অনামিকা আক্তার, ববি প্রতিনিধি: ‘উন্নয়ন’ শব্দটি শুনলেই চোখের সামনে চলে আসে একটি দেশ বা দেশের নানাদিক। একটা দেশের উন্নয়ন বলতে শিক্ষা, খাদ্য, বাসস্থান, যোগাযোগ, কর্মসংস্থান আরও বিষয়ের উন্নয়নকেই বোঝায়। পূর্বে দেশের যেকোনো একটা দিকের উন্নয়ন হলে এর কৃতিত্ব পুরুষদের বলে বলা হতো। সেখানে আজ তাদের পাশে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছেন নারীরাও। দেশের শাসন, আইন, বিচার বিভাগের প্রতিটি স্তরেই অবস্থান করছেন নারীরা। বাংলাদেশকে ১৫ বছর যাবত শাসন করছেন একজন নারী। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সকল ক্ষেত্রে নারীরা সমান দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। নারীদের এই এগিয়ে যাওয়া নিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন নারী শিক্ষার্থীর ভাবনা নিচে তুলে ধরা হলো:
উন্নয়নের পথে নারীদের বিচরণ
“পৃথিবীতে যা কিছু মহান সৃষ্টি চিরকল্যানকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর।” বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম এই কথা বলেছেন নারীদের অবদানের কথা মনে করেই। নারীদের ছাড়া উন্নয়নের কথা চিন্তাই করা যায় না। পৃথিবীর আদি থেকে এই পর্যন্ত সভ্যতার যত অগ্রগতি, তার পেছনে পুরুষদের যেমন অবদান আছে, নারীদেরও সমানভাবে অবদান আছে। উন্নয়নের পথে নারীদের এই বিচরণ সময়ের সাথে সাথে গতি পাচ্ছে। নারীরা এক দিকে যেমন সংসার সামলাচ্ছেন, তেমনি বাইরের বিভিন্ন দিকও সামলাচ্ছেন। মহাকাশে যাওয়া থেকে শুরু করে এভারেস্ট সবখানেই নারীদের বিচরণ এখন চোখে পড়ার মতো। চিকিৎসা, গবেষণা, শিক্ষকতা সবক্ষেত্রে নারীরা অকল্পনীয়ভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন। আরও দিন যত যাবে, তারা এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে।
-সাদিয়া পারভীন কণা, শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।
নারীদের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো বিপ্লবই স্বার্থক হতে পারে না
চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ২০৪১ সালে উন্নত দেশে রূপান্তরের যে লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে তা বাস্তবায়নে তথ্য ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নারীরাও এগিয়ে চলেছে। দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী, তাই তাদের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো বিপ্লবই স্বার্থক হতে পারে না। তারা পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সকল ক্ষেত্রে উন্নয়নের নতুন ধারার সূচনা করেছে। দেশ পরিচালনাসহ সকল স্তরের নারীর পথ চলা এখন সাবলীল। শহুরে কর্মজীবী নারীদের পাশাপাশি গ্রামীণ নারীরাও নানাভাবে সংসারের আর্থিক অবস্থা পুনর্গঠনে সাহায্য করছেন। শিক্ষা, শিল্প, কৃষি, প্রবাস, আইসিটি, ব্যবসা-বাণিজ্য মোটকথা অর্থনীতির প্রতিটি পর্যায়ে নারীদের অবদানের কথা অনস্বীকার্য। নারীর এই অদম্যশক্তি ও সাহসিকাতার প্রয়াসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্টের স্ত্রী এলিয়ান রুজভেল্ট যিনি ছিলেন দীর্ঘমেয়াদি ফার্স্ট লেডি তিনি বলেছেন, ‘নারী হচ্ছে টি-ব্যাগের মতো। গরম পানিতে দেয়ার আগে আপনি বুঝতে পারবেন না সে কতটা শক্তিশালী।’
-ইশিতা, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।
বর্তমানে পুরুষের চেয়ে নারীরা বেশ এগিয়ে
শিক্ষার প্রসার, সচেতনতা আর নারী আন্দলোনের প্রগতিমুখী অভিযাত্রা নারীকে অগ্রগতির পথে নিয়ে এসেছে এবং উন্নয়নের সকর ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে বিচরণ করছে। চার দেয়ালের মধ্যে অবরুদ্ধ জীবনযাপনের গ্লানিকে পেছনে ফেলে নারী আজ বহির্বিশ্বে লড়াকু সৈনিক হিসেবে অবির্ভূত হয়েছে। ঘর সংসার থেকে শুরু করে রাষ্ট্র পরিচালনা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক উন্নয়ন, শিক্ষা, গবেষণা, কৃষি, খেলাধুলাসহ সকল কাজে পুরুষের পাশাপাশি নারীরা অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। বর্তমানে পড়াশোনায় তুলনামূলকভাবে পুরুষের চেয়ে নারীরা বেশ এগিয়ে। বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি উচ্চ পদে নারীরা দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, পার্লামেন্টের স্পিকার, মন্ত্রীসহ অনেকেই আছেন যারা বিশ্ব দরবারে আজ দীপ্তি ছড়াচ্ছেন। বাংলাদেশকে স্বল্প আয়ের দেশ থেকে মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার পেছনে নারীর ভূমিকাই অগ্রগণ্য। বিগত এক দশকে বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে বৈশ্বিক রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
-নুরে জাহান শশী, শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available