ ও বাহারি রকমের ফুলের গাছ। জানা যায়, জমি ও স্থাপনাসহ ওই বাগানবাড়ির বাজারমূল্য অন্তত ১০ কোটি টাকা।

এবিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুল বারেকের মামা জালাল উদ্দিন জানান, আমি নিজে বারেকের বাবার বাড়ি থেকে সাড়ে তিনবিঘা জমিসহ ওর মাকে নিয়ে আসি এবং আমাদের এলাকায় ১৮ শতাংশ জমির উপর একটি টিনের বাড়ি করে দিই। পরে বারেককে সাটুরিয়ার একটি এয়াতিম খানায় রেখে পড়াশোনা করানো হয়। কিছুদিন পরে অবশ্য ওই সাড়ে তিনবিঘা জমি ৫শ থেকে ৭শ টাকা বিঘাপ্রতি বিক্রি করে। সেই বারেক বাটোয়ারা মামলা দিয়ে আমাদেরকেই হয়রানি করছে। এখনতো ওই ১৮ শতাংশের বাড়ি ১ একর ৯০ শতাংশের বিশাল বাগান বাড়ি করছে।

দিয়ারা গ্রামের ফুলচাঁন জানান, বারেক আমাদের দেশে যখন আসে তখন মামার বাড়ির দেয়া বাড়ি ছাড়া কিছুই ছিল না। এতিমখানা থেকে পড়াশোনা করে এসে ডিসি অফিসে একটি চাকরি করত। মানুষের অর্থসম্পদ আত্মসাৎ ও দুর্নীতি করে ১০ কোটি টাকার উপরে সম্পদের মালিক হয়েছেন এই বারেক। আমার ঘরবাড়ি পুড়াইছে, গরুবাছুরসহ টাকাপয়সা লুট করছে এবং আমার নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে ১০ বার জেল খাটাইছে। আমি বারেকের সঠিক বিচার চাই।

স্থানীয় আব্দুস ছাত্তার জানান, আব্দুল বারেক অবৈধভাবে জমি হাতিয়ে নেয়াসহ বিভিন্ন দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। তিনি এই চাকরির বেতনের টাকা দিয়ে সংসার চালানোর খরচের ব্যয়ভার নির্বাহের পাশাপাশি লাখ লাখ টাকা দিয়ে পাঁচ মেয়েকে ঢাকা ভার্সিটিসহ কলেজে পড়িয়েছেন। এতিমখানায় বড় হওয়া তৃতীয় শ্রেণীর এই কর্মচারীর বেতন কত? সেখানে ১০ কোটি টাকার বাগান বাড়ি ও আরও কোটি টাকার সম্পদ কীভাবে করলো। আমার চার শতাংশ জমিতে জোরপূর্বক পাকা দেয়াল দিয়ে দখল করছে। এ ব্যাপারে সঠিক তদন্ত করা উচিত।

দিয়ারা গোলড়ার শরীফ জানান, বারেক ডিসি অফিসসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় চাকরি করার সুবাদে প্রশাসনের ছত্রছায়ায় থেকে নানা দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে অনেক টাকা উপার্জন করেছে। আমাদের চার বিঘা জমি বাবদ ব্যাংক ঋণ ২৫ হাজার টাকা পরিশোধ করার কথা বলে আত্মসাৎ করেছেন। পরে সেই ঋণ সুদসহ গতবছর আমরা ৬০ হাজার টাকা দিয়ে পরিশোধ করলেও আমাদের সেই জমি আর ফেরত দেয়নি। আমি সরকারের কাছে বিচার চাই।

অভিযুক্ত অফিস সহকারী আব্দুল বারেক বলেন, আমি মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ বিভিন্ন উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে অফিস সহকারী হিসেবে সততার সাথে চাকরি করেছি। আমার সম্পদের বিবরণী জমা দেয়া আছে। আমার বিষয়ে যেসব অভিযোগ উঠেছে তা সত্য নয়।

মাানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন ঢালী বলেন, আব্দুল বারেক সম্প্রতি আমাদের এখানে যোগদান করেছে। কোন দপ্তরে অভিযোগ হলে তদন্ত কাজে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। বারেক যে বেতন তা দিয়ে ১০ কোটি টাকার সম্পদ করা সম্ভব না। তবে অনেকেরই পারিবারিক সম্পদ থাকে। কোনো সম্পদ অবৈধভাবে করে থাকলে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ







ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় ৯ জনের মৃত্যু
২১ নভেম্বর ২০২৪ রাত ০৮:০৫:৩৩