লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের হরিণচড়া গ্রামে ব্যাপকভাবে তিস্তা নদীর ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানি বাড়তে থাকায় গত ৭ দিনে তিস্তা নদীর ডান তীরের এ গ্রামে নদীভাঙনে এ পর্যন্ত ৩০টি বসতভিটা ভেঙ্গে গেছে। ভাঙন হুমকিতে রয়েছে আরও শতাধিক পরিবার।
ইতোমধ্যেই নদীগর্ভে চলে গেছে ৩শ’ বিঘা জমির ধান সবজিসহ ফসলের ক্ষেত। ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন নদী পাড়ের বাসিন্দারা। পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ফেললেও তা কোন কাজে আসছে না।
হরিণচড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হাকিম মাহবুব হোসেন, ফারুক মিয়া জানান, তিস্তার বাম তীরে নদীভাঙ্গন রোধে সংরক্ষণ কাজ হলেও ডানতীরে কোন সময় কাজ হতো না। তাছাড়া নদীও ছিল অনেক দূরে। কিন্তু বর্তমানে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে ডান তীর দিয়ে স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাপক নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। কৃষি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদী ভাঙনের কবলে পড়ছে।
ভাঙন হুমকিতে রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি ক্লিনিক, মসজিদসহ বাজার। এ গ্রামটিতে প্রায় ১২ হাজার লোকের বসবাস রয়েছে। নদীভাঙ্গনে একেকজন ৩ থেকে ৫ বার পর্যন্ত বসতভিটা সরিয়েছেন। জমি জায়গা নদীতে বিলীন হওয়ার কারণে অনেকে নি:স্ব হয়ে পড়েছেন। এখন মাথা গোঁজার ঠাইটুকুও নেই। সবকিছু হারিয়ে নি:স্ব এসব মানুষ উঁচু সড়কে আশ্রয় নিয়েছেন। যাদের একসময় সহায়সম্বল সবকিছুই ছিল। সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা সচ্ছল ছিল। ছিল না অভাব অনটন, কিন্তু তিস্তার বন্যা আর নদীভাঙ্গনে নি:স্ব এখন এসব পরিবার। মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও নেই এখন তাদের। ভিটেমাটি হারিয়ে পথে বসেছে নদীভাঙ্গনের শিকার কয়েক হাজার মানুষ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য এমদাদ মিয়া জানান, ভাঙন প্রতিরোধে তারা নিজেরা অর্থ সংগ্রহ করে বালুর বস্তা দিয়ে বাঁধ দিয়েছে। কিন্তু তিস্তার প্রবল পানির স্রোতে সে প্রতিরক্ষা বাঁধও ভেঙ্গে গেছে। এখানে বর্তমানে তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। তাই সরকারিভাবে ভাঙনরোধের ব্যবস্থার দাবি জানান তিনি।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শূনিল কুমার রায় জানান, তিস্তা নদীর বাম তীরে ভাঙন অব্যাহত থাকায় সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে ভাঙন প্রতিরোধে কাজ চলমান রয়েছে। কিন্তু তিস্তার গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় এখন ডানতীরেও ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে সাময়িকভাবে জিও ব্যাগ দেয়া হয়েছে। স্থায়ীভাবে প্রতিরোধমূলক বাঁধ দেয়ার জন্য অনুমোদন প্রেরণ করা হয়েছে। অনুমোদন পাশ হলে কাজ শুরু হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available