বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাট সদর উপজেলার এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে পার্শ্ববর্তী এক বখাটের বিরুদ্ধে। এ ঘৃণিত কাজের প্রতিবাদ করায় ওই ছাত্রীর পিতা ও পরিবারের উপর হামলা চালায় বখাটে বলরাম দাস ও তার লোকজন।
১৭ মে শুক্রবার বাগেরহাট সদর উপজেলার কুলিয়াদাইড় গ্রামের শ্মশানঘাট এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় স্কুল ছাত্রী, তার পিতা, তার চাচা জগদীস চন্দ্র দাস ও চাচাতো বোন চন্দনা রাজবংশী আহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর পিতা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
শিক্ষার্থী অহনা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে স্কুল থেকে বাসায় ফিরি। তখন বাবা ও মা বাড়িতে ছিল না। একটু পরেই আমার পার্শ্ববর্তী বলরাম দাস আমাদের ঘরে ঢুকে আমার কাছে খাবার পানি চায়। জয় নামের আরেকজন ঘরের বাইরে দাঁড়ানো ছিলো। আমি বলরামকে পানি দিলে সে আমাকে জড়িয়ে ধরে ও ফ্লোরে কাথ করে ফেলে। বলরামের সাথে জোরাজুরিতে আমার ডাইনিং টেবিলের আঘাতে আমার ঠোঁট ফেটে যায়। পরে ডাক চিৎকার দিলে আমার চাচি ও চাচাতো বোন দ্রুত এগিয়ে এসে আমাকে উদ্ধার করে।
চাচি কল্পনা রাজবংশী বলেন, অহনার মা তার পিতার বাড়ি যশোরে গিয়েছে ও বাবা ইজিবাইক চালাতে বাড়ির বাইরে ছিলো। দুপুর ১২টার দিকে আহনা ঘর থেকে চিৎকার দিলে আমি ও আমার মেয়ে দ্রুত আহনাদের ঘরের যাই। অহনাকে ঘরের ফ্লোরে চেপে ধরতে দেখি পার্শ্ববর্তী বলরামকে। এ সময় ঘরের বাইরে জয় দাঁড়ানো ছিলো। আমরা গেলে দ্রুত তারা পালিয়ে যায়।
চাচা জগদীস চন্দ্র দাস বলেন, আমার মেয়ে আমাকে দ্রুত বাড়িতে আসতে বলে। বাড়িতে আসলে বিষয়টি আমি আমার ভাইজি, মেয়ে ও স্ত্রীর কাছে ঘটনা জানতে পারি। ভাইকে ফোন দিলে সেও দ্রুত বাড়িতে আসে। আমরা বলরামের কাছে বিষয়টি জানতে চাই। সে জানায় আমি তার সাথে কোন খারাব কাজ করিনি। শুধু পিঠের উপর হালকা আঘাত করেছি। এ ঘটনায় সে উত্তেজিত হয়ে তার মামাতো ভাই মিথুন, পিতা খোকন, আপন ভাই টুটুল, ভগিরথ ও ভজনকে নিয়ে আসে। পরে শ্মশানঘাট এলাকায় আমিসহ আমার ভাই অনন্ত রাজবংশীর উপর হামলা করে তারা। এ সময় আমার মেয়ে চন্দতাকেও তারা মাথায় আঘাত করে। হামলায় আমার ভাইকে মেরে কাদার ভিতর ঢুকে রাখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। এতে আমার ভাই অজ্ঞান হয়ে যায়। আমাদের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আমাদের উদ্ধার করে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। ভাইয়ের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য পাইক কবিরুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণ চেষ্টা ও হামলার ঘটনা শুনে আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি। ভুক্তভোগীর পিতা অনন্ত রাজবংশী হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন। হামলাকারী বলরামের বিরুদ্ধে আগেও এলাকায় এ ধরনের মামলা রয়েছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। আমি আমাদের ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা এস আই গৌতমকে বলেছিলাম, তিনি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুর রহমান বলেন, এ ঘটনা আমার জানা নাই। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available