নরসিংদী প্রতিনিধি: জনভোগান্তি নিরসন করে সেবার মান বাড়িয়ে নরসিংদীর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এতে বেড়েছে রাজস্ব আয়। থাকছে না বিড়ম্বনা। সাশ্রয় হচ্ছে সময়। কার কাছে কতটা ভালো সেবা পেলেন তার মান নির্ণয় করে দিচ্ছেন গ্রাহকরাই। গ্রাহকদের দেয়া সেবার মানের মাত্রা অনুযায়ী কর্মকর্তা কর্মচারীদের পুরস্কৃত করা হচ্ছে। আবার কোনো অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
গত এক বছরে নরসিংদী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় কয়েক কোটি টাকা। গত এক বছর ধরে রাজস্ব আয় বাড়ছে। সুন্দর সেবা পেয়ে প্রতিদিন গড়ে ২শ জন গ্রাহক পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। সাধারণ পাসপোর্টের জন্য সরকারি রাজস্ব ৩ হাজার ৪৫০ টাকা। যা ২১ কর্ম দিবসের মধ্যে গ্রাহক হাতে পান। জরুরি পাসপোর্টের জন্য রাজস্ব ফি ৬ হাজার ৯৫০ টাকা। যা সাত কর্মদিবসের মধ্যে ইস্যু করা হয়। নরসিংদীর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে এক বছর আগে ছিল দালালদের দৌরাত্ম্য। বাড়তি খরচ হতো। ভোগান্তির সঙ্গে বিড়ম্বনাও ছিল। আগের এই দৃশ্যপট একেবারে পাল্টে গিয়েছে।
পাসপোর্ট নিতে আসা নরসিংদী শহরের বাসিন্দা শাকিল মিয়া বলেন, আমি চলতি মাসের প্রথমে অনলাইনে আবেদন করে পাসপোর্ট করতে দিয়েছিলাম। কোনোরকম ভোগান্তির ছাড়াই আজকে আমার পাসপোর্ট হাতে পেয়েছি। ডেক্সের কর্মকর্তারা আমার সাথে আন্তরিকতার সাথে কথা বলা ও আমার কাজে অনেক সাহায্য করেছেন।
শিবপুর উপজেলার বৃদ্ধ আব্দুল রফিক বলেন, আগের চেয়ে নরসিংদী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে সেবার মান বেড়েছে। আমি নিজে গিয়ে পাসপোর্ট করেছি। আমার কোনো ভোগান্তি হয়নি। তাদের সেবার মনটা দ্রুত করেছে আগের তুলনায়। আগে তো ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হতো, এখন বসে থাকতে হচ্ছে না এবং আশেপাশে কোনো দালালও দেখতে পাইনি।
নরসিংদী প্রত্যন্ত রায়পুরা চরাঞ্চল থেকে পাসপোর্ট করতে আসা আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমার পাসপোর্ট ও আইডি কার্ডে নামের কিছুটা সমস্যা ছিল। সেটি সমাধান করতে আমি এডির কাছে এসেছিলাম। তিনি দ্রুতই আমার সমস্যার সমাধান করে দিয়েছেন। আগের তুলনায় সেবার মান অনেক ভালো পেয়েছি। কাজ দ্রুত হচ্ছে এবং দালালাও নেই বললেই চলে।
নরসিংদী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক মো. জামাল হোসেন বলেন, নরসিংদীতে বর্তমানে ই-পাসপোর্ট চালু রয়েছে। ই-পাসপোর্ট আবেদনকারী ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে, ফরমপূরণ করে আবেদন ফরমের সঙ্গে পুরাতন পাসপোর্ট বা আইডি কার্ড সংযুক্ত করে সরাসরি জমা দিচ্ছেন। পাসপোর্ট গ্রাহকদের সমস্যা সমাধানকল্পে প্রতি সোমবার গণশুনানিও করা হয়। বর্তমানে এই অফিসে দালালের কোনো অপতৎপরতার সুযোগ নেই। সব কিছু গ্রাহক নিজে নিজে করতে পারছেন। ফলে এই অফিসে দিনদিন গ্রাহক বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সরকারের রাজস্ব আদায় দিন দিন বাড়ছে।
তিনি আরো বলেন, কেউ যদি কারও খপ্পড়ে পড়ে তবে সরাসরি তিনি আমাকে জানাতে পারবেন। নিচে আমি বিভিন্ন ব্যানারে লিখে দিয়েছি। আমাকে জানালে আমি তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আমি পাসপোর্ট অফিসের গেটে একটি জবাবদিহীতা বক্স স্থাপন করেছি। ফলে গ্রাহক কেমন সেবা পেল সেটি আমাকে লিখে জানাতে পারবে। এই অফিসের কোনো কর্মকর্তা কর্মচারী যদি ভালো ব্যবহার করে তাকে পুরস্কার আর খারাপ ব্যবহার করলে তাকে শাস্তির আওতায় আনার জন্যই ওই জবাবদিহীতা বক্স স্থাপন করা হয়েছে। বীরমুক্তিযোদ্ধা, অসুস্থ্য ও প্রতিবন্ধীদের বিশেষ কিছু সুবিধার ব্যবস্থা করেছি। একটি হেল্প ডেস্কও স্থাপন করেছি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available