নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুরে এক সাংবাদিকের বাড়িতে একের পর এক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী অরাজকতার শিকার মরহুম মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের দুর্দশা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে দুর্বৃত্তরা ওই মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে এমন নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে।
ফলে ওই সংবাদকর্মী জীবনের নিরাপত্তা হীনতায় চরম আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি সৈয়দপুর উপজেলা আমির হাফেজ মাওলানা আব্দুল মুনতাকিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ওই সাংবাদিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
৯ আগস্ট শুক্রবার বাদ জুমা শহরের দারুল উলুম মাদ্রাসা মোড় সংলগ্ন রেলওয়ে অফিসার্স কলোনি সবুজ সংঘ মাঠের সামনে নিগ্রহের শিকার তোফাজ্জল হোসেন লুতুর বাড়িতে যান জামায়াত আমির হাফেজ মাওলানা আব্দুল মুনতাকিম। সাংবাদিক তোফাজ্জল হোসেন লুতু দৈনিক কালেরকন্ঠ ও দৈনিক করতোয়ার সৈয়দপুর উপজেলা সংবাদদাতা ও সৈয়দপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
এ সময় জামায়াত আমীরের সাথে ছিলেন দৈনিক প্রথম আলোর সৈয়দপুর ও পার্বতীপুর প্রতিনিধি এম আর আলম ঝন্টু, দৈনিক নয়াদিগন্ত ও দৈনিক সংগ্রাম সংবাদদাতা জাকির হোসেন এবং জামায়াতের পেশাজীবী বিভাগের উপজেলা দায়িত্বশীল অ্যাডভোকেট ফারহান আলম।
জামায়াত আমির হাফেজ মাওলানা আব্দুল মুনতাকিম ওই সাংবাদিক ও মরহুম মুক্তিযোদ্ধা মহরল আলির ছেলে আব্দুর রাজ্জাকের সাথে দেখা করে তাদের উপর দুর্বৃত্তদের হামলার বিষয়ে খোঁজ খবর নেন। বিস্তারিত শুনে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
উভয় পরিবারকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির প্রতি আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আপনাদের পাশে আছি। প্রাণ দিয়ে হলেও আর কোন হামলা হতে দেয়া হবে না এবং জড়িতদের অবশ্যই আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত বিচার করা হবে।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ দিন অপশাসনের ফলে দেশে একটা নৈরাজ্য পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে বাকশালি স্বৈরশাসকের পতন হলেও তার প্রেতাত্মা সন্ত্রাসীরা আজও রয়ে গেছে। তারা দ্বিতীয় স্বাধীনতার সুফল নস্যাৎ করতে নানামুখী অপতৎপরতা চালাচ্ছে। কিন্তু আমরা জামায়াতে ইসলামি কখনোই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে ছিলাম না এবং বরদাস্তও করবো না।
মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক শুধু নয় ,কোন আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীর বাড়িতে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেসহ কারও উপর হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটসহ কোন ধরনের অপকর্ম কারীদের ছাড় দিবো না। এসব অরাজকতা যেই করুক তাদের যথাযথ শাস্তি দেয়া হবে এবং সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, সবুজ সংঘ মাঠটি রেলওয়ের জায়গায়। এর পাশেই রেলওয়ের জায়গাতেই টিনের চালাঘর করে কোনোরকমে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে বসবাস করছেন মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা মহরল আলির পরিবার পরিজন। ইতঃপূর্বেও কতিপয় ব্যক্তি তাদের সেখান থেকে উচ্ছেদ করে জায়গাটি দখলের অপচেষ্টা চালায়। কিন্তু এলাকাবাসী ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের হস্তক্ষেপে তারা সফল হয়নি।
সম্প্রতি গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে ওই কুচক্রী মহল সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটিকে হেনস্তা করাসহ উচ্ছেদের অপচেষ্টা চালায়। এনিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন সাংবাদিক তোফাজ্জল হোসেন লুতু। ফলে ওই সন্ত্রাসীরা আরও সংগঠিত হয়ে সাংবাদিকের বাড়িতেও দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available